রিকশা চলছিল টুং টাং শব্দ তুলে।আগে অবশ্য বাবার সাথে ফিরত।কিন্তু ঝিলি বাবাকে বলেছে-বাবা তোমাকে আর কষ্ট করে আসতে হবেনা,অতুল তো আমাদের পাশের গলিতে থাকে,আমি ওর সংগেই আসতে পারব।বাবা অবশ্য কিছু বলেনি।
ফুচকাওলা দেখে ঝিলির জিভ জিভে যায়।অতুলকে বল্ল-চল ফুচকা খাই-
-দেরী হয়ে যাবে ঝিলি আন্টি বকবে-
ঝিলি ঠোট উল্টিয়ে বল্ল-বকবে না ছাই,একদিন দেরী করলে কিচ্ছু হয় না,একদিন বকা খেলে ওকিচ্ছু হয়না,তুই চলতো-
-আমি লাল টুলটায় বসব তুই নীল্টাতে বস-
-বেশি করে টক ঝাল দিবেন-ফুচকাওলাকে চেচিয়ে বল্ল ঝিলি।
অতুল বল্ল-তুইও পারিস ।বেশি ঝাল খেলে তো তোর চোখদিয়ে পানি পরে।তারপরও খাস।
-অন্যরকম মজা তুই বুজবিনা-
ঝিলি ওঅতুল অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে। এখনু ও মায়ের কোলঘেসে ঘুমায়।কিশোর উপন্যাসের চেয়ে ভুতের গল্প পড়তে বেশি ভালোলাগে।
রিকশা ছেড়ে দিয়ে ওরা বাকী পথ হেটে ফিরছিল।
গলির অন্ধকার কোনটা দেখিয়ে অতুল বল্ল-দেখনা ঝিলি পাগলিটা কাদছে একটা টাকার জন্য-মনে হয় অনেক ক্ষিধে পেয়েছে।তুই দাড়া আমি এক টাকা দিয়ে আসি-
ঝিলি বল্ল-কোথায় পাগলি?
-ওই তো ওই কোনে দাঁড়ানো -
ঝিলিও অতুলের সাথে গেল।দেখল এক অর্ধ নগ্ন মহিলা।যার কোমরে এক টুকরো কাপর ছারা সারা শরীর উদোম।সে এক টাকা ভিক্ষে চাচ্ছিল না।সে হাতজোড় করে বলছিল -=আমারে একশ টাকা দেন আমারে একশ টাকা দেন একটা শাড়ী কিনবো।ঝিলি অতুলের দিকে তাকিয়ে অস্পষ্ট স্বর্ব বলে-একশত টাকা-
ওতো একশত টাকা চাচ্ছে,
মনে পড়ল সকালে বাবার দেওয়া কক কেনার একশত টাকার কথা।
-এই নাও একশত টাকা শাড়ী কিনো-বলে পাগলির হাতে গুজে দেয়।
টাকাটা পাগলি কোথায় রাখবে দিশে পায় না।সারা শরীর হাতরে বেড়ায়।
-আচ্ছা তুমি জামা পড়বে আমার অনেক জামা আছে-
পাগলিটা মাথা নেড়ে বলে-হ হ পড়ব।
ঝিলি পাগলির উদোম পিঠে হাত রেখে ওদের বাড়ির সামনে নিয়ে আসে।
-তুমি এখানে দাঁড়াও আমি যাব আর আসব-
ঝিলি লিফট ভুলে সিড়ি ভেঙ্গে উঠে আসে।হাপাতে হাপাতে মা কে বলে-মা পুরোনো জামা কাপরগুলো দাও পাগলিটাকে দিব।
মা বলে-ওগুলো তো কাজের মেয়েটাকে দিয়ে দিয়েছি-
-আজ সকালে যেটা পরেছিলে ওটাই দাও-
-বারান্দায় ঝুলানো আছে নিয়ে নাও একটাই নিও-
ঝিলি চুপিসারে ফ্রকগুলোও ব্যাগে ঢুকায়।
দৌড়ে আসে ।বাড়ির নিচে পাগলিটাকে খুজে।পাগলিটাকে কোথাও দেখা যায়না ।এখানেই তো দাড় করিয়ে রেখেছিলাম।ঝিলির কান্না পায়।হঠৎ দেখে অন্ধকার এক কোনে স্তুপের মত দলামলা হয়ে বসে আছে পাগলিটা।ঝিলির চোখের তারা নাচে।ওর মায়ের জামাটা দিয়ে বলে -এটা পড়ে নাও তোমার ঠান্ডা লাগবে-
পাগলিটার চোখের তারা নাচে।একটা একটা করে গায়ে কাপর জড়ায়।ঝিলি নিজের হাতে ওড়নাটা পাগলির গায়ে জড়ায়।ব্যাগটা হাতে দিয়ে বলে -এগুলোও পড়ো কিন্তু।পাগলি উঠে দাড়ায়।আনন্দে ওর সারা শরীর নাচে।আন্ধকারে দুলতে দুলতে মিলিয়ে যায়।।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




