somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের রেলগাড়ি দেখা

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রামমনি ও রামলোচন ছিলেন দুই ভাই। রামলোচনের কোন পুত্র না থাকায় স্ত্রী অলকাসুন্দরীর ইচ্ছায় তিনি ভাই রামমনির ২য় ছেলে দ্বারকানাথকে দত্তক নেন। এই দ্বারকানাথ হলেন রবীন্দ্রনাথের দাদাঠাকুর। সেকালে বাণিজ্য করে তিনি এতই বিত্ত বৈভবের মালিক হন যে তাঁকে ইউরোপীয় শাসক শ্রেণির সমগোত্রীয় ভাবা হত। হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে তিনি ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করে এর প্রসারে অর্থনিয়োগ করেন। তাঁর স্ত্রী অতি তেজস্বীনি দিগম্বরী দেবী ধর্মের এই অবমাননায় এরপর থেকে চিরটাকাল ভিন্ন বিছানায় শুয়েছেন। সে যাকগে।



১৮৪২ সালে প্রথম দ্বারকানাথ ঠাকুর যান ইউরোপ ভ্রমণে। ফিরে এসে বিরাট এক মিলনমেলার আয়োজন করলেন। আগ্রহী বাঙ্গালিরা তাঁকে ইউরোপ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করছেন। তিনিও হেসে হেসে উত্তর করছেন। একপর্যায়ে তিনি বললেন-
-"আসল কথাটাই তো এখনো বলি নাই। একটি বিস্ময় আর সবকিছুকে ছাড়াইয়া বহুদূর গিয়াছে। শ্বেতাঙ্গ জাতি এক অসাধ্য সাধন করিয়াছে। তাহারা এক মহাশক্তিশালী দৈত্যকে বন্দী করিয়া ভৃত্য করিয়াছে।
-মহাশয়, রহস্য না করিয়া একটু খুলিয়া বলিবেন কি?
- আমি ফারসি ও আরবী ভাষা শিক্ষা করিয়াছি। উহাতে কতকগুলান অত্যুৎকৃষ্ট কিস্যা রহিয়াছে। একটির নাম কলসীর দৈত্যের কিস্যা। কলসীর মধ্যে বন্দী এক দানবকে মুক্ত করিয়া এক ব্যক্তি তাহার সাহায্যে যাবতীয় কর্ম করাইয়া লইত। ইয়ুরোপে গিয়া দেখিলাম, তাহা অপেক্ষা অধিকতর শক্তিশালী এক দৈত্য এখন শ্বেতাঙ্গদের দাস। সেই দৈত্যের নাম বাষ্প। আপনারা কল্পনা করিতে পারেন কি, এক বিশাল লৌহ শকট, যাহাতে শতশত লোক বসিতে পারে, সেই শকট বাষ্পে টানিয়া লইতেছে? সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য বটে। বিলাতের কয়েক স্থলে এই শকট চলিতেছে, ইহার গমন পথকে রেইল রোড কহে। আমি জার্মানির কলোন নগরীতে, বিলাতের ম্যানচেষ্টারে স্বয়ং এই রেইলযোগে গমনাগমন করিয়াছি। সে যে কী বিস্ময়!"
কোটঃ সেই সময় (প্রথম খন্ড), সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
এই কলোন নগরী আসলে আজকের কোলন শহর, জার্মানে Köln আর ইংরেজিতে Cologne। আমার পেছনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চার্চগুলোর একটি, এটি দেখতে দৈনিক প্রায় বিশ হাজার মানুষ আসে। গেল সপ্তাহান্তে আমিও ঘুরে আসলাম, ১৮০ বছর আগে যেখানে ঘুরে গেছেন কবিগুরুর পিতামহ।

বার্লিন থেকে
জাহিদ কবীর হিমন
১লা ফেব্রুয়ারী ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৩:২৬
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

পঁচে যাওয়া বাংলাদেশ আর্মি

লিখেছেন রিয়াজ হান্নান, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:২৫


একটা দেশের আর্মিদের বলা হয় দেশ রক্ষা কবজ,গোটা দেশের অব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে বহিরাগত দুশমনদের আতংকের নাম। ছোটবেলা থেকে এই ধারণা নিয়ে কয়েকটা জেনারেশন বড় হয়ে উঠলেও সেই জেনারেশনের কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×