মনে করুন আপনার চোখের সামনে আপনারই দেবতা তুল্য পিতাকে কেউ লাত্থি মারছে, বুট দিয়ে নির্মম ভাবে আঘাত করছে,চড় মারছে,রাইফেলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করছে। এবং অবশেষে তার মৃতু্য নিশ্চিত হলে আপনারই চোখের সামনে বাবার লাশ নদীতে ভাসিয়ে ফেলা হয়েছে। কেমন লাগবে তখন?কি রকম অনুভূতি হবে?
হ্যা এসবের প্রতিটা ব্যাপারই ঘটেছে ৮-৯ বছরের ছোট্ট ছেলে ইকবালের চোখের সামনে। তার চোখের সামনে তার বাবাকে ধরে নিয়ে যায় টংগী থানা পুলিশ। আর এভাবেই নির্যাতন করা হয় শিশু পুত্র ইকবালের সামনে।
তারপর ইকবালের বাবার লাশ টংগীর তুরাগ নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এভাবেই বর্ণনা করছিল ছোট্ট ছেলে ইকবাল।
কি ভয়াবহ ব্যাপার। এভাবে নিরীহ,নিরপরাধ ব্যক্তিকে কোন সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই বাসা থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করবে, এতো দেখি ৭১ এ পাকিস্তান আর্মিদের মত অবস্থা। তবে কি এসবের জন্যেই দেশ স্বাধীন হয়েছিল?
সাম্প্রতিক কালে পুলিশের হাতে আরও কয়েকটি হত্যাকান্ড আমাকে বেশ ভাবিয়ে তোলে।
১
রাজধানীর গুলশানে গত বুধবার মিজান নামে এক ব্যবসায়ীকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। পুলিশ তাকে একজন সন্ত্রাসী বলে দাবী করে, যদিও ঐ এলাকায় মিজানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ কেউই করে নি। মিজানকে এলাকায় ভদ্রলোক ও নিরীহ বলেই জানে এলাকাবাসী।পুলিশ এখন গাড়ী ছিনতাইয়ের ঘটনায় মিজানের নাম ঢুকাতে চাচ্ছে।
২
কিছুদিন আগে পেপারে দেখলাম বাবুল নামে এক সিএনজি চালককে পুলিশ আটক করে। তার কাছে একজন এস আই ১০০০০০ টাকা ঘুষ দাবী করে। কিন্তু সে ৭০০০০ টাকা দিতে পেরেছিল। এ অপরাধে তাকে বেধড়ক পিটানো হয় এবং পুলিশ হেফাজতে বাবুলের মৃত্য হয়। বাবুলই ছিল তার পরিবারের এক মাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি।
এভাবে একের পর এক হত্যকান্ড আসলে সবার মনেই আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। যে কেউ যাকে হত্যা করে নামের আগে কালা শব্দটি জুড়ে দিয়ে সন্ত্রাসী বানিয়ে দিবে। চিন্তা করে দেখুন কি ভয়ংকর ব্যাপারই না!!
আর বর্তমানে পুলিশের কর্মকান্ড দেখে মনে হয় তারা আসলে দেশের মানুষের জন্যে না কোন একটি বিশেষ গোষ্ঠীর পোষা কুকুরের মত কাজ করছে।
শেষে ইকবালের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চাই। ইকবাল বাবা তোমাকে কি বলে সান্ত্বনা দিব সেই ভাষা আমার নাই। তোমার বাবাকে যেই শুয়োরের বাচ্চাগুলা বুট দিয়ে লাথি মেরে হত্যা করেছে যদি তাদেরকে আমরা সেভাবেই লাথি মেরে হত্যা করতে পারি তাহলেই তোমার মাথায় একটু সান্ত্বনার হাত বুলাতে পারব।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১০ রাত ৮:৫০