আমার পেট ভরা নাকি খালি প্যাঁচ আর প্যাঁচ। এটা পরিচিত অপরিচিত প্রায় সকলের মত। অম্লশূলে একবার পেট স্ক্যান করে ডাক্তারও দেখাল ঘটনা সত্য, সেখানে প্যাঁচের অন্ত নেই। যে আমার পেটে এত প্যাঁচ সেই আমি জিলাপির প্যাঁচ দিতে পারিনা। সমাজে মুখ দেখানো দুষ্কর। মরণপণ করে নেমে গেলাম। ইউটিউবে জিলাপি নিয়ে বাক্কাস কোর্সও করলাম। এরপরও প্যাঁচটা ঠিক হয়ে উঠে না। কবি বলেছেন শতবার প্রচেষ্টা নিতে। কবির কথা ভুল প্রমাণ করে দ্বিতীয়বারেই জয়ের দেখা পেলাম।
যাদের এটি বানাবার খেমতা নাই অথচ জ্বিভখানি আমার মত লিকলিক করে তাঁদের জন্য সহজ পাঠপ্রণালীঃ
উপরকণঃ
১। এক কাপ ময়দা
২। দুই কাপ চিনি
৩। সামান্য লবণ
৪। সামান্য ফুড কালার
৫। সামান্য বেকিং পাউডার
৬। পানি পরিমাণ মত
প্রক্রিয়াঃ
ময়দায় লবণ আর বেকিং পাউডার মিশিয়ে হালকা পানি দিয়ে লাগাও ঘুটনি। এখানে পানি মেশাতে হবে খুব সাবধানে। কম হলেও সর্বনাশ, বেশি হলে তো মরণ। ময়দার মিশ্রণ বেশি পাতলা বা বেশি ঘন করা যাবে না। এখন উপায়? উপায় নাই। দুই একবার করতে করতে এটা আয়ত্বে আসবে। মিশ্রণটি করে রেখে দিন।
এবার চিনির সিরা। একটা পাত্রে সব চিনি ও দেড় কাপ পানি (চিনি বেশি পানি কম) দিয়ে জ্বাল করতে হবে উচ্চতাপে। কিছুক্ষণের মধ্যে চিনির রস তৈরি হয়ে যাবে। এক চিমটি ফুড কালার মিশিয়ে নেড়ে নিন। আঙুল দিয়ে দেখতে হবে কতখানি রসালো হয়েছে। দুই আঙুলে রস নিয়ে আঙুলের মাঝে ইঞ্চিখানেক ফাঁক করলে এক তারের মত হলে বুঝতে হবে ঠিক আছে। এখন এই রস যদি চুলো থেকে নামিয়ে রাখেন তবে জমাট বেঁধে যাবে। চুলো খুব স্লো করে রেখে দিলে জমাট বাঁধবে না। স্পেসের সমস্যা হলে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে দিলে আর জমা ধরবে না।
এবারে একটি কেচাপের বোতল, বা ছোট প্লাস্টিকের কোকের বোতলের ককের মাথা ফুটো করে, অথবা ইন্ডিয়ান (জার্মানিতে) দোকান থেকে জিলাপি বানানোর পাইপিং ব্যাগ পাওয়া যায়- যেকোন একটাতে ময়দার মিশ্রণ ঢেলে, ফ্রাইপেনে একটু বেশি করে তেল দিয়ে, মিডিয়াম আঁচে জিলেপির প্যাঁচ দিতে হবে। উল্টে পাল্টে হালকা বাদামি হলেই নামিলে সাথে সাথে চিনির সিরায় ডুবিয়ে রাখবেন ১০/১৫ সেকেন্ড। এরপর গরম গরম খেয়ে ফেলবেন। কেউ পারলে ছবি দেখাবেন আমাদের। দেখি কে ভাল প্যাঁচ লাগাতে পারে।
***সমাপ্ত***
জাহিদ কবীর হিমন
শত্রুশহর আখেন থেকে
৭ অক্টোবর ২০১৮ , রোববার
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৬