somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেহদান পর্ব -১

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মনের কিছু অপার্থিব কথা বলার ইচ্ছা জাগলো মনের ভিতর। এ গুলো কাউকে বলতে পারলে মনের কষ্টটা কিছু হয়তো বা কমতো।বলবো যে সে যদি আমার কষ্ট নাই বুঝতে পারে, তাহলে তাকে বলে ও লাভ কি। আর সে যদি আমর কষ্টের কথা গুলো শুনে দাঁত কেলিয়ে হাসে সেই ভয়তে ও বলি না। তাই বলছি বলার মতো কেউ নেই আমার। তাই কাগজ এর এই চর্তুর ভুজ ভুমি টুকুই যেন আমার সব চাইতে বড় বন্ধু ।

কিরে নয়ন এখন ও ঘুমাচ্ছিস দেখ সন্ধা হয়ে গেছে। ঘুম থেকে উঠে বসলাম। উঠে দেখি মিনু আমর পাশে বসা । ও এ রকম প্রায় বিকালে এসে জ্বালাতন করে। মাঝে মাঝে রাগ হয় প্রচন্ড। দেখ প্রতিদিন এই ফাইজলামী ভালো লাগে না। এই রকম টা ভাবতাম কিন্তু কখন ও বলতে পারিনি।হয়তো এটাই আমার ভালো লাগতো।
ও আমাদের পাশের বাসায় পড়তে আসে , ওদের স্কুলের এক টিচার এর কাছে । আর ও বাসায় যাওয়ার সময় এ রকমটা করে। হঠাৎ আমর রুমে রাখা ষ্টীল এর আলমারির আয়নার দিকে চোখ গেল। তার ভিতর আমি পরীর দুটি চোখ দেখতে পেলাম। গুরে আমার দিকে তাকিয়ে যে ভাবে আমাকে দোস্ত বলে সম্মদন করলো । যেন মেয়েটা আমাকে অনেক দিনের পরিচিত। প্রথমে ভেবে ছিলাম ও মনে হয় মিনু কে বলছে। পরে বুঝলাম ও আমাকেই বলছে। হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করলাম এক অন্য ভুবনে।
দেখি যে আমার পরনের লুঙ্গী টা নেই। আমি যে কাথা টা গাঁয়ে দিয়েছিলাম , তার মধ্য ঘুমের ঘোরে কখন যেন হারিয়ে গেছে। ওরা রোজ বিকালে আসে তাই আমার কাথা গাঁয়ে দিয়ে ঘুমাতে হয়। কারন আমি ঘুমালে আমার লুঙ্গী ঠিক থাকে না। যখন লুঙ্গীটা খুঁজে পড়লাম । মেয়ে টা খিল খিল করে হাঁসি দিল। মন চাই ছিল ওকে দুগালে দুটা চর দিতে। মিনু হাসলে ঠিক ই দিতাম। কিন্তু ও হাসেনি। এর পর হাত মুখ ধুয়ে আসলাম । মিনু বলল তোর যে বউ হবে না তার কপাল সব চাইতে খারাপ হবে । আমি কি উত্তর দিবো ভাবছিলাম । তার পর বললাম তোর চিন্তা নাই তোর বর হচ্ছি না। ও বলল তোকে তো মরে গেলে ও বিয়ে করবনা। বুঝলাম আমি খারাপ মানুষ । তাহলে এই খারাপ মানুষ টাকে রোজ বিকালে জ্বালাতে আসিস কেন। মিনু বুঝতে পারলো আমি রেগে গেছি । তাই মনে হয় বলল আমি কি তাই বলছি। আমি বলছি তুই বন্ধু হিসেবে ভালো, কিন্তু.........
আমি বললাম কিন্তু কি.........
এর পর মেয়ে টা হটাৎ বলল এই তোরা জগরা টা কি বাদ দিবি
মিনু কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে বলল , ও আমাদের বান্ধবী, আমার ক্লাসমেট। আমদের সাথে এই খানে হিসাব বিজ্ঞান ও আজ থেকে পড়া শুরু করেছে। মেয়ে টা বললো আমার নাম তুলি , আর বলেই আমার দিকে হাত বারিয়ে দিল। আমি খানিক টা ইতস্তত হয়ে নামটা বলে হাত বাড়ালাম । আমার হাত ওর হাতের সাথে স্পর্শ করতেই , আমর ভিতর দিয়ে যেন ১০০০০ ভোল্ট বিদুৎ চমকালো।বোজা গেল মেয়ে টা খানিক টা আধুনিক। মিনু বলো আমরা আজ যাইরে , সন্ধ্যা হয়ে গেল। যাওয়ার সময় মেয়ে টা আবার আমাকে বলল দোস্ত আসি। যেন আমাকে অনেক দিন যাবত চেনে। আমি বললাম ঠিক আছে। আবার এসো । ওরা চলে যাবার পর আমার ভিতর কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগলো।
মেয়েটা অতোটা ফর্সা নয়। ওর গাঁয়র রংটা শ্যামলা । কিন্তু ওর চোখের বর্ণনা আমি দিতে পারবনা, কারন যে ওর চোখের দিকে আমি যখন ই চেয়ছি হারিয়ে গেছি। জানিনা ওর ঐ চোখ কোন ব্লাক হোল কিনা। সেটা ও বলতে পারবনা আমি।
লম্বা পাঁচ ফুট ২” হবে। আজ ও যে পোশাক টা পরে আসছিল ও টা হলুদ। বেস লাগছিল ও কে , যেন কোন হলুদ পরী। এর পর বাহিরে গেলাম চা খেতে। চা খেয়ে টিভির সামনে বসলাম। মা টিভির সামনে দেখে আমাকে বল্লো । নয়ন পড়তে বস । টিভি পরে দেখবি। সারাদিন ই তো টিভি দেখিস। বই পড়তে বসলাম কিন্তু কিছুই যেন মনে থাকছে না আমার। বই পড়তে বসলাম কিন্তু কিছুই যেন মনে থাকছে না আমার। বাংলা, ইংলিশ, গণিত, হিসাব বিজ্ঞান, ধর্ম, কৃষি, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ , কখনো বা বাংলা সহ-পাঠ নিয়া পাতা উলটাচ্ছি কোন টাই যেন মন বসতে ছিল না। পড়া টরা কিছুই হলো না। শুধু বই এর পাতা ওলটানো ছাড়া। বাবা অফিস থেকে ফিরে, আমার রুমে প্রথম প্রবেশ করলো। পায়ের মুজো খুলতে খুলতে বললো , কি ব্যাপার শুধু বই বই এর পাতা উল্টাচ্ছিস কেন? আমি বললাম । কই বাবা ?
আমি তো আসছি থেকে দেখছি তুই শুধু বই পাল্টাচ্ছিস আর পাতা উল্টাচ্ছিস। তোর চেহারার দেখে বোঝা যাচ্ছে, তুই বই পরছিস না। অন্য কিছু চিন্তা করছিস। আমি বললাম কিভাবে বুঝলা বাবা। তুমি তো ৫মিনিট ও হয়নি, আমার রুমে আসলা ।
না তোর মা দর্জা খোলার সময় বলেছে। আমি বললাম, বাবা এটা কি একটা বিচার এর বিষয় হলো, তুমি অফিস থেকে আসার সাথে সাথে বিচার দিতে হবে। না আমি তোর কথা জিজ্ঞাস করছিলাম তাই বলল। তুই কি কোন মেয়ের প্রেমে পরলি নাকি।
আমি বললাম বাবা এই সব কথা বাদ দাও । আমার বাবা আমাকে খুব সহজে বুঝতে পারেন । আজ কাল কিছুই তার কাছ থেকে লুকাতে পারিনা। সবই যেন আমাকে দেখে বুঝতে পারেন। মাঝে মাঝে ভাবি বাবা কি থট রিডিং করতে পারে নাকি। কিন্তু দেখলাম তা সে পারে না । শুধু আমার ব্যপারে পারে। এটা মনে হয় প্রকৃতি প্রদত্ত টেলিপ্যাথিক ক্ষমতা । যা কিনা প্রতিটি বাবা মাকে দিয়ে থাকেন । বাবা বললেন তোর আসল সমেস্যা টা কি?
আমাকে বল তোর সব সমেস্যার সমাধান করে দিচ্ছি।
কই বাবা কিছুই না।
দেখ আমার কাছ থেকে লুকাবী না। আমি কিন্তু বুঝতে পারি তোর চেহারা দেখে।
আমার বাবা আমার বাবা ছিল না শুধু বন্ধু ও ছিল। তাই আমার আচরণ টা ও বাবার সাথে বন্ধুর মতো ছিল। কিন্তু তার পড় ও বাবা কে কথা টা বলতে কিছু টা সঙ্কোচ হচ্ছিল। তাই কথা গুড়িয়ে বললাম বাবা দাদুর ঐ কলোম টা হারিয়ে গেছে।
আমার দাদুকে আমি কখন ও দেখিনি, কিন্তু তার প্রতি আমার ভালো বাসার যেন কোন কমতি ছিল না। আমার বাবার দু’ বছর বয়সে দাদু মারা যান। আমার বাবা ও ঠিক মতো দাদু কে দেখতে পান নাই। তাকে না দেখতে পাওয়ার কারণে হয়তো আমার মাঝে এই ভালবাসার জন্ম।
আমার দাদী ও ২ বছর হলো মারা গেছে। আমার দাদী আমাকে এই কলোম টা দিয়ে ছিল। দাদা এই কলম টা নাকি কলকাতা থেকে এনে ছিলেন। আমার দাদী, দাদার নাম কখন ও মুখে নিতেন না।
তাই আমারা দাদীর সাথে দুষ্টামি করে, বার বার দাদুর নাম জানতে চাইতাম। আর দাদী জিব্বা কাটতেন দাঁত দিয়ে। কিন্তু কখন ও আমাদের সাথে রাগ হতেন না ।
বাবা আমকে জরিয়ে ধরলেন। বাবা হঠাৎ আবেগি হয়ে গেলেন।
তার চোখ দিয়ে পানি জড়ছিল। আমি ও আর চোখের জল আটকাতে পারিনি। বাবা বললেন আমি তো কখন ও বাবার আদর পাইনি। তাই
তোদের আমি কখন ও কষ্ট দেইনি। ছোট সময় তো বাবার আদর পাইনি, বুরো বয়সে তুই আমার বাবা হয়ে সেই আদর টুকু দিস।
আমি কিছুই বলতে পারলাম না...
মা এসে খাবার খেতে ডাকলো।
রাতে খাবার খেলাম।
ঘুমাবার জন্য বিছানায় শুলাম, ঐ চোখ দুটো আর বাবার কথা গুলো আমাকে গুমাতে দিচ্ছিল না। ঐ সব কথা ভাবতে ভাবতে..................


সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×