somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের মস্তিষ্ক সম্পর্কে কিছু কথা সহজ ও সরল

০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চর্বির তৈরি তুলতুলে এবং স্পঞ্জ ধরণের এক বস্তু এই মস্তিষ্ক। বিশ্বাস করা কষ্ট যে, আঙ্গুলের সামান্য ছোঁয়ায়ও এর আকার পরিবর্তিত হতে পারে, এতোটাই স্পর্শকাতর তিনি! তাই নিরাপদ থাকার জন্য এরা খুলির ভেতরে এক ধরনের ঘন তরলে (সেরেব্রো স্পাইনাল ফ্লুয়িড) ভেসে থাকে, যা এদেরকে খুলির স্পর্শ থেকে দূরে রাখে। প্রাপ্তবয়স্ক মস্তিষ্কের গড় ওজন প্রায় দেড় কেজি। মহিলা এবং পুরুষের মস্তিষ্কের আয়তন যথাক্রমে ১১৩০ এবং ১২৬০ ঘন সেন্টিমিটারের আশেপাশে। তবে ব্যক্তিবিশেষে প্রচুর পার্থক্য দেখা যায়। আয়তনের পার্থক্য মহিলা এবং পুরুষের আইকিউ কিংবা বোধশক্তিতে কোন প্রভাব ফেলে না।


১) মস্তিষ্কের প্রতিটি নিউরন একই গতিতে চলাচল করে না। এদের এক একটির স্পীড এক এক রকম। এদের কোনটি ০.৫ মিটার/ সেকেন্ড আ চলাচল করে। আবার কোনটি ১২০ মিটার/সেকেন্ড এ চলাচল করে।
২) মস্তিষ্ক নিজে কোন ব্যথা অনুভব করে না। আপনার হাত, পা বা শরীরের কোন অঙ্গে কেটে গেলে বা ব্যথা পেলে মস্তিষ্ক তা অনুভব করে না। মস্তিষ্ক অনেকগুলো টিস্যু, নার্ভ ও রক্ত দ্বারা বেষ্টিত। তাই বলে এই নয় যে, আপনি মাথায় ব্যথা পাবেন না। তবে মস্তিষ্ক কষ্ট অনুভব করতে পারে না।
৩). আমাদের ব্রেইন এর ৮০ ভাগই পানি। আপনি হয়ত টিভি তে দেখেছেন যে, ব্রেইন দেখতে অনেকটা জেলির মত গোলাপি রং এর। যাতে প্রচুর পরিমাণে পানি ও রক্তের তৈরি টিস্যু জালিকা রয়েছে। তাই যখনই আপনি নিরুধ-বোধ করবেন তখনি পানি খেয়ে নিবেন।


মস্তিষ্ক আর জিনের DNA – দুটোর ভাষা এক নয়। মস্তিষ্কের ভাষাকে বলে নিউরন। আমরা যা শিখি, তা লেখা হয় নিউরন নামক কোষে। এরা হলো সংযোগকারী উপাদান। প্রতিটি সংযোগ = এক বিট তথ্য।
কতটা নিউরন আছে আমাদের? হয়তো ১০০ বিলিয়ন। সংখ্যাটা আকাশগঙ্গার নক্ষত্রের সংখ্যার কাছাকাছি। আর নিউরন সংযোগের সংখ্যা প্রায় ১০০ ট্রিলিয়ন। এমনকি ঘুমের মধ্যেও মস্তিষ্ক দোলে, পিটপিট করে, মিটমিট করে। চালাতে থাকে মানুষের জটিল কাজগুলো; যেমন – স্বপ্ন দেখা, মনে রাখা, অনুমান করা। ভাবা যায় আমাদের চিন্তা, লক্ষ্য, কল্পনা – এগুলোর বাস্তব ও বস্তুগত অস্তিত্ব রয়েছে? জ্বী হ্যাঁ, শুনতে অদ্ভুত শোনালেও অবস্তুগত বিষয় হিসেবে পরিচিত এই ব্যাপারগুলোর বাস্তব ও বস্তুগত অস্তিত্ব রয়েছে।
জিজ্ঞেস করতে পারেন, “চিন্তা” জিনিসটা দেখতে তাহলে কেমন?
বেশ, উত্তর হবে – এটা শত শত তড়িৎ রাসায়নিক বিচ্ছুরণ দিয়ে তৈরি!
অনেক বছর ধরে একটা ধারণা প্রচলিত ছিল যে, মস্তিষ্কের কোষ নতুনভাবে উৎপাদিত হয় না। যে কয়টা নিউরন নিয়ে জন্মেছি, সে কয়টা নিউরন নিয়েই আজীবন চলতে হবে। কিন্তু এখন আমরা জানি যে, নিউরোজেনেসিস প্রক্রিয়ায় সারাজীবনই নিউরন উৎপন্ন হতে থাকে।


আমাদের শরীরের নার্ভে মস্তিষ্ক থেকে সম্পূর্ণ শরীরে রক্ত চলাচলের গতি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৭০ মাইল। এই কারনেই আমরা যেকোনো কাজের খুব তাড়াতাড়ি প্রতিক্রিয়া দিতে পারি। ভালো লাগা, খারাপ লাগা, কষ্ট পাওয়া, খুশি হওয়া ইত্যাদি সব অনুভব আমরা খুব জলদি ব্যক্ত করতে পারি।



. আমাদের ব্রেইন এর কার্যক্ষমতা প্রায় ১০ ওয়াট এর বৈদ্যুতিক বাতির মত। এর জন্যই বিভিন্ন কার্টুন এর ছবিতে দেখা যায় যখন সে চিন্তা করে তখন মাথার উপর একটি বাতি জ্বলে উঠে। একজন মানুষের মস্তিষ্ক তখনও একটি ছোট বাতির ন্যায় শক্তি জমা রাখে যখন সে ঘুমাচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১২
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×