ধর্ষণের দেশ
এফ.বি.আই এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৯০ সালে ১ লক্ষ ২ হাজার ৫৫৫ টি ধর্ষণের কেস রির্পোট করা হয়েছে। আরো বলেছে যে, এ রির্পোট মোট ধর্ষণের মাত্র ১৬ ভাগ কেস রির্পোট করা হয়েছে। তার মানে ১৯৯০ সালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৬ লক্ষ ৪০ হাজার ৯৬৮ টি। অর্থ্যাৎ ১৯৯০ সালে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৭শত ৫৬ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ১৯৯২-৯৩ সালে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৯শতেরও বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। অর্থ্যাৎ প্রতি ১.৩ মিনিটে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে একটা। মোট ধর্ষনের কেস রির্পোট করা হয়েছে ১৬%। যতগুলো কেস রির্পোট করা হয়েছে তার ১০% অ্যারেস্ট হয়েছে। মানে ধর্ষকদের মাত্র ১.৬% এরেস্ট হয়েছে। যারা এরেস্ট হয়েছে তাদের ৫০% মুক্তি পেয়েছে বিচার আগেই বিনা বিচারে। অর্থ্যাৎ মাত্র .০৮ শতাংশ ধর্ষকের বিচার হয়েছে। ১২৫টি ধর্ষণ করলে শাস্তি পায় মাত্র একবার। আর যাদের বিচার হয়, তাদের ৫০% শাস্তি পায় ১ বছরের কম কারাদন্ড। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আমেরিকায় যত ধর্ষণ সংঘঠিত হয় তার বেশির ভাগই মানে শতকরা ৯৫ ভাগের বেশি ধর্ষণ সংঘঠিত হয় মাতাল অবস্থায়। আর এসব ঘটনার প্রায় সব অজাচার ঘটে। মানে বাবা-মেয়ে,মা-ছেলে,ভাই-বোন ইত্যাদী এদের সাথে যৌনকর্ম। পরিংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায়, ধর্ষণের দায়ে সাজা প্রাপ্ত অপরাধীরা জেল খাটার যখন মুক্তি পায়,তাদের শতকরা ৯৫ জনই আবার ধর্ষণ করে। (জাকের নায়েক লেকচার সমগ্র)
মরনব্যাধী এইডসের ভয়াবহতা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এইচ আইভি তে আক্রান্ত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এইচ আইভি আক্রান্তের বাড়ছে ব্যাপকহারে। দেশটিতে প্রতি বছর ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এইচ আইভিতে আাক্রান্ত হচ্ছে। সংখ্যাটি এতদিন যা ভাবা হয়েছিল বাস্তবে তার ৪০ শতাংশ বেশি। এইচ আইভি শনাক্তকরণের নতুন এক পদ্ধতি ব্যবহার করে এ বিষয়ে সুনিদিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সিডিসি জানায়-২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৬ হাজার ৩০০ জন আইচ আইভি তে আক্রান্ত হয়। এতদিন প্রতিবছর আনুমানিক সংক্রমনের হার প্রায় ৪০ হাজার বলে ধরা হতো। সিডিসি ন্যাশনাল সেন্টার ফর এইচ আইভি এইডস এর পরিচালক ক্যাভিন ফেনটন বলেন-সর্বশেষ চিত্রটি অবশ্যই উদ্বেগজনক। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে এইচ আইভি মহামারীর ভয়াবহতা যতখানি মনে করা হয়েছিল বাস্তবে চিত্রটি এর চেয়ে ও বেশি।
সর্বশেষ গভেষনা মতে-যুক্তরাষ্ট্র নতুন যারা সংক্রমিত হয়েছে তাদের ৫৩ শতাংশ সমকামী ও উভয়কামী পুরুষ। আক্রান্তদের মধ্যে ৩১ শতাংশ বহুগামী ও ১২ শতাংশ মাদকাসক্ত। এছাড়া নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৪৫ শতাংশই আফ্রিকা বংশোদ্রুত মার্কিন নাহরিক এবং দেশটিতে মোট জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ আফ্রিকান আমেরিকান।সিডিসি আরো জানিয়েছে-আমেরিকায় কম বেশি প্রায় দশ লাখ মানুষ এইচ আইভিতে আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রতি বছর ১৫-১৮ হাজারের মৃত্যু হচ্ছে। সিডিসি আরো জানায়-প্রাপ্ত তথ্য থেকে এটি এক রকম নিশ্চিত যে আমেরিকার পুরুষ সমকামী ও কৃঞ্চাঙ্গ নারী পুরুষের মধ্যে এইচ আইভি আক্রান্ত হওয়ার হার অনেক বেশি। নতুন হিসেব মতে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ২৮ হাজার পুরুষ সমকামী। ২০০৩ সাল এইচ আইভিতে আক্রান্ত হয়েছে ১১ লাখ। ২৪-২৭ শতাংশ মানুষ সংক্রমন বিষয়ে অসচেতন।
চারিত্রিক অধঃপতনে ধস নামছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
বর্তমানে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, আমেরিকার স্কুল সমূহে সংঘঠিত অপরাধের মাত্রা ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে। নিউইয়ার্ক টাইমসে জর্জ ডাইনের এক রির্পোটের বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে, আমেরিকার বিগত ১৫-১৯ বছরের মধ্যে প্রতি হাজার মেয়ের মধ্যে ৯৬% অবৈধ গর্ভবতী হয়েছে। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় ২,৭০,০০০ লোক এইডস এ আক্রান্ত। কঠোর আইনের বদলে “সর্তকতার সাথে প্রেম করো” ”সর্তকতার সাথে মহব্বত করো” বলে যুব সমাজকে উপদেশ দেয়া হয়।। হাই স্কুলের ৮৬% দশ বছর বয়সী ছাত্রী গর্ভবতী হয়। কলেজ ছাত্রদের উপর এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে যা ৬২০০ নারী ও পুরুষের মাঝে ৩২ টি ক্যাম্পাসে ৩ বছর পর্যন্ত চালানো হয়। খ্যাতনামা মনোস্তত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ম্যারিকাস বলেছেন,ঐ ক্যাম্পাস সমূহে ২০% মেয়ের সাথে জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনার সংখ্যা ৮৭৩৪০ টি। আমেরিকায় হাই স্কুলে প্রতি ২ জনে এক জন মদ্যপ, চার জনে ১ জন সিগারেট পান করে, দশ জনে ১ জন হাশীশ ব্যবহার করে। প্রতি সাত মিনিটে একটি শিশু নেশা করার দায়ে গ্রেফতার হয়। প্রতি ২৭ সেকেন্ডে একটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে মা হয়। প্রতি ৪৭ সেকেন্ডে একটি শিশু ধর্ষিতা হয়। প্রতি ৩৬ মিনিটে আগ্নেয়াস্তে এক জন লোক নিহত বা আহত হয়। জর্জ লিন্ডসে লিখেন, হাই স্কুলের ৪৯৫ জন অল্প বয়সী তার কাছে স্বীকার তারা ছেলেদের সাথে দৈহিক মিলনের অভিজ্ঞা লাভ করেছে, এর মধ্যে ১২৫ জনের গর্ভ হয়। মানব সভ্যতার জন্য নতুন এক ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রভাবশালী পত্রিকা নিউ ইয়র্ক টাইমস। পত্রিকাটি খবর দিয়েছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেড সেভেন থেকে টুয়েলভ কাসের ছাত্রীদের অর্ধেকই যৌন হয়রানির শিকার। অন্তত গত শিাবছরের ওপর পরিচালিত গবেষণা রিপোর্ট তাই বলছে। যৌন নির্যাতনের শিকার ছাত্রীদের শতকরা ৮৭ ভাগের ওপর পড়েছে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব। গবেষণায় বলা হচ্ছে, ছেলেরা যেখানে শতকরা ৪০ ভাগ যৌন হয়রানির শিকার সেখানে মেয়েদের সংখ্যা শতকরা ৫৬ ভাগ। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ২০১০-১১ শিা বছরে গড়পড়তা শতকরা ৪৮ ভাগ ছাত্র-ছাত্রী যৌন নির্যাতনের শিকার। শতকরা ৪৪ ভাগ ছাত্র-ছাত্রী বলেছে, তারা মানুষের হাতে নির্যাতিত হয়েছে।মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলোতে ছাত্রীরা সবচেয়ে বেশি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এ সংখ্যা শতকরা ৫২ ভাগ। এরা সবাই শারীরিকভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে আর শতকরা ৩৬ ভাগ অনলাইনে। এর বিপরীতে মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রদের শতকরা ৩৫ ভাগ শারীরিক যৌন হয়রানির শিকার এবং ২৪ ভাগ অনলাইনে।
বিলুপ্তির পথে পরিবার প্রথা
আমেরিকার এক ম্যাগাজিনে Better Homes and Eardins তার পাঠকদের প্রশ্ন করেছিল আপনারা কি মনে করেন, আমেরিকার পারিবারিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে? ৭৬% জবাব ছিল হ্যা, ৮৫% লোক বিবাহের ব্যাপারে তাদের আশা পূর্ণ হয়নি বলে মত দেয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়,প্রতি ১৮ সেকেন্ডে একজন স্ত্রী বা মহিলা মারা যায় স্বামী বাব বন্ধুর হাতে। টাইমস (২৩ মার্চ ১৯৮৭) আমেরিকায় প্রায় ১৫% বিবাহিত ব্যক্তি শারীরিক দিক থেকে সন্তান প্রজননে অক্ষম (টাইমস জানু,১৯৮৭)। আামেরিকান নারী সমাজ মাতৃত্ব এবং ঘর সামনোর দায়িত্ব ১৫ বছর পূর্বে ছেড়ে দিয়েছে। বিংশ শতাব্দির শেষ প্রান্তে পৌছে আমেরিকান বৃদ্ধিজীবিরা বলতে বাধ্য হচ্ছেন,বিংশ শতাব্দির সূচনা লগ্নে আমেরিকা যে বিষয়কে উন্নতির সোপান মনে করেছিল, তা বর্তমানে তাদের জন্য ধ্বংসের সোপান প্রমাণ হচ্ছে। টাইমসের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতি বছর আমেরিকায় ২৫ লাখ অবিবাহিত মেয়ে মা হয়।
আমেরিকায় দৈনিক ৪ হাজার গর্ভপাত করা হয়, তন্মর্ধে ৬৫% ভাগ মহিলাই অবিবাহিত। ১৯৭৩ সালে আমেরিকার সুপ্্রীমকোটের গর্ভপাতকে বে-আইনী ঘোষনার পর বার্ষিক ১৫ লাখ গর্ভপাত ঘটানো হয়ে থাকে। বিগত ২০ বছরে ৩০ কোটি শিশুকে বংশচ্যুত করা হয়েছে। প্রতি বিশ সেকেন্ডে ১ টি গর্ভপাত ঘটানো হচ্ছে। আমেরিকার প্রতি ৫ জনে একজন পাগল। আমেরিকান সাড়ে চার কোটি মানুষ মস্তিস্কের ব্যাধিতে আক্রান্ত । লেজকাটা ঘৃণিত ইউরোপ ও আমেরিকায় পরিবার প্রথা ভেঙ্গে জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে হাজার বছর এগিয়ে গিয়েও ধ্বংসোন্মুক্ত সভাতায় পরিণত হতে চলেছে। বিকৃত সভ্যতা ভেঙ্গে দিয়েছে মা-সন্তানের শ্রদ্ধার দেয়াল, পিতাকে কাছে না পাওয়ায় সন্তানের শর্য্যাসঙ্গী হচ্ছে মা। অসৎ পিতার যৌন লালসা পূরণে আপন কন্যা হচ্ছে অঙ্গশায়িনী। এ অনৈতিকতার ছোবলে ক্ষত বিক্ষত পশ্চিমা জগৎ। সেখানকার অসভ্য মানুষগুলো শান্তির জন্য হন্যে ঘুরছে। ৫০ বছর পূর্বে আমেরিকায় পারিবারিক বন্ধন ছিল, এখন তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়েছে।
মানবাধিকারহীন বৃহত্তম জেলখানার দেশ
দুনিয়ার দিকে দিকে গণতন্ত্রের ঠিকাদার হয়ে বসে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ঘেষা প্রচারমাধ্যমগুলোও মার্কিনি গণতন্ত্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, অথচ মার্কিন জেলগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যাবে যে সেখানে কি ব্যপক পরিমানে মানবাধিকারকে পদদলিত করা হয়। এ এমনই এক দেশ, যেখানে কারান্তরালে রয়েছেন প্রায় ২৫ লক্ষ সেই দেশেরই সহনাগরিক। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ১ শতাংশ। প্যারোল এবং প্রবিশন ধরলে সংখ্যাটা আরো বেশি। জনসংখ্যার শতকরা ৩.২ শতাংশ। অর্থাৎ এক্ষেত্রে বলা যায়, প্রতি ৩১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিকের মধ্যে অন্ততঃ একজন জেলে আছেন! পৃথিবীর বন্দী সংখ্যার ২৫ শতাংশই মার্কিনি বন্দী। ক্যালিফোর্ণিয়ার প্রিজন ফোকাসের মতে “মানব সমাজের ইতিহাসে আর কোন সমাজে এত বেশি সংখ্যক সহনাগরিককে বন্দী করে রাখা হয়নি”। ইন্টার ন্যাশানাল সেন্টার ফর প্রিজন স্টাডিজের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যা অনুপাতে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষ বন্দী আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। প্রতি লাখে ৭১৬ জন। এই অনুপাতে দ্বিতীয় স্থানে আছে রাশিয়া। প্রতি লাখে ১২১ জন (ভারতও অবশ্য পিছিয়ে নেই সারা বিশ্বে বন্দী সংখ্যার নিরিখে ভারতের স্থান পঞ্চম!)। কালো চামড়ার মানুষরা আমেরিকায় জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ, অথচ মোট বন্দীদের ৬০ শতাংশই হলো কালো চামড়ার মানুষ। ২০ থেকে ২৯ বছর বয়সী আফ্রো-আমেরিকান পুরুষদের প্রতি তিনজনে একজন, কোন না কোন ক্রিমিনাল জাস্টিস সুপারভিশনের আওতায় আছেন। ৩০ বছর বয়সী কৃষাঙ্গ পুরুষদের প্রতি ১০ জনে ১ জন জেলে আছেন। বন্দিদের অনুপাত দেখলেই তথাকথিত ‘সভ্য’দের বর্ণবিদ্বেষ চোখে পড়বে। পরিসংখ্যান বলছে ১ কোটি ৪০ লক্ষ শ্বেতাঙ্গ এবং ২৬ লক্ষ কৃষ্ণাঙ্গ মাদকাসক্ত, অর্থাৎ মাদকাসক্তের অনুপাতে শ্বেতাঙ্গরাই অনেক বেশি। প্রায় ৫ গুণ বেশী। অথচ মাদক সংক্রান্ত মামলায় শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় ১০গুন বেশি কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ জেলে বন্দী!
গ্লোবাল রিসার্চ সেন্টার জানাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক নতুন ধরণের মানব শোষন চালু হয়েছে। এখানে জেলগুলি তুলে দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি কর্পোরেট পুঁজির হাতে। এটাকে বলা হচ্ছে ‘জেল ইন্ডাস্ট্রি’। সরকার ন্যুনতম চুক্তির বিনিময়ে এগুলো তুলে দিচ্ছে বেসরকারি ধনকুবের মালিকদের হাতে। তারা সাধারণ বন্দীদের ন্যুনতম মজুরির বিনিময়ে এখানে সারাদিন ক্রিতদাসের মতো খাটায়। মুনাফাভিত্তিক এই জেলগুলোর তত্ত্বাবধান করে বেসরকারি তত্ত্বাবধায়করা। যারা কাজ করবেন না, তাদের বেঁচে থাকার ন্যুনতম সুবিধাটুকুও মিলবে না। প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ নামমাত্র বাধাধরা মজুরীর বিনিময়ে (ঘন্টায় ২৫ সেন্ট) এখানে কাজ করেন। যারা এ কাজে অরাজি, তাদের জন্য আগেই বলেছি, জুটবে না ন্যুনতম বেঁচে থাকার সুবিধা, থাকতে হবে সলিটারি সেলের অন্ধকারে রাতদিন বন্দী।
আত্মহত্যার ব্যাপকতা
সাপ্তাহিক টাইমস এর রির্পোটের শিরোনাম “সন্তানের আত্মহত্যা” এতে বলা হয়েছে,আমেরিকায় ১০-২০ বছর বয়সী যুবকদের আত্মহত্যার হার দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে। ১৯৫০ সালের তুলনায় এ সংখ্যা এখন তিন গুন বেড়েছে। ১৯৮৫ সালে লাখে ৬০ যুবক (তত সংখ্যক বড়রা) আত্মহত্যা করেছে। প্রতি বছর ১৩-৩০ বয়সী ৫ হাজার যুবক আত্মহত্যা করে। বিগত ১০ বছরে ইচ্ছাকৃত আত্মহত্যাকারীর সংখ্যা ৩৫% ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৬২ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত হত্যার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৮.৬ ভাগ।
যুক্তরাষ্ট্রে আগতদের মানবাধিকার লংঘন
প্রতি বছর সমগ্র বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর প্রতিবেদন প্রকাশকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রে কিভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে তার একটি বিবরণ ২০০৮ সালের আগস্টে নিউইয়র্ক টাইমস প্রকাশ করেছে। সুখের জন্য প্রিয় মাতৃভূমি ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে আগতদের সাথে কী নির্দয় আচরণ করা হচ্ছে লাগাতারভাবে, সে ব্যাপারে দীর্ঘ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি ২০০৮ সালের ৩ আগস্ট প্রকাশিত হয়েছে ‘ইমিগ্রেশন ফেসিং ডিপোর্টেশন বাই ইউএস হসপিটালস’ শিরোনামে। এ প্রতিবেদনে ফেডারেল প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগে কোনো কোনো হাসপাতাল মারাত্মকভাবে অসুস্থ ইমিগ্র্যান্টদের জোরপূর্বক স্বদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে যেখানে চিকিৎসার ন্যূনতম সুযোগ নেই বা চিকিৎসার মতো সঙ্গতিও নেই। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এ দেশে বসবাসরত যেকোনো মানব সন্তানের চিকিৎসা পাওয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। জরুরী চিকিৎসায় কোনো ধরনের কার্পণ্য করা যাবে না ইমিগ্রেশনের স্ট্যাটাসের অজুহাতে। ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা দেখেও না দেখার ভান করে রয়েছে এহেন অপকর্মে লিপ্তদের ব্যাপারে এ প্রসঙ্গও স্থান পেয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরিজোনার ফিনিক্সে অবস্থিত সেন্ট যোসেফ হাসপাতাল থেকে বছরে গড়ে ৯৬ জন অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। ফ্লোরিডার ফোর্টলডারডেলে অবস্থিত ব্রাউয়ার্ড জেনারেল মেডিক্যাল সেন্টার থেকে বার্ষিক গড়ে ছয় থেকে আটজন রোগীকে স্বদেশে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে ইমিগ্রেশনের স্ট্যাটাসের কারণে। শিকাগো হাসপাতাল থেকে গত বছর ১০ জনকে হন্ডুরাসে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। গত বছর ৩৬০ জন মেক্সিকানকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে তাদের দেশের কন্স্যুলেটের মধ্যস্থতায়। তারা কেউই স্বদেশে সুচিকিৎসা পাচ্ছে না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রতিবেদনের পর ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং মানবাধিকার নিয়ে কর্মরতরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। তারা বলেছে, অন্য দেশের মানবাধিকার নিয়ে যারা নানা সমালোচনা করছে, খবরদারি চালাচ্ছে, তাদের দেশের এ পরিস্থিতির দায় কার ওপর চাপাবে?