আজকে একটা বিদ্যুৎ চমকের মত আমি বুঝতে পারলাম, আমি এবং আমরা কতটা ভালো আছি। আর এই ভালো থাকার অর্থই বা কি।
বাসার টেলিভিশনটা নষ্ট। এটা ঠিক করাতে দিয়ে আসতে গিয়ে আমার বাবা আর আমি মিলে একটি শপিং কমপ্ল্যাক্সে ঢুকলাম। আমাদের ইচ্ছা, আমার মা এবং বোনের জন্য দুইটা কাপড় কিনব।
এক দোকানে ঢুকে দুইটা জামা পছন্দও হয়ে গেল। টাকা দিয়ে জামা নিয়ে ভাংতির জন্য বসে আছি। এমন সময় এক বুড়ি মহিলা দোকানে এলেন। আমার বাবাকে জিজ্ঞেস করলেন, কি কিনেছেন? একটু দেখলে মাইন্ড করবেন?
আমার বাবা স্বচ্ছন্দে বুড়ি মহিলাকে দেখালেন দুইটা জামা। মহিলা জামা দুটো দেখে দুইচার-খানা মন্তব্য করলেন। এরপর তিনি বললেন, আমার লাং ক্যান্সার। ঢাকায় আসি ডাক্তার দেখাতে। তিন বছর হয়ে গেল, আল্লাহ আমাকে বাঁচায় রাখছেন, আলহামদুলিল্লাহ!
লাং ক্যান্সারের কথা শুনে আমি ও বাবা একটু জিজ্ঞাসু হলাম। কিভাবে কেমনে ধরা পড়ল ইত্যাদি জানতে চাইছিলাম। মহিলা নিজের কথা বলছিলেন। ১৯৮৪ সালে তিনি খুব কম বয়সে বিধবা হন। উনার একটি মাত্র ছেলে অনার্স মাস্টার্স শেষ করে এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ২০০৬ সালে।
এসবের মধ্য দিয়েও বুড়ো মহিলা এই দোকানে নিজের জন্য এক-খানা জামা কিনতে এসেছেন। ঈদ করবেন বলে।
সত্যি বলতে আমি উনার জায়গায় থাকলে বেঁচে থাকার কোন অর্থই খুজে পেতাম না। আর উনি স্বচ্ছন্দে বেঁচে আছেন। ভালো আছেন। যদিও এখনও ক্যান্সারের ঝুঁকি মুক্ত নন।
সত্যি ঈদের আনন্দ কেমন অদ্ভূত। কেমন করুণ কষ্ট লাগা। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে মনে মনে আজ অনেকবার বললাম, আমাকে এবং আমাদেরকে ভালো রাখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। বুড়ো মহিলাকে তুমি অনেক ভালো রেখ, তিনি শতবর্ষী হোন।