আমরা মানুষ ।অন্য সব প্রানি থেকে আমরা আলাদা ।মস্তিষ্কে চিন্তা করার মত একটা অংশ সৃষ্টির মাধ্যমেই আমাদের বুদ্ধিমত্তা বানিয়েছে ।চিন্তা শক্তি যে দিন থেকে আমাদেরকে ধারন করেছে সে দিন থেকেই আমরা প্রতিটা বিষয় নিয়ে ভাবতে শিখেছি ।আমাদের সামনে অবিরত প্রশ্ন উদয় হয়েছে কি, কেন, কিভাবে ।আমরা পাগলের মত সে সব প্রশ্নের উত্তর জানতে চেষ্টা করেছি, কেউ কেউ সারাটা জীবন ব্যয় করেছি ।কোন কারন রহস্য সৃষ্টি করলে আমরা সেটাকে বিশ্বাসে পরিনত করেছি ।রহস্য এমনি একটা জিনিস যেটার সঠিক উত্তর আমরা কেউ জানিনা ।যার কারনে ঐ বিষয়ের প্রতি বিভিন্ন জন বিভিন্ন মতামত দিয়ে থাকেন ।রহস্যগুলোকে এমন ভাবে উপস্থাপন করা হয় যাতে সকলে বিশ্বাস করি ।আর আমরা করিও বটে, কারন এছাড়া আমাদের আর উপায় থাকে না ।বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের চিন্তা শক্তিকে আগে জব্দ করা হয় ।আমাদের জন্মের আগে থেকেই ঐ সব বিষয়ে আমাদের আত্মিয়, প্রতিবেশী, সমাজ হিপোক্রেট হয়ে আসছে । কিছু সুবিধাবাদি, সমাজ ব্যবসায়ী এ ধরনের রহস্যের মুল হোতা বা মন্ডল, মুরব্বি, সমাজের মাথা ।যদিও তারা রহস্যের মুলটা জেনে থাকে তারপরও সে মিথ্যাটাই প্রচার করে ।তানাহলে তার নাম জশ যাবে, সাথে সাথে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে ।
আসলে বিশ্বাস জিনিসটাই বা কি?
আজ জন্মের পচিশ ছাব্বিশটা বছর পার হয়ে গেল অথচ বিশ্বাসের সাথে লড়াই করেই যাচ্ছি ।কোন ফল পাচ্ছি না ।বিশ্বাস জিনিসটা রহস্য থেকে সৃষ্টি যার অপর নাম মিথ্যা ।যেটা কেউ দেখেনি কিন্তু চিন্তা শক্তি তাকে ঐ বিষয়ে ভাবিয়ে তোলে কিন্তু সঠিক কোন উত্তর পাওয়া আদৌ সম্ভব হয়নি ।তাহলে ঐ বিষয়ে যদি আমি আপনি সকলেই চিন্তা করি সকলের মতামত কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন হবে ।আমরা কেউই কারও মতামতকে হারাতে নারাজ হবো ।কারণ ঐ জিনিসটাতো কেউই দেখিনি বা কোন ঘটনাও আমাদেরকে প্রভাবিত করে না ।যার কারনে সকলের মতামতই গ্রহনযোগ্য হয়ে পড়ে ।যার মতামত বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় সে তার অনুসারি(ভক্ত) হয় ।
বিশ্বাস বুদ্ধিমত্তা প্রানি মানুষের জন্য এক প্রকার ভাইরাস ।বিশ্বাসের একটা নিয়ম আছে সেটা হলো বিশ্বাস করার আগেই আপনাকে ভাবতে হবে আপনি ঐ বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করবেন কি না । বিশ্বাসের সুত্র অনুযায়ী যদি আপনি কোন বিষয়ে একবার বিশ্বাষ স্থাপন করেন তাহলে আপনি ঐ বিশ্বাস থেকে খুব সহজে বের হতে পারবেন না, সারাটা জিবন আপনাকে ঐ বিষয়ে তাড়িত করবে ।আমাদের সমাজে বিশ্বাসের অপপ্রয়োগ আছে ।আমরা বিশ্বাস কিভাবে করতে হয় সেটা শিখেনি ।বিশ্বাস যদি হয় কোন লক্ষ্য পুরনের, কিছু আবিষ্কারের আশায় তাহলে সেটা ভাল ।আর যদি হয় ভয়ংকর, ভয় ভিতি বিশ্বাস সৃষ্টির তাহলে অনেক ক্ষতিই । আধুনিক সমাজ ভয়-ভীতিকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে ।কেউ কেউ এটাকে চিরন্তন ধরে রাখার সকল কার্যক্রম তৈরি করে রেখেছে ।
যদি আপনি বিশ্বাস করেন ভুত, প্রেত, আত্মা আপনাকে ভর করেছে বা ধরেছে, তাহলে আপনাকে একদিন না একদিন ধরবেই ।আর আপনার মনে সব সময় সংশয় থাকবে এ বুঝি ধরল ।জ্ঞানী গুনীরা এজন্য বলে ভুত প্রেত এর গল্প করতে নেই ।কারণ যারা তাদের গল্প করে তাদেরকেই আগে ধরে(আপনি যদি বুদ্ধিমান হোন তাললে লাইনটা বুঝতে পেরেছেন) ।তবে একটা মজার বিষয় শুনায় ।
হিন্দুদেরকে ভুত, প্রেত, আত্মায় ধরে ।আর মুসলমানদেরকে জ্বিনে ।খ্রিস্টানদের পিশাচ ড্রাকুলাতে ।কিন্তু জ্বিন হিন্দুদের ধরে না, মুসলমানদেরকে আত্মায় কিংবা পিশাচে ধরে না ।ঝোপ বোঝে কোপ বুঝলেন ।সব থেকে বেশি অলৌকিক ঘটনা ঘটে ভারতে ।কারন সেখানে বিশ্বাসের ছড়াছড়ি ।আমার এক বন্ধু স্বপ্নে মৃত্যু ব্যাক্তির সাক্ষাত পেয়ে খুব তার নামে সদকা খাওয়া খাওয়ি ।আমার দেখা পরিচিত অনেক জিবীত মানুষকে স্বপ্নে দেখেছি বিভিন্ন অবস্থায় ।কিন্তু অপরিচিত কারো সাক্ষাৎ পাইনি ।
তাহলে এটাতো একটা প্রশ্ন কেন স্বপ্নে অপরিচিত ব্যক্তিটি আসল না ।তার আগে বলি কেন আপনি স্বপ্নে এরকম দেখেন ।একজন শারিরিক অসুস্থ রুগি কখনও ভাল স্বপ্ন দেখে না ।আমরা স্বপ্নে যা দেখি তা হচ্ছে আমাদের অতিতে বা পুর্বে দেখা দৃশ্য, অতিতের কল্পনা, অতিতের স্বপ্নের স্বপ্ন, এবং বর্তমানে বসে ভবিষ্যতকে নিয়ে যে সকল চিন্তা ভাবনা করেছি সে সকল দৃশ্যই স্বপ্নে কেবল দেখতে পাই । আমদের সমাজে ছোটকাল থেকেই শুনে আসি যে মৃত্যু ব্যক্তিরা স্বপ্নে বিভিন্ন রকম ভঙ্গির মাধ্যমে সমস্যা ও ভাল থাকার কথা ব্যক্ত করে ।এগুলো এতই শুনি যে আমাদের অজান্তেই ব্রেনের সাবকনসিয়াস (অবচেতন মন) মেমরিতে সংরক্ষন হয়ে যায় ।কোন দিন হইত কেউ মারা গেল আর আমি তার বিষয়ে সারদিন শোক করলাম ।কিছু দিন পর ঘুমের মধ্যে আপনাকে পুর্বের ঘটনার সাথে মিলেয়ে একটা স্বপ্ন দেখাল ।সাবকনসিয়াস মাইন্ড আপনাকে ঐ লোকটির বিষয়ে বিভিন্ন এফেক্ট দেখাবে যা আপনি পুর্বের বিশ্বাসের কারনে স্বপ্নটি বিশ্বাস করবেন ।আমার একটা ব্যাক্তিগত ঘটনা শেয়ার করি ।আমি মাঝে মধ্যে আকাশে উড়ার স্বপ্ন দেখতে পাই ।এই স্বপ্নটা আমাকে এতই মজার লাগে বলার মত না ।এইতো কিছুদিন আগে অষ্ট্রেলিয়ার সিডনির উপর দিয়ে উড়ছিলাম ।কি যে মজা স্বপ্নে উড়ার, না লাগে টাকা পয়সা, না লাগে তৈল খরচ, না আছে আহত নিহত হবার ভয় ।সমস্যা আরেক জায়গায় ।আকাশে উড়ার স্বপ্নতো আর এমনি এমনি হয় না ।বিগত এক-দেড় সপ্তাহ যাবৎ ঠান্ডা লাগা জ্বরে ভুগছিলাম ।জ্বর টায়ফয়েটে ধারন করেছিল ।ডাক্তারমশাই বাইন্দা আজেথ্রামাইশিন 500 খাওয়াইলেন তিন দিন যাবৎ ।শরির হইল তুলার মত, শরিরে ওজন ও শক্তি অনেক কমে গেল ।এই অবস্থায় দুদিন আগে ঘুমাইছিলাম তখনই এই স্বপ্ন দেখছিলাম আমি আকাশে উড়তেছি ।অতিরিক্ত পড়াশুনা কিংবা কাজের চাপ থেকে মুক্তি পাবার পর এরকম স্বপ্ন মাঝে মধ্যেই চলে আসে ।আর শরিরের কোন অংশ এ্যাবনরমাল কাজ করলে ভয়ংকর সব স্বপ্ন ।