somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্যার আলফ্রেড হিচককের "ব্যবহারিক তামাশা" ও তদসম্মর্কিত জটিলতাসমূহ(ট্রিভিয়া পোস্ট)

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“Always make the audience suffer as much as possible.”- Alfred Hitchcock Quotes :-*:-*:-*

১৯৬৬ সালে ফ্রাসোয়া ক্রফোর কাছে আলফ্রেড হিচকক প্র্যাকটিক্যাল জোকের প্রতি তাঁর দুর্বলতার কথা স্বীকার করেন । আলফ্রেড হিচককের এই “তামাশা”গুলো বিভিন্ন মাত্রার ছিল । এর মাঝে কিছু ছিল নিরীহ ধরণের, কিছু কিছু ছিল মনস্তাত্ত্বিক খেলা, আবার কিছু কিছু ছিল পুরোপুরি পাগলামি । হিচকক মাঝে মাঝে এলিভেটরে উচ্চস্বরে যেকোন একটি আকর্ষণীয় গল্প বলা আরম্ভ করতেন । তিনি এলিভেটরের সাথে নিখুঁত টাইমিং করে গল্পের মূল অংশ(পাঞ্চ লাইন) না বলেই এলিভেটর থেকে বেরিয়ে যেতেন । ফলে স্রোতারা পুরোপুরি গল্প শুনতে পারতেন না । তাঁদের এই অতৃপ্তিটাই হিচককের লক্ষ্য থাকত ।



হিচকক মাঝে মাঝে নিজের দেয়া ডিনার পার্টিতে আগত অতিথিদের চেয়ারে আগে থেকেই হুপি কুশন রেখে দিতেন । মাঝে মাঝে এইসব ডিনার পার্টিতে এলোমেলোভাবে খাবার পরিবেশন করা হত । ডেজার্ট সব শেষে খাওয়ার নিয়ম থাকলেও সেটা আগে দিয়ে দেয়া-এরকম আর কি । অনেক সময় অতিথি বিচিত্র রঙয়ের খাবার খেতে গিয়ে অসুবিধা বোধ করতেন । এই বিচিত্র রঙয়ের খাবারের মাঝে উল্লেখযোগ্য হল- নীল রঙয়ের স্যুপ, নীল রঙয়ের আইসক্রিম ইত্যাদি । হিচকক এসময় অতিথিদের মুখভঙ্গি দেখে মজা পেতেন ।


“I am a typed director. If I made cinderalla, the audience would immediately be looking for a body in the coach.”_ HItchcock
:|:|:|

অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ছিলেন হিচককের নিয়মিত টার্গেট । একবার একজন অভিনেতাকে ৪০০ স্মোকড হেরিং মাছ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন । আরেকবার একজন অভিনেতার ড্রেসিংরুমে একটা ঘোড়া পাঠিয়ে দিয়েছিলেন শুধুমাত্র সেই অভিনেতার কি প্রতিক্রিয়া হয় সেটা দেখার জন্য । অভিনেত্রী এলসি রান্ডলফ হিচকককে বলেছিলেন যে তিনি আগুন ভয় পান, হিচকক তাকে একটা টেলিফোন বক্সে আটকে রেখে তার মাঝে স্মোক মেশিন দিয়ে ধোঁয়া ছেড়ে দেয়ার বন্দোবস্ত করেছিলেন ।

একবার আরেকজন “আলফ্রেড”(এসিস্ট্যান্ট ক্যামেরাম্যান আলফ্রেড রোমি) হিচককের তামাশার স্বীকার হন । পরবর্তীতে রোমি হিচককের গাড়ির সিটের নিচে একটা নকল স্মোক বোম রেখে হিচকককে শায়েস্তা করেন । হিচকক পরে আর সেই ক্যামেরাম্যানকে ঘাটাননি ।


“দি বার্ডস” মুভির শ্যুটীং এর সময় কিছু জায়গায় জ্যান্ত পাখি ব্যবহার করার কারণে অভিনেত্রী টিপ্পি হার্ডেনকে অনেক ভোগান্তির মাঝে পড়তে হয় । হিচকক হার্ডেনের মেয়ে মেলানি গ্রিফিথকে একটি ছোট আকৃতির কফিন উপহার দেন, সেখানে মেলানি দেখতে পায় “দি বার্ডস”মুভিতে হার্ডেনের কস্টিউম পড়া একটি হুবহু তার মার মত দেখতে একটি পুতুল শুয়ে রয়েছে । বলা বাহুল্য, একটা বাচ্চার জন্য এই ধাক্কাটা হজম করা সহজ ছিল না ।



কিন্তু একবার হিচকক দারুণভাবে সমালোচিত হন । তিনি একজনের সাথে এক সপ্তাহের বেতন বাজি ধরেন । বাজির শর্ত ছিল, হিচকক যার সাথে বাজি ধরেছেন তাকে এক রাত জনশূন্য স্টুডিওতে ক্যামেরার সাথে বাঁধা অবস্থায় কাটাতে হবে । হিচকক তার “মুরগা”কে ক্যামেরার সাথে বাঁধার আগে তাকে ব্র্যান্ডি অফার করেন এই বলে- “তাড়াতাড়ি গভীর ঘুমে তলিয়ে যেতে কাজে লাগতে পারে ।” ব্র্যান্ডি খাইয়ে হাতকড়া লাগিয়ে দিয়ে হিচকক প্রস্থান করলেন । ঘটনা হল, সেই ব্র্যান্ডিতে হিচকক সেই সময়ের সবচাইতে শক্তিশালী লাক্সাটিভ(the drugs which effect on moving the bowels, thereby promote DEFEACATION) ড্রাগ মিশিয়ে দিয়েছিলেন । পরের দিন সকালবেলা এসে তারা কি দেখতে পেলেন সেটা তো নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন ।

“Disney has the best casting. If he doesn’t like an actor he just tears him up.”- Hitchcock
:P:P:P
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×