somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধু মানে উজান স্রোতে সোনার তরী বাওয়া মন খারাপের অন্ধকারে একটু খুিশর হাওয়া, বন্ধু মানে হৃদয় জুড়ে ভালবাসার সুর বৃষ্টি ভেজা উদাস চোখে সোনালী রোদ্দুর॥

২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মানুষ সামাজিক জীব। বন্ধু ও বন্ধুত্ব সমাজ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। মানুষ বন্ধু ছাড়া থাকতে পারে না। সেই ছোট্ট বেলায় যাদের সাথে দাঁড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, কপালটোকা খেলেছি তাদের কথাই সবচেয়ে বেশী আবেগ নিয়ে মনে পড়ে। শৈশব-কৈশোরের স্কুলজীবন এবং যৌবনে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে আজ কর্মব্যস্ত জীবনে বন্ধুদের কথা যখন বসে বসে ভাবি তখন চোখের কোণে এক খন্ড মেঘ জমা হয়ে গড়িয়ে পড়তে চায়, কিন্তু তখনই মেঘ নামক আবেগের ফোঁটাগুলো চুষে নেয় টেবিলের পাশে রাখা টিসু বক্সের এক টুকরো টিসু। যেহেতু আমিও মানুষ তাই হয়তো এমন হয়। আর তাই বন্ধু দিবসে বন্ধুদের প্রতি জানাই প্রাণখোলা ভালবাসা ও শ্রদ্ধা।
প্রতি বছর আগস্টের প্রথম রোববার দুনিয়াজুড়ে পালিত হয় দিবসটি। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব বন্ধু দিবস। ইতিহাস থেকে যতটুকু জানা যায় বন্ধু দিবসের শুরু হয়েছিল ১৯৩৫ সালে। আমেরিকান সরকারের কারণে একজন ব্যক্তি ১৯৩৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। আর এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ঠিক তার পরদিন সেই ব্যক্তির বন্ধুটিও আত্মহত্যা করে। ১৯৩৫ সালের সেই দিনটি ছিল আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার। প্রিয় বন্ধুর জন্য আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়ার এই ঘটনাটি সেই সময় পুরোবিশ্বে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে। এরপর আমেরিকান কংগ্রেস বন্ধুত্বের এই নজিরবিহীন আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে আগস্টের প্রথম রবিবারকে ‘বন্ধু দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেন। তাৎক্ষণিক ভাবেই বেশকটি দেশ এই ‘বন্ধু দিবস’কে স্বীকৃতি দেন। এভাবেই শুরু হয় বন্ধু দিবসের প্রচলন। এরপর ধীরে ধীরে পুরো বিশ্বেই এই দিবসটি পালিত হতে থাকে বেশ উৎসাহের সাথেই। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের ছোট্ট একটি পদক্ষেপ বন্ধুত্বের সম্পর্কটিকে আরও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের বন্ধু দিবসে জাতিসংঘ জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র উইনি দ্যা পুহকে বন্ধুত্বের বিশ্বদূত হিসেবে নির্বাচন করে।

বন্ধুত্ব হচ্ছে দুই অথবা তার অধিক কিছু মানুষের মধ্যে এমন একটি সম্পর্ক, যাদের একে অপরের প্রতি পারস্পরিক স্নেহ, ভালবাসা থাকে। বন্ধুত্বকে ব্যক্তিগত সম্পর্কের খুব কাছের একটি অংশ ধরা হয়। বন্ধু হচ্ছে যাদের আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি, এবং যারা আমাদের সামাজিকভাবে এবং আবেগের জন্য পছন্দের। সাধারণত বন্ধু হয় এমন যারা আমাদের নিজেদের মত হয়ে থাকে।
ইংরেজিতে বন্ধুত্ব মানে Friendship. তার মানে হলো- It is a relationship of mutual affection between two or more people. Friendship is a stronger form of interpersonal bond than an association. Friendship has been studied in academic fields such as sociology, social psychology, anthropology, and philosophy. Various academic theories of friendship have been proposed, including social exchange theory, equity theory, relational dialectics, and attachment styles.
প্রাচীন গ্রীসে বন্ধুত্ব ছিল নৈতিক দর্শনের একটি বিষয় যা নিয়ে প্লুটো এবং অ্যারিস্টট্ল ব্যাপক আলোচনা করেছেন। এই আধুনিক যুগে অবশ্য কম আলোচনা হয়েছে। বন্ধুত্বের মধ্যে সরলতা একটি প্রধানতম দিক হিসেবে মনে করা হয়; অ্যারিস্টট্ল লিখেছিলেন, “একজন ব্যক্তি তার বন্ধুর সাথে একইভাবে সম্পর্কিত, যেভাবে সে নিজে নিজের সাথে সম্পর্কিত। যেহেতু একজন বন্ধু একজন ব্যক্তি এবং তার নিজের একটা চিন্তাধারা আছে। সুতরাং বন্ধু হচ্ছে ওই একই চিন্তাধারায় বিশ্বাসী ব্যক্তি।” প্রাচীন গ্রিকে “বন্ধু” এবং” “প্রেমিক”- একই শব্দ ব্যবহার করা হয়।

মধ্য এশিয়াতে, নারী-পুরুষ বন্ধুত্ব কিছুটা সংরক্ষিত এবং তারা প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সময় তারা ডাকনাম এবং তাদের প্রথম নামের সঙ্কুচিত ফর্ম ব্যবহার করে থাকে। তারা মনে করে বন্ধু হচ্ছে যারা একে অপরকে সম্মান, নির্বিশেষে বিশ্বাস এবং যারা ব্যক্তিগত উৎসর্গমূলক কাজে সহায়তা করে।
অনেক আরব লোক বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে এবং এই সম্পর্কে জড়িত ব্যক্তিকে গভীরভাবে যেমন সামাজিক প্রভাব, চরিত্রের প্রকৃতি হিসাবে ব্যক্তিগত গুণাগুণ বিবেচনায় বাছাই করে।
জার্মানরা সাধারণত অপেক্ষাকৃত অল্প বন্ধু রাখে, যদিও সাধারণত বন্ধুত্ব মানুষের জীবনকালের বিভিন্ন বিকাশে যথেষ্ট পরিমাণ গুরুত্ব প্রদান করে। জার্মানরা অন্য মানুষের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরীতে অনেক সতর্ক থাকে। তাদের সহযোগীদের, সহকর্মীদের, প্রতিবেশী এবং অন্যদের মধ্যে দৃঢ়ভাবে বন্ধুত্ব হয়ে উঠতে মাস বা বছর সময়ও পার করে দেয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘বন্ধুত্ব’ শব্দটি প্রতিটি মানবজীবনেই একটু ভিন্নমাত্রা এনে দেয়। প্রাথমিক স্কুল থেকে তাদের শেখানো হয়ে কিভাবে আচরণ করতে হয় বন্ধুদের সাথে এবং বলা হয় কারা হতে পারে তার বন্ধু। একজন বন্ধু কেমন হওয়া উচিত এটা নির্ণয়ে শিক্ষা দেয়া হয়। আমেরিকানরা বন্ধুত্ব নামের এই উন্মুক্ত পদ্ধতিটি তৈরি করেছে যাতে অনেকে বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালের সময় “বেস্ট ফ্রেন্ডস” হিসেবে কাউকে বেছে নিতে পারে।

ইসলামী সংস্কৃতিতে বন্ধুত্ব বা সাহচর্য্য ‘আছহাব’ নামে পরিচিত। মানবজীবেনর অন্য বিষয়বস্তুর মতো এ বিষয়টির ব্যাপারেও ইসলাম দিকনির্দেশনা দিয়েছে এবং ভালো, সৎ ও দ্বীনদ্বার বন্ধু নির্বাচন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। কে হবে আপনার বন্ধু? একজন মুমিন-মুসলমান হিসেবে বন্ধু নির্বাচন করা এবং বন্ধু হওয়ার জন্য কী কী গুণের প্রয়োজন, এসব ব্যাপারে ইসলাম বেশ ভালো পরামর্শ দিয়েছে। বন্ধু গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করে পবিত্র কোরানে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিনরা যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কোনো কাফেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করে। যারা এমনটি করবে, আল্লাহ তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবেন না।’ (আলে ইমরান-২৮) আলোচ্য আয়াতটির মধ্যে যেমন বন্ধু নির্বাচনের নীতিমালা বর্ণিত হয়েছে, তেমনি ফুটে উঠেছে কাফেরকে বন্ধু হিসেবে নির্বাচন করার ভয়াবহ পরিণামের চিত্র। ভালো কিংবা মন্দ বন্ধু গ্রহণ করার পরিণাম বর্ণনা করতে গিয়ে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীতে যার সঙ্গে যার বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা রয়েছে, পরকালে তাদের সঙ্গেই তার হাসর-বিচার হবে।’ বিখ্যাত দার্শনিক ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেছেন, ‘সবাইকে বন্ধু নির্বাচন করা যাবে না; বরং তিনটি স্বভাব যার মাঝে বিদ্যমান, এমন লোককে বন্ধু নির্বাচন করা চাই। তিনটি গুণ হলো- ১. বন্ধুকে হতে হবে জ্ঞানী, বিচক্ষণ। ২. বন্ধুর চরিত্র হতে হবে সুন্দর ও মাধুর্যময়। ৩. বন্ধুকে হতে হবে নেককার, পুণ্যবান।’
মুমিনের সব কাজই হতে হবে ইবাদতের শামিল। কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করাও একজন মুমিনের নাজাতের উসিলা হতে পারে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশে কাউকে ভালোবাসল, একমাত্র তার জন্যই কাউকে ঘৃণা করল, তারই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাউকে দান করল এবং তা থেকে বিরত থাকল; তবে নিঃসন্দেহে সে নিজ ইমানকে পূর্ণতা দান করল।’ (আবু দাউদ) বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে জগদ্বিখ্যাত কবি আল্লামা শেখ সাদি (রহ.) বিখ্যাত উক্তি দিয়েছেন, ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।’ একজন ভালো বন্ধু যেমন মানুষের জীবনের গতি পাল্টে দিতে পারে, তেমনি একজন অসৎ বন্ধুর কারণে জীবন হয়ে যেতে পারে অন্ধকারাচ্ছন্ন। তাই বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসলাম প্রদর্শিত নির্দেশ অনুসরণ করতে হবে। এতে একদিকে যেমন নানাবিধ সমস্যা ও ভোগান্তি থেকে বেঁচে থাকা যাবে, অন্যদিকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর পথ অনুসরণ করে সাওয়াব পাওয়া যাবে।
হজরত আলী (রা.) এক কবিতায় বলেন, ‘সেই তোমার সত্যিকার বন্ধু যে তোমার সঙ্গে থাকে, তোমার কল্যাণের জন্য নিজের ক্ষতি করে। দৈব-দুর্বিপাকে পড়ে তোমার অবস্থা শোচনীয় হলে সে নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে তোমাকে সুখ দান করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বন্ধু অবশ্যই বানাও। কারণ বন্ধু দুনিয়াতেও উপকারে আসে এবং আখেরাতেও।’ হজরত ইমাম জাফর সাদেক (র.) বলেন, পাঁচ ব্যক্তির সঙ্গ (বন্ধুত্ব) অবলম্বন করো না। মিথ্যাবাদী, নির্বোধ, কৃপণ, কাপুরুষ ও ফাসেক ব্যক্তি। বন্ধুত্ব তৈরি মানুষের স্বভাবজাত প্রবণতা। তাই বন্ধুত্বের ব্যাপারে ইসলামে যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। বন্ধু তো বানাতে হবে তাই বলে তো যাকে তাকে বন্ধু বানানো যায় না। কারণ, জীবনে বন্ধুর প্রভাব পড়ে। একজন ভালো বন্ধু একজন খারাপ মানুষকে ভালো বানাতে সাহায্য করতে পারে পক্ষান্তরে খারাপ বন্ধু একজন ভালো মানুষকে নিয়ে যেতে পারে অধঃপতনের অতল গহ্বরে।

বন্ধুত্ব নিয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়ানো আছে অনেক কথা-কাহিনী। অসাধারণ বাগ্মিতার জন্য সুপরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষোড়শ প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের মতে, একজন ব্যক্তির জীবনের ভালো দিকটা গড়ে ওঠে তার বন্ধুত্ব দিয়ে। অনুভূতির যত রঙিন জানালা আছে তার মধ্যে বন্ধুত্বের জায়গাটি সবচেয়ে উজ্জ্বল ও স্নিগ্ধ। বন্ধুকে পাশে রেখে চলা যায় সীমাহীন পথ।
বন্ধু বয়স ও শ্রেণি মানে না। বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে পারে, মায়ের সঙ্গে, বাবার সঙ্গে, ভাইয়ের সঙ্গে, বোনের সঙ্গে। সহপাঠী হোক, হোক সমবয়সী। কোনো তফাৎ নেই সেই বন্ধুত্বের গভীরতায় যদি কোনো খাদ না থাকে। জীবনে প্রথম বন্ধু গড়ে ওঠার স্মৃতি আজো অমলিন হয়ে আছে। সময়ের প্রয়োজনে অনেক বন্ধুই দূরে সরে গেছে কিন্তু মনের দূরত্ব কখনই তৈরি হয়নি। বন্ধুর সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তই অমূল্য হয়ে ধরা দেয় স্মৃতির পাতায়। স্কুল শুরুর দিনে যে ছেলেটি বা মেয়েটি পাশে বসেছিল তাকে কী ভোলা যায় সহজে?
যাদের বন্ধু নেই তারা বিষণ্নতায় ভোগে, একাকিত্ব তাকে গ্রাস করে নেয়। এই জীবন থেকে পালিয়ে ফিরতে অনেকেই নানান পথ খোঁজে। ছন্দহীন জীবনে ছন্দ, নিরানন্দ জীবনে আনন্দের জোয়ার যোগ করতে বন্ধুর জুড়ি নেই।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘বন্ধুত্ব বলিতে তিনটি পদার্থ বুঝায়। দুই জন ব্যক্তি ও একটি জগৎ। অর্থাৎ দুই জনে সহযোগী হইয়া জগতের কাজ সম্পন্ন করা। আর, প্রেম, বলিলে দুই জন ব্যক্তি মাত্র বুঝায়, আর জগৎ নাই। দুই জনেই দুই জনের জগৎ।’ বন্ধুকে অনেকে প্রেমের সঙ্গে অথবা ভালোবাসার সঙ্গে এক করে ফেলেন। বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘ইহা ছাড়া আর একটা কথা আছে প্রেম মন্দির ও বন্ধুত্ব বাসস্থান। মন্দির হইতে যখন দেবতা চলিয়া যায় তখন সে আর বাসস্থানের কাজে লাগিতে পারে না, কিন্তু বাসস্থানে দেবতা প্রতিষ্ঠা করা যায়।’

বাস্তবিক অর্থে, একেক বন্ধু আমাদের মধ্যে একেকটা দুনিয়ার প্রতিফলন ঘটায়। বন্ধু এমন একজন মানুষ যার কাছে মনের কথা খুলে বলা যায় অবলীলায়। এ কারণে বাবা-মা তার সন্তানের কাছে ভালো বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। এটি খুবই জরুরি। অভিভাবক যখন বন্ধু হয়ে ওঠে তখন মানসিক বিপর্যয় ঘটলে অভিভাবক যেন সবার আগে এগিয়ে আসতে পারেন।
অনেক শিক্ষক তার শিক্ষার্থীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বন্ধুসুলভ আচরণ ও শিক্ষাপদ্ধতি অনুসরণ করে। শিক্ষার্থীদের কাছেও তখন শিক্ষাগ্রহণ হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় ও আনন্দময়। জীবনে চলার পথে অনেক রকমের বন্ধুর দেখা মিলবে। ভুল মানুষকে এড়িয়ে না চললে জীবনে লাভের চেয়ে ক্ষতি হয় বেশি। বন্ধুকে সঙ্গী করে জীবনের অমূল্য সময়টুকু ইচ্ছে করলেই রঙিন করে তোলা যায়।
অনেকে বলে থাকেন, এই বন্ধু দিবস কি শুধুই এক দিনের জন্য বন্ধুকে স্মরণ করা, কাছে পাওয়া? এর মাঝেই কি বন্ধুত্ব সীমাবদ্ধ? এর উত্তরে বলা যায়, বন্ধু দিবস হচ্ছে বন্ধুকে বিশেষভাবে স্মরণ করার জন্য। এই বিশেষ সম্পর্ককে সম্মান প্রদর্শনের জন্য। বন্ধুর সঙ্গে দিনটি উপভোগ করার জন্য।

জর্জ হার্ভার্ট বলেছেন, ‘একজন বন্ধু হলো সর্বোৎকৃষ্ট আয়না।’ তার মানে, এই আয়নাতে প্রতিমুহূর্তে সে নিজেকে দেখবে। শুধু বাহ্যিক অবয়বকে নয়, ভেতরটাকেও। বন্ধুত্বটা হওয়া চাই হাত আর চোখের সম্পর্কের মতো। হাতে ব্যথা লাগলে চোখে পানি আসে। আর চোখে যদি পানি ঝরে, তবে হাত এগিয়ে যায় তা মুছে দিতে।
যাদেরকে বন্ধু ভাবি তাদেরকে শুধু এতটুকুই বলবো-বন্ধু শব্দের মাঝে মিশে আছে নির্ভরতা আর বিশ্বাস। বন্ধু আর বন্ধন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। বন্ধুত্ব মানেই যেন হৃদয়ের সবটুকু আবেগ নিংড়ে, ভালোবাসা দিয়ে মন খুলে কথা বলা। বন্ধুর জন্য গেয়ে ওঠা- হাল ছেড়ো না বন্ধু বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে, দেখা হবে তোমার-আমার অন্যদিনের ভোরে। এই হোক বন্ধুর প্রতি বন্ধুর প্রত্যাশা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ২:১১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×