somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটি চায় কি?

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরিবেশবাদী আর পরিবেশবিদ বলে দুইটা শব্দ আছে, পরিবেশবাদীদের কাজ হলো সবার আগে পরিবেশ তারপর উন্নয়ন আর পরিবেশবিদদের কাজ হলো পরিবেশকে বাঁচিয়ে উন্নয়ন বা যাকে আমরা টেকসই উন্নয়ন বলি। তো আমি ঠিক জানি না 'তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটি' পরিবেশবাদী না পরিবেশবিদদের সংগঠন!!! (এটা আমার ব্যর্থতা আমি মেনে নিচ্ছি)

এবার টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কিছু বলা যাক, টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে সেই উন্নয়ন যা আমাদের সামর্থের মধ্যে থেকে পরিবেশের যতটা সমম্ভব কম ক্ষতি করে এবং ভবিষত প্রজন্মের সার্থ রক্ষা করে উন্নয়ন। এখনে অবশ্যই আমাদের সামর্থ্য কতটুকু আছে সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে এবং ভবিষত প্রজন্মের সার্থ রক্ষা করতে হবে। আমাদের মত ৩য় বিশ্বের দেশে পরিবেশের ব্যাপারটা একটু কম করে হলেও আলোচনায় আসতে পারে, তবে সেটা কোনভাবেই প্রধান আলোচ্য বিষয় হতে পারে না, আবার পরিবেশের যাচ্ছেতাই ক্ষতি করেও উন্নয়ন ঠিক না।

এবার আসি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রসঙ্গে, পরিবেশ বিজ্ঞানের একজন ছাত্র হিসাবে আমি অবশ্যই সুন্দরবন এলাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র সমর্থন করতে পারি না। যতই বলা হোক না কেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সুপার ক্রিটিকাল টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে বা রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবন থেকে অনেক দুরে বা প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সুন্দরবনের নিকটতম সীমানা থেকে ১৪ কিলোমিটার এবং নিকটতম ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট থেকে ৬৯.৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। "এনভায়রনমেন্টাল কনজারভেশন রুলস (ECR) ১৯৯৭" এর মোতাবেক কোনো স্থাপনা সুন্দরবনের সীমানার ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে নির্মাণ করা যাবে না। এই ১০ কিলোমিটার জায়গাকে “ইকোলজিকেলি ক্রিটিক্যাল এরিয়া” হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেহেতু প্রস্তাবিত প্ল্যান্ট এর দূরত্ব সুন্দরবনের সীমানা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, সেহেতু এই প্রকল্প “ECR 1997” এর সাথে সম্পূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তারপরও আমি সুন্দরবন এলাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র সমর্থন করি না।

বাংলদেশে কি আর কোনো জায়গা ছিল না???
কিন্তু এইখানেই আমার তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির উপর আমার ক্ষোভ, ওনারা তো কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রেরওই বিপক্ষে!!!
তাহলে আমাদের মত ৩য় বিশ্বের দেশে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সবচেয়ে উপযুক্ত সেটা শুধু অর্থনৈতিক কারণেই অথচ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ স্যার একজন অর্থনীতিরওই শিক্ষক!!!
জানি না কোথায় যেন গোলমেলে লাগছে!!!
সেজন্যইতো বলতে হয়, 'আবেগ নয়, বৈজ্ঞানিক তথ্য ও প্রযুক্তি ভিত্তিক বিরোধিতা প্রয়োজন'

কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে অনেক কথা বললাম, এবার আসি অন্য কোনো উপায়ের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে, আমাদের দেশে এখন বিদ্যুৎ পরিস্থিতি খুবই খারাপ সেটা না বললেও চলে। অনতি বিলম্বে এই সমস্যা কাটানোর জন্য পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপযোগিতা অপরিসীম আবার বিপদও কম না সেটা সবারই জানা। তাই বলে পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবি করাটা বিস্ময় করওই বটে, আমরা বড়জোর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা নিয়ে সরকারকে চাপ প্রয়োগ করতে পারি, কিন্তু সেটা না করে সরাসরি বন্ধের দাবি!!
মহেশখালীতে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের দাবী

মাতারবাড়ীতে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

ফুলবাড়ীতে তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির অবরোধ কর্মসূচী পালিত


আবারও বলি, 'আবেগ নয়, বৈজ্ঞানিক তথ্য ও প্রযুক্তি ভিত্তিক বিরোধিতা প্রয়োজন'

অনেকেই নবায়নযোগ্য শক্তি নিয়ে কথা বলেন, তবে তা যথেষ্ট আশার সঞ্চার করে না উল্টো তাদের অজ্ঞানতাটাই বেশি প্রকাশ পায়। কেউ কেউ বলেন সৌর শক্তি দিয়েই চাহিদা মেটাবেন, কেউ বলেন জল বিদ্যুৎকেন্দ্র করলেইতো হয়, বায়ু চালিত শক্তি কেন ব্যবহার করা হচ্ছে না! আরো অনেক কথাই শোনা যায়। কিন্তু কেউ কি ভালো করে ভেবে দেখেছেন সৌর শক্তি, জল বিদ্যুৎ বা বায়ু চালিত শক্তি কতটুকু বিদ্যুৎ উত্পাদন করা সম্ভব? আর সৌর শক্তি, জল বিদ্যুৎ বা বায়ু চালিত শক্তি কি আসলেই পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না???

সৌর শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উত্পাদন করে আসলেই কি জাতীয় চাহিদা পূরণ করা সম্ভব? আর যদি ইন্ত্রিগ্রেটেড টেকনোলজি'র কথা বলেন তবে বলতে হয় কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সুপার ক্রিটিকাল টেকনোলজি ব্যবহার করা হলেও তো কোনো সমস্যা দেখি না।

জল বিদ্যুৎ এ কি ধরনের সমস্যা হয় তা বাঙালিকে আর নতুন করে শিখানোর কিছু নাই, টিপাইমুখী বাধের বিপক্ষে বলার সময় আমাদের যথেষ্ট জ্ঞান আরোহন হয়েছে তাই নতুন করে কিছু বললাম না।

বায়ু চালিত শক্তি কতটুকু বিদ্যুৎ উত্পাদন করা সম্ভব, সে প্রসঙ্গে নাই বা বললাম না। তবে এদেরও ক্ষতিকর দিক আছে, এই যেমন যেসব এলাকায় বাতাস বেশি সেখানেই সাধারণত বায়ু চালিত শক্তি কেন্দ্র করা হয়, কিন্তু ওই সব এলাকাতো পাখিদের বসবাস বা উড়াউড়ি করার জায়গা! তখন দেখা যাবে পাখি রক্ষা জাতীয় কমিটি আন্দোলন করছে!!!
সেজন্যই বলি, 'আবেগ নয়, বৈজ্ঞানিক তথ্য ও প্রযুক্তি ভিত্তিক বিরোধিতা প্রয়োজন'

তার মানে এই নয় আমরা বিদ্যুৎহীন জীবন যাপন করব, তার মানে এই নয় আমরা আমাদের পরিবেশের বারোটা বাজিয়ে দিব।
দুঃখের বিষয় টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কেউ কথা বলে না।

তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটি যদি টেকসই উন্নয়ন নিয়ে একটু কথা বলতেন তাহলে আপনদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হতো। কখনো কি বলেছেন??? নাকি আমিই দেখি নাই!!!
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×