প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে একটি ঘটনা বলে নেই।
ঘটনাটি এরকম, আমার পরিচিত একজন আর্মিতে ঢুকবে। রিক্রুটিং অফিসে গেলে তার ইন্টারভিউ নিলেন আর্মির কোন এক বড় কর্তা। একটা রুমের ভেতর, আমার সেই পরিচিত জন আর সেই পরীক্ষক, সাথে আরও কয়েকজন অফিসার। তিনি ছেলেটিকে প্রশ্ন করলেন, "আমাদের মাথার উপর যে ফ্যান ঘুরছে তার কয়টি পাখা?"
ছেলেটি সুইচ-বোর্ডে গিয়ে ফ্যানের সুইচ অফ করল। তারপর টেবিলে উঠে ফ্যানটিকে ম্যানুয়ালি স্টিল করল। এরপর টেবিল থেকে নেমে এসে বলল, "স্যার, ফ্যানটিতে তিনটি পাখা"।
বড় কর্তা আজব বনে গেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি এরকম করে জবাব দিলে কেন"?
ছেলেটি উত্তরে বলল, "নাহলে আপনি বলতেন, আমি ছয়টা পাখা দেখছি"।
বড় কর্তা মোটামুটি সন্তুষ্ট। তারপর ছেলেটিকে বললেন, "প্যান্ট খুলো"।
ছেলেটি নর্দ্বিধায় উলঙ্গ হলো। তারপর আরও কয়েকজন আর্মির যারা ছিলেন তারা একজন এসে ছেলেটির পশ্চাৎদেশ একটা ডাক্তারই যন্ত্রদিয়ে ফাঁক করলেন। সেখান থেকে ধোয়া বের হচ্ছিল। ছেলেটিকে বড়কর্তা জিজ্ঞেস করলেন, "পাছা দিয়ে ধোয়া বেরুচ্ছে কেন"?
ছেলেটি জবাব দিল, "শীতকালে শরীরের খোলা অংশগুলো দিয়ে গরম বাতাস বেরুলে ধোয়ার মত দেখা যায়"।
তখন জানুয়ারি মাসের শেষের দিক। ভরা শীতকাল। ছেলেটির জবাব পেয়ে বড়কর্তা বড়ই সন্তুষ্ট হলেন। তার সহকারীরা উলঙ্গ বালককে নিয়ে আর যা যা করলেন তার বর্ণনা দেওয়া গেল না বলে দুঃখিত। তবে ছেলেটি আর্মিতে চান্স পেয়েছিল।
আরেকটি ঘটনা। এটা বেশি বড় না। আমার মামী ডাক্তার। আর্মিতে আছেন। সেই সুবাদে এক ছেলেকে সীপাহি পদের জন্য ব্যাকিং দিলেন। ছেলেটি টিকেও গেল। তারপর ছেলেটি একদিন মামীর বাসায় মিষ্টি নিয়ে এলো। তখন মামা ঘরে ছিলেন। ছেলেটি চলে যেতে চাইলে মামা বললেন, "বাবা, দুপুর হয়ে গেছে, ভাত খেয়েই যাও"।
ছেলেটি মামার দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে বলল, "আমাকে এখনই যেতে হবে না হলে ওরা আমাকে বুলশিট করবে"। '
প্রসঙ্গ কথায় আসি। এতক্ষণ যা শুনলেন তা বিষদ ইতিহাসের কয়েক টুকরো মাত্র। এভাবেই আমাদের দেশের দারোয়ানদের নিয়োগ পেতে হয়। "দারোয়ান" শব্দটাই সবথেকে বেশি প্রযোজ্য এদের ক্ষেত্রে। কারণ এরা দেশের নিরাপত্তার জন্য নিবেদিত। ঠিক যেমন আপনার আমার এলাকায় বা বাড়িতে দারোয়ান থাকে, তেমনি পুরো দেশের দারোয়ান এরাই।
তবে যেখানে ঢুকতে গেলে পশ্চাৎদেশ দেখে মানুষের বুদ্ধি ও সামর্থ পরীক্ষা করা হয় সেখানটার মানুষেরা কেমন হয় তা আর কী বলব? তাই বলে, আর্মির বুদ্ধি হয় পাছাতে থাকে নয় হাটুতে।
তো দেশের দারোয়ানরা যখন দেশ চালানোর দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন কী কী হতে পারে তাই দেখা যাচ্ছে এখন। দারোয়ানের চোখে চোর তো ধরা পড়বেই। কিন্তু সেই চোর আসলেই চোর কিনা, বা তাদের ধরার এখতিয়ার আইনত সবরকম দিক সেখানে বিবেচ্য। তা আমাদের মহান সেনাবাহিনী ভুলে পটাপট ঘরের কর্তাদের ধরে ধরে খাঁচায় পুড়ে ফেললেন। এখন? আইনি জটিলতায় পড়ে যারা আসল চোর তারা বের হয়ে যাবার ফন্দি করছে। আর আমাদের জনগণের নির্বুদ্ধিতায় হোক আর সচেতনতায় হোক গণতন্ত্রের একটা দৃপ্ত চাওয়া সবার মাঝেই দেখা যাচ্ছে। এখন দারোয়ানরা কী করবেন? তাদের সাধ্যই বা কী? তাদের দৌড় ঐ রিক্রুটিং অফিসারদের পাছা দেখা পর্যন্ত।
দারোয়ান ক্ষমতায় থাকলে আমাদের সরকারি মিডিয়ার দোষ কী আর? সেখানে অনবরত দারোয়ান বুদ্ধিতে আলুর প্রপাগান্ডা চলছে। চলছে দারোয়ানদের হাতিয়ার নিয়ে বাহাদুরি। তাদের মিগ আছে, অস্ত্র আছে, ট্যাঙ্ক আছে যদিও সেগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অচল মাল। তবুও সেগুলো দেখে দেখেই আমরা অতীষ্ট। দারোয়ানদের ক্ষমতা থেকে হটানোর ক্ষমতা জনগণের নেই। কারণ সবরকম সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে আল্লাহর ইচ্ছায় নিস্তার পাওয়া গেলেও সরকারি সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া অত সহজ না। এজন্য যে নেতার প্রয়োজন আমাদের দেশে তা নাই।
রাজনৈতিক সঙ্কটে পরে আমাদের নেতারা ক্ষমতা হারিয়েছেন দারোয়ানদের কাছে। মানে বাসার কর্তা যদি অতি সতর্ক হন তাহলে ক্ষমতা তো হারাবেনই। কিন্তু সেটা দারোয়ানের কাছেই, কারণ আমাদের দেশের সংবিধান একটা উপহাস্য।
লঙ্কায় গেলে নাকি মানুষ রাবণ হয়ে যায়। এই সরকারেরও একই অবস্থা। দ্রব্যমূল্য থেকে শুরু করে সর্বোপরি পুলিশ ও সরকারি মহলে যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে, যে হারে দূর্নীতি বাড়ছে তাতে মনে হয় দূর্নীতিমুক্ত এরাও না। টাস্কফোর্স নানা ভাবে দূর্নীতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার প্রমাণও আছে আজ।
সবশেষে আরেকটি গল্প দিয়ে শেষ করি। আমি আমার পরিবার নিয়ে একবার রাতে এয়ারপোর্ট থেকে ফিরছিলাম। পথে গাড়ি নষ্ট হয়ে গেল। অন্ধকার, তখন এয়ারপোর্ট রোডে এত বাতি ছিল না। গাড়ি এক পাশে দাঁড় করিয়ে আমাদের ড্রাইভার সেটা মেরামতের চেষ্টা করছে। মোবাইলও ছিল না সবার হাতে হাতে যে কাউকে খবর দেওয়া যায়। এমন সময় দেখা গেল দূর থেকে দু'জন লম্বা মানুষ এগিয়ে আসছে। কাছে আসতে তাদের উর্দি দেখে বুঝলাম তারা আর্মির লোক। আমাদের গাড়ির কাছে এসে বলল, "কী হয়েছে"?
বললাম, "ফ্যান বেল্ট ছিড়ে গেছে।"
তারা অবাক হয়ে গাড়ি দেখল কিছুক্ষণ। তারপর বলল, "আমরা শাস্তি পেয়েছি নাহলে ফ্যান বেল্ট কিনে দিতাম"।
কথাটা আমি আর বাবা হজম করতে করতে তারা দিব্য হেটে চলে গেল।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:২৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




