রুহের রহস্য
রুহ কি?
=তারা আপনাকে রুহ সম্পর্কে জিগ্যেস করে।বলুন রুহ আমার প্রতিপালকের আদেশ।রুহ সম্পর্কে তোমাদেরকে কোনো জ্ঞান দেওয়া হয়নি,অল্প ব্যাতিত।(বনি ইসরাইল)
রুহসমূহ যখন একত্রিত হয়,তখন এক রুহের সাথে আরেক রুহের একটি নেসবত বা সম্পর্ক হয়ে যায়।আবার রুহ যখন পৃথক হয় তখন এই নেসবত শক্তি হারিয়ে ফেলে অথবা ছিন্ন হয়ে যায়।
সব রুহ সমান নয়। মর্যাদায় তারতম্য রয়েছে।
পৃথিবীতে তিন প্রকারের রুহ রয়েছে,মানবজাতির মধ্যে;যথা—
১।নবীদের রুহ।
২।সিদ্দিকিন বা ওলীদের রুহ।
৩।সাধারন মানুষদের রুহ।
এখন আমি তিন প্রকারের রুহ সম্পর্কে আমার নিজস্ব দর্শন বর্ণনা করব।আমার দর্শন যদি কুরআন হাদিসের সাথে সাংঘর্ষক না হয় তাহলে তা ঠিক হবে।
১।নবীদের রুহ:
নবীদের রুহ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ধন্য রুহ।এই রুহ মানবজাতীর মধ্যে চুড়ান্ত মর্যাদার অধিকারী।তবে নবীদের রুহও মানবিক গুনাবলীর উর্ধ্বে নয়।কারন তারাও মানুষ।
এই রুহ অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারি হয়ে থাকে।কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ব্যাতিত তারা কোনো অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারেনা।
এই রুহ শক্তিশালী হয়ে থাকে।কোনো দুনিয়াবি বিপর্যয় নবীদের রুহকে টলাতে পারেনা।এই রুহতে মাখলুকের কোনো ভয় থাকেনা,আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কিছুকে তারা ভয় করেনা।এই রুহ যেখানে থাকে সেখানে জান্নাতের বাগান হয়ে যায়।
সিদ্দিকিন বা ওলীদের রুহ :
নবীদের পরের স্তরে অবস্থান করছে সিদ্দিকিন বা ওলীদের রুহ।এই রুহও আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত।নবীদের রুহ এবং সিদ্দিকিনদের রুহের মধ্যে পার্থক্য হলো-
নবীদের রুহানী মর্যাদা সকলেই হাসিল করতে পারেনা,কিন্তু সিদ্দিকিনদের রুহের মতো রুহ সকলেই বানাতে পারে,এই পথ সকলের জন্যই খোলা রয়েছে।যদিও প্রচুর পরিমানে সাধনা করার প্রয়োজন হতে পারে।
সিদ্দিকিন দের রুহ কুদছি হয়ে থাকে।আমার মনে হয় সিদ্দিকিসরা অহরহ আল্লাহর নিকট থেকে অথবা ফেরেশতাদের নিকট থেকে ইলহাম প্রাপ্ত হতে থাকে,এবং ইলহাম অনুযায়ী তারা জীবন পরিচালনা করেন, যেকারনে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং তাদের ভুল ভ্রান্তি কম হয়ে থাকে।তারা আন্তরিক হয়ে থাকেন।এবং অদৃশ্য ইশারায় কাজকর্ম করেন।তারা যখন কথা বলেন,মনে হবে যেন কথা তারা নয় বরং তাদের মুখ দিয়ে আল্লাহ তায়ালাই কথা বলছেন।এটা তাদের কুদছি মকামের বৈশিষ্ট্য।
৩।সাধারন মানুষের রুহ :
সাধারন মানুষের রুহ হাওয়াই হয়ে থাকে। তারা নফসের ইশারা ইঙ্গিতে পরিচালিত হয়৷ একারনেই তারা পবিত্র জগতের দিকে রাস্তা পায়না৷ সাধারন মানুষের মধ্যে যারা বিশ্বাসি বা ইমানদার তারা সাধারনত অন্যের অনুকরন অনুসরন নির্ভর হয়ে থাকে।এজন্য সাধারন মানুষকে ধোঁকা দেওয়া খুবই সহজ।কারন শুনা কখোনো দেখার সমতূল্য হয়না।সাধারন মানুষের ইমান হলো অন্যের নিকট থেকে শুনার দ্বারা হয়ে থাকে,আর সিদ্দিকিনরা,অন্তরের চোখে ইমানকে দেখতে পান।এজন্য সিদ্দিকিনদের ইমান অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে।
সাধারন মানুষ কি সিদ্দিকিনদের মর্যাদা অর্জন করতে পারে?
=হ্যা!অর্জন করতে পারে।কিন্তু অনেক কঠিন সাধনা করতে হয়।
তারা কিছুদিনের জন্য লোকালয় ত্যাগ করে, নির্জন গহীন জঙ্গলে, পাহাড়ে,বিয়াবানে চলে যান।যতদিন তাদের আত্মা পূ্র্ণতা না পায় ততদিন তারা নির্জনেই থাকেন।পরিপূর্ণ কামেল হওয়ার পরে তাদের কেউ কেউ লোকালয়ে ফিরে আসেন,আবার কেউ কেউ জঙ্গলেই থেকে যান।
(আগামি পর্বে আলোচনা করবো জান্নাত জাহান্নামের স্তর এবং রুহানী বিকাশ ইনশাআল্লাহ)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




