somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দারোয়ান যখন দেশ চালায়

০৩ রা জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে একটি ঘটনা বলে নেই।

ঘটনাটি এরকম, আমার পরিচিত একজন আর্মিতে ঢুকবে। রিক্রুটিং অফিসে গেলে তার ইন্টারভিউ নিলেন আর্মির কোন এক বড় কর্তা। একটা রুমের ভেতর, আমার সেই পরিচিত জন আর সেই পরীক্ষক, সাথে আরও কয়েকজন অফিসার। তিনি ছেলেটিকে প্রশ্ন করলেন, "আমাদের মাথার উপর যে ফ্যান ঘুরছে তার কয়টি পাখা?"
ছেলেটি সুইচ-বোর্ডে গিয়ে ফ্যানের সুইচ অফ করল। তারপর টেবিলে উঠে ফ্যানটিকে ম্যানুয়ালি স্টিল করল। এরপর টেবিল থেকে নেমে এসে বলল, "স্যার, ফ্যানটিতে তিনটি পাখা"।
বড় কর্তা আজব বনে গেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি এরকম করে জবাব দিলে কেন"?
ছেলেটি উত্তরে বলল, "নাহলে আপনি বলতেন, আমি ছয়টা পাখা দেখছি"।
বড় কর্তা মোটামুটি সন্তুষ্ট। তারপর ছেলেটিকে বললেন, "প্যান্ট খুলো"।
ছেলেটি নর্দ্বিধায় উলঙ্গ হলো। তারপর আরও কয়েকজন আর্মির যারা ছিলেন তারা একজন এসে ছেলেটির পশ্চাৎদেশ একটা ডাক্তারই যন্ত্রদিয়ে ফাঁক করলেন। সেখান থেকে ধোয়া বের হচ্ছিল। ছেলেটিকে বড়কর্তা জিজ্ঞেস করলেন, "পাছা দিয়ে ধোয়া বেরুচ্ছে কেন"?
ছেলেটি জবাব দিল, "শীতকালে শরীরের খোলা অংশগুলো দিয়ে গরম বাতাস বেরুলে ধোয়ার মত দেখা যায়"।
তখন জানুয়ারি মাসের শেষের দিক। ভরা শীতকাল। ছেলেটির জবাব পেয়ে বড়কর্তা বড়ই সন্তুষ্ট হলেন। তার সহকারীরা উলঙ্গ বালককে নিয়ে আর যা যা করলেন তার বর্ণনা দেওয়া গেল না বলে দুঃখিত। তবে ছেলেটি আর্মিতে চান্স পেয়েছিল।

আরেকটি ঘটনা। এটা বেশি বড় না। আমার মামী ডাক্তার। আর্মিতে আছেন। সেই সুবাদে এক ছেলেকে সীপাহি পদের জন্য ব্যাকিং দিলেন। ছেলেটি টিকেও গেল। তারপর ছেলেটি একদিন মামীর বাসায় মিষ্টি নিয়ে এলো। তখন মামা ঘরে ছিলেন। ছেলেটি চলে যেতে চাইলে মামা বললেন, "বাবা, দুপুর হয়ে গেছে, ভাত খেয়েই যাও"।
ছেলেটি মামার দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে বলল, "আমাকে এখনই যেতে হবে না হলে ওরা আমাকে বুলশিট করবে"। '

প্রসঙ্গ কথায় আসি। এতক্ষণ যা শুনলেন তা বিষদ ইতিহাসের কয়েক টুকরো মাত্র। এভাবেই আমাদের দেশের দারোয়ানদের নিয়োগ পেতে হয়। "দারোয়ান" শব্দটাই সবথেকে বেশি প্রযোজ্য এদের ক্ষেত্রে। কারণ এরা দেশের নিরাপত্তার জন্য নিবেদিত। ঠিক যেমন আপনার আমার এলাকায় বা বাড়িতে দারোয়ান থাকে, তেমনি পুরো দেশের দারোয়ান এরাই।

তবে যেখানে ঢুকতে গেলে পশ্চাৎদেশ দেখে মানুষের বুদ্ধি ও সামর্থ পরীক্ষা করা হয় সেখানটার মানুষেরা কেমন হয় তা আর কী বলব? তাই বলে, আর্মির বুদ্ধি হয় পাছাতে থাকে নয় হাটুতে।

তো দেশের দারোয়ানরা যখন দেশ চালানোর দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন কী কী হতে পারে তাই দেখা যাচ্ছে এখন। দারোয়ানের চোখে চোর তো ধরা পড়বেই। কিন্তু সেই চোর আসলেই চোর কিনা, বা তাদের ধরার এখতিয়ার আইনত সবরকম দিক সেখানে বিবেচ্য। তা আমাদের মহান সেনাবাহিনী ভুলে পটাপট ঘরের কর্তাদের ধরে ধরে খাঁচায় পুড়ে ফেললেন। এখন? আইনি জটিলতায় পড়ে যারা আসল চোর তারা বের হয়ে যাবার ফন্দি করছে। আর আমাদের জনগণের নির্বুদ্ধিতায় হোক আর সচেতনতায় হোক গণতন্ত্রের একটা দৃপ্ত চাওয়া সবার মাঝেই দেখা যাচ্ছে। এখন দারোয়ানরা কী করবেন? তাদের সাধ্যই বা কী? তাদের দৌড় ঐ রিক্রুটিং অফিসারদের পাছা দেখা পর্যন্ত।

দারোয়ান ক্ষমতায় থাকলে আমাদের সরকারি মিডিয়ার দোষ কী আর? সেখানে অনবরত দারোয়ান বুদ্ধিতে আলুর প্রপাগান্ডা চলছে। চলছে দারোয়ানদের হাতিয়ার নিয়ে বাহাদুরি। তাদের মিগ আছে, অস্ত্র আছে, ট্যাঙ্ক আছে যদিও সেগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অচল মাল। তবুও সেগুলো দেখে দেখেই আমরা অতীষ্ট। দারোয়ানদের ক্ষমতা থেকে হটানোর ক্ষমতা জনগণের নেই। কারণ সবরকম সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে আল্লাহর ইচ্ছায় নিস্তার পাওয়া গেলেও সরকারি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া অত সহজ না। এজন্য যে নেতার প্রয়োজন আমাদের দেশে তা নাই।

রাজনৈতিক সঙ্কটে পরে আমাদের নেতারা ক্ষমতা হারিয়েছেন দারোয়ানদের কাছে। মানে বাসার কর্তা যদি অতি সতর্ক হন তাহলে ক্ষমতা তো হারাবেনই। কিন্তু সেটা দারোয়ানের কাছেই, কারণ আমাদের দেশের সংবিধান একটা উপহাস্য।

লঙ্কায় গেলে নাকি মানুষ রাবণ হয়ে যায়। এই সরকারেরও একই অবস্থা। দ্রব্যমূল্য থেকে শুরু করে সর্বোপরি পুলিশ ও সরকারি মহলে যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে, যে হারে দূর্নীতি বাড়ছে তাতে মনে হয় দূর্নীতিমুক্ত এরাও না। টাস্কফোর্স নানা ভাবে দূর্নীতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার প্রমাণও আছে আজ।

সবশেষে আরেকটি গল্প দিয়ে শেষ করি। আমি আমার পরিবার নিয়ে একবার রাতে এয়ারপোর্ট থেকে ফিরছিলাম। পথে গাড়ি নষ্ট হয়ে গেল। অন্ধকার, তখন এয়ারপোর্ট রোডে এত বাতি ছিল না। গাড়ি এক পাশে দাঁড় করিয়ে আমাদের ড্রাইভার সেটা মেরামতের চেষ্টা করছে। মোবাইলও ছিল না সবার হাতে হাতে যে কাউকে খবর দেওয়া যায়। এমন সময় দেখা গেল দূর থেকে দু'জন লম্বা মানুষ এগিয়ে আসছে। কাছে আসতে তাদের উর্দি দেখে বুঝলাম তারা আর্মির লোক। আমাদের গাড়ির কাছে এসে বলল, "কী হয়েছে"?
বললাম, "ফ্যান বেল্ট ছিড়ে গেছে।"
তারা অবাক হয়ে গাড়ি দেখল কিছুক্ষণ। তারপর বলল, "আমরা শাস্তি পেয়েছি নাহলে ফ্যান বেল্ট কিনে দিতাম"।
কথাটা আমি আর বাবা হজম করতে করতে তারা দিব্য হেটে চলে গেল।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:২৫
৩৮টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×