ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
ছোট একটা গল্প দিয়ে শুরু করবো।
এক গরীব কৃষক একদিন জমিতে চাষ করতে গিয়ে শক্ত একটা ধাতব টুকরা পেলেন। কৌতুহল হয়ে হাতে নিয়ে দেখলেন বেশ ভারী মনে হয়। ভাবলেন একটু ধুয়ে দেখি-কী জিনিস। পাশেই এক পুকুর ছিল। পুকুরের পানিতে একটু ধুতে গিয়েই দেখলেন উজ্জল-চকচকে সোনালী রং। একটু পরই তিনি নিশ্চিত হলেন এটা একটা সোনার টুকরা। কৃষকের খুশি আর ধরেনা। ভাবলেন বাড়ীতে গিয়ে বৌয়ের কাছে কীভাবে উপস্থাপন করা যায়।
বৌকে আরেকটু বেশী চমকে দিতে কৃষক সোনার টুকরাটি খুব জোরে জোরে ঘষা দিতে শুরু করলেন। যেন এটা সবচেয়ে বেশি চকচকে আর সুন্দর হওয়া চাই। মাটির নিচে পড়ে থাকা একটা সোনা তার জন্য যথষ্টে তা যাই হোকনা কেন তা তিনি বেমালুম ভুলে গেলেন।
হঠাৎ..............................
হাত ফসকে সোনার টুকরাটি পানিতে পড়ে যায়। বিষন্ন-বিমর্ষ কৃষক অনেক্ষণ পুকুর পাড়ে বসে থাকলেন মন খারাপ করে। আর একটাই কথা ভাবতে লাগলেন। "কী দরকার ছিল অতটা চকচকে করার"।
পাওয়ার চেয়ে না পাওয়া ভালো ছিল। শুধু শুধু মনটা খারাপ আর কষ্ট।
সেদিন আর কাজ না করে বিমর্ষ কৃষক বাড়ী ফিরে আসলো। কৃষকের চেহারা দেখেই বৌ ধরে ফেলেছে-তার স্বামীর কিছু একটা হয়েছে। মাযাভরা কন্ঠে জিজ্ঞাসা করতেই কৃষক সব ঘটনা খুলে বললো।
আবার বৌয়ের একই উক্তি "না শুনলেই ভালো ছিল"।
আজ এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের দিনে আমার ছিলাম সেই কৃষক। সোনার টুকরা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট। ২ টা ৩০ মিনিটে ফলাফলের ঘোষনা দিয়েই সাত খুন মাফ। ২ টা ১৫ থেকেই আমার মত অনেকে ঢুকতে পারেনি সদ্য প্রস্ফুটিত ডিজিটাল বাংলাদেশের শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে। ঘন্টাখানেক চেষ্টার পরেও যখন মাত্র একটা ফল নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়, তখন আমার অবস্থা কৃষকের মতই হয়েছিল।
আজ হয়তো লিখতে বসেছি কিন্তু এটা নতুন নয়। প্রতিবছর রেজাল্টের দিন শিক্ষা বোর্ডের সাইট গন্ডারের চামড়া পড়ে শুয়ে থাকে। গুতা দেওয়ার দিনকয়েক পর টের পায়। আমরা যারা ডায়াল-আপ মডেম এর ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করি তাদের কাছে পরীক্ষার সাথে সাথে ফল পাওয়া আকাশ কুসুম। কয়েকদিন ব্লগে চেঁচামেচি করি। তারপর আবার ঠান্ডা। একবছর পর আবার ভোগান্তি।
অনলাইনে বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা আর মোবাইলে টাকা পাঠানোর পদ্ধতি জুড়ে দিলেই "ডিজিটাল বাংলাদেশ" হওয়া যায়না। আমাদের মত ভুক্তভোগীরা বুঝলেও বুঝেনা বেচারা শিক্ষা বোর্ড। একদিনে এত গুতা খেতে খেতে হয়তো সেও বলে "ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি"।
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কর কাজ নাহি লাজ
রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।
হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?
নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন
তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল
সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?
১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।
আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?
অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন