somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভূমিকম্প-আমাদের সর্তক থাকা দরকার

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংগ্রহ

৫ দেশের বিজ্ঞানীদের হুঁশিয়ারি বাংলাদেশের মাটির নিচে বিশ্বের বৃহত্তম ভূমিকম্পের আলামত, ঢাকা এখন টাইম বোমার ওপর

বাংলাদেশের মাটির নিচে পৃথিবীর পরবর্তী বৃহত্তম ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের ঘূর্ণন সৃষ্টি হচ্ছে? আতঙ্ক জাগানিয়া এ প্রশ্ন রেখেছেন একদল প্রথিতযশা সিসমোলজিস্ট। এ বিজ্ঞানীরা জাপান, হাইতি, সুমাত্রার উপকূলীয় অঞ্চল ও শহরগুলোজুড়ে সাম্প্রতিককালের ভূমিকম্প সংঘটনের পটভূমিতে তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন, হিসাব কষছেন- এরপর তাহলে কোথায়? কোন দেশের ওপর নেমে আসতে পারে পরবর্তী বৃহত্তম ভূমিকম্প বিপর্যয়। বাংলাদেশকে নিয়ে লিখেছেন কেভিন ক্রাজিক। তিনি আর্থ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র সায়েন্স রাইটার। ৩০ বছরের বেশি সময় তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, দ্য নিউ ইয়র্কার ও নিউজউইক পত্রিকায় নিয়মিত লিখে থাকেন তিনি। তবে এ পূর্বাভাস শুধু কেভিন ক্রাজিকের লেখা কোন প্রতিবেদন নয়। এটা সমষ্টিগতভাবে ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে লাল হরফে লেখা আছে, ‘বিনিথ বাংলাদেশ: দ্য নেক্সট গ্রেট আর্থকোয়েক’। এ প্রকল্পে অংশ নেয়া বিশ্বের অন্য সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্রের কুইন্স কলেজ, টেনেসের ভ্যান্ডারবিল্ট, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানির ব্রামিন বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি এবং বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি ও ইতালির একটি বিশ্ববিদ্যালয়।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অবজারভেটরি গ্রুপের একদল গবেষক বর্তমানে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনস্টিটিউটে রয়েছেন।
কেভিন ক্রাজিকের উল্লিখিত নিবন্ধ এবং ১০ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি গত ১৩ই জুলাই যৌথভাবে প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্কে অবস্থিত কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনস্টিটিউট। তারা দেখিয়েছে, বাংলাদেশের গভীর তলদেশে সক্রিয় হচ্ছে বহুপূর্বে সমাহিত হওয়া ‘ফল্টস’। পৃথিবী অতীতে কিভাবে ঘূর্ণন সম্পন্ন করেছে, অকস্মিকভাবে নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ার তথ্যও বিশ্লেষণ করেছেন তারা। আর এসব বিবেচনায় নিয়েই তাদের এই আশঙ্কা ব্যক্ত করা।
কেভিন ক্রাজিক লিখেছেন, ১৬ কোটির বেশি মানুষের এ দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং তা বাড়ছে দ্রততার সঙ্গে। দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম নদী অববাহিকা এবং তা সমুদ্র উচ্চতার কাছাকাছি। এর ফলে বাংলাদেশ সুনামি হুমকিতে রয়েছে। ভূমিকম্প হলে নদীগুলোর তীর লাফিয়ে লাফিয়ে গতিপথ তার পরিবর্তন ঘটাবে। বড় বড় ব্রিজ ও বহুতল বিশিষ্ট ভবনগুলো ধসে পড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। বিজ্ঞানীরা এটা স্বীকার করতে এগিয়ে এসেছেন যে, এ মুহূর্তে বেশ কিছু সক্রিয় ‘টেকটনিক প্লেট বাউন্ডারি’ ঘেঁষে আছে বাংলাদেশ। এর সঙ্গে আছে সুমাত্রায় ২০০৪ সালের সেই প্রলয়ঙ্করী সুনামির লেজটা, যা কিনা দু’লাখ মানুষের প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ওই লেজটি থেকে বাংলাদেশ মাত্র ১৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অবজারভেটরির সিসমোলজিস্ট সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানীর কাছে কোন ভূমিকম্প আঘাত হানলে তা (ছবি নিউ ৪৯৩) জিডির দিক থেকে আধুনিককালের অন্যসব বিপর্যয়কে ম্লান করে দেবে।’ তার কথায়, ঢাকা একটি টাইম বোমার ওপর রয়েছে।
‘বিপর্যয়’ পরিমাপ করতে এ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের ৫০ লাখ ডলার ব্যয় সাপেক্ষ পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যামন্ট ডুহার্টি আর্থ অবজারভেটরিতে এখন রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসমোলজিস্টরা। তাদের সঙ্গে আছেন টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা, নিউ ইয়র্কের কুইন্স কলেজ। ইতালি, জার্মানি ও ভারতীয় সিসমোলজিস্টরাও রয়েছেন। বিজ্ঞানীরা এখন এমন একটি সিসমোমিটার সচল ও কার্যকর করে তুলছেন যাতে মাটির যথেষ্ট তলদেশে সংঘটিত মৃদু কম্পনও রেকর্ড করবে। হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা এক সময়ের শক্তিশালী নদী বয়ে এনেছিল বিপুল পরিমাণ বালু ও মাটি। এসব যেখানে জমাট হয়েছে তার ১২ মাইল নিচ পর্যন্ত সক্রিয় থাকা ‘ফল্টস’ শনাক্ত করে উপযুক্ত ম্যাপ তৈরিতে সহায়তা দেবে। রিভারবেডের কাছে বিজ্ঞানীরা এখন ২৫০টি কূপ খনন করার কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। সেডিমেন্ট স্যাম্পেল সংগ্রহ করাই এর লক্ষ্য। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই সমীক্ষার ফলে অতীতে সংঘটিত ভূমিকম্প ও নদীর গতিপথ পরিবর্তনের সময় ও পরিধি সম্পর্কে সম্যক ধারণা মিলবে। ওই ভূমিকম্পগুলো হয়তো দেশটির বিরাট জায়গা গিলে খেয়েছে, তখন অবশ্য বাংলাদেশ এ রকম ঘনবসতিপূর্ণ ছিল না। চলমান গবেষণার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ও জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দরকারি তথ্য-উপাত্তের যোগান দেয়া, যার সাহায্যে তারা ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারেন।
এ প্রকল্পে কর্মরত লেমন্ট সিসমোলজিস্ট লিওনার্দো সিবার (ছবি নিউ-৪৭৩) বলেন, ‘আর্থ সায়েন্স, নেচারাল হ্যাজার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মধ্যে আমরা একটি কৌশলগত কনফু্লয়েন্স বা ঐক্যসূত্র খুঁজে পাচ্ছি। চলতি মাসে ওয়শিংটনে এসেছেন প্রকল্পের মূল অনুসন্ধানী মাইকেল স্টেকলার। একটি নতুন কর্মসূচি শুরু করতেই তার এ সফর। এনএসএফ এবং ইউএসএইড যৌথভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হোয়াইট হাউস অফিস অব সায়েন্স অ্যাণ্ড টেকনোলজি পলিসির পরিচালক জন পি হোলডার্ন বলেন, ‘বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের প্রয়োগ ঘটিয়ে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর সুফল উন্নয়নশীল দেশগুলো যেমন, তেমনি শিল্পোন্নত দেশগুলোও পাবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×