somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অপূর্ব আহমেদ জুয়েল
আমি অতি সাধারন একটা মানুষ …………পৃথীবির প্রতিটি মানুষের কিছু আশা-আকাঙ্কা থাকে, থাকে সীমাহিন স্বপ্ন। যেখানে সে তার জীবনকে সাজায় একিবারে নিজের মত করে। আমারো তেমন একান্ত কিছু স্বপ্ন আছে, যা আমাকে ভালো কিছু করার প্রেরনা যোগায়।

বিচার চাই না, একটি কথাই আমাদের দাঁড় করিয়েছে কঠিন বাস্তবতায়

২৮ শে মার্চ, ২০২২ রাত ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিচার চাই না। শুধু মেয়ের লাশ আমাকে পৌঁছে দিলেই হলো। কার শাস্তি চাইব? বিচার নাই, বিচার কার কাছে চাইব?'

ঢাকার শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত কলেজছাত্রী প্রীতির বাবার কথা এগুলো। গত ২৪ মার্চ রাতে দুর্বৃত্তের করা গুলির ভুল নিশানা হন প্রীতি। যার পিতার এমন বাক্য আমাদের এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। অবশ্য গুলির মূল নিশানা যাকে করা হয়েছিল সেও নিহত হয়েছেন। সে ব্যাপারে কথা না হয় নাই বললাম, অনেককিছুই বলতে লিখিত ও অলিখিত মানা বলে।

আজ যখন লিখছি তখন মহান স্বাধীনতা দিবস ‍উদযাপিত হচ্ছে। একটি স্বাধীন দেশের ৫০ বছর পার হওয়ার পর একজন বাবা যখন মেয়ের লাশের অপেক্ষায় মর্গের সামনে থেকে এমন কথা বলেন, 'বিচার নাই, কার কাছে চাইব', যা প্রথম আলো খবরের শিরোনাম করেছে। তখন স্বাধীনতার আনন্দ উদযাপনে শোকের ছায়া পড়ে। সবকিছু অর্থহীন হয়ে ওঠে।

আমার ছেলেও নিহত হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মী ফাগুন রেজা। সেও খুনের শিকার। তিন বছর হয়ে যাচ্ছে। আমরা জানি না, তাকে কেন খুন করা হলো। যেমন জানেন না গুলিতে নিহত প্রীতির বাবা। আমরা আসলে কিছুই জানি না। জানতে দেয়া হয় না। না জানাটা দোষের নয়, কিন্তু জানতে না দেয়াটা অপরাধ।

প্রীতি ছিলো ভুল নিশানার শিকার আগেই বলেছি। মূল নিশানা ছিলেন শাসক দলের নেতা টিপু। নিহত টিপুও শাসক দলের যুব সংগঠনের আরেক নেতা হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। অবশ্য তিনি সেই মামলা থেকে অব্যাহতিও পেয়েছিলেন। স্বাধীনতা দিবসে খবরের কাগজে আরেকটি খুনের খবর রয়েছে। যশোরে আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে খুন হয়েছে শাসক দলের এক কর্মী। খবর বলছে, নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে এই খুন। ঢাকার শাহজাহানপুরের ঘটনাও অনেকে এভাবেই ব্যাখ্যা করছেন। এটা শুধু শাসক দলের সমস্যা নয়, সব রাজনৈতিক দলেই এমনটা ঘটে, ঘটে এসেছে। কিন্তু এই ঘটনা তখনই নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়ায় যখন ভুল নিশানায় সাধারণ মানুষ খুন হন। রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা দলের প্রতিনিধি আর সাধারণ মানুষ দেশের প্রতিনিধি। অন্তত গণতন্ত্রের সংজ্ঞা তাই বলে। ভোটের ব্যাখ্যাতেও সে কথাই প্রতিফলিত হয়। সুতরাং রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যু রাজনৈতিক, দলীয় সমস্যা। কিন্তু সাধারণ মানুষের মৃত্যু দেশজ, দেশের সমস্যা। আর দেশ যখন সমস্যায় পড়ে তখন রাজনীতির মৃত্যু ঘটে। ভুল রাজনীতির কারণে রাষ্ট্রব্যবস্থাও ব্যর্থ হয়।


রাষ্ট্র গঠনের মূল কারণ নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। রাষ্ট্রের ধারণাটাই গড়ে উঠেছে নাগরিকের নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার নিমিত্তে। সেখানে যদি নাগরিকরাই অনিরাপদ হয়ে ওঠে, তাহলে রাষ্ট্রব্যবস্থার সফলতা নিয়ে কথা উঠবেই।


একটা ভুল ভেঙ্গে দিই। অনেকে সবকিছুর জন্য রাষ্ট্রকে দায়ী করেন। এমন রাষ্ট্র চাই না বলেন। এমন বলাটা ভুল। রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রব্যবস্থার বিশাল ফারাক রয়েছে। ফারাকটা এত বড় যে তাকে নজরআন্দাজ করা বোকামি, আর নয় অন্য কোনো স্বার্থ রয়েছে। রাষ্ট্র ব্যর্থ হওয়ার কোনো কারণ নেই, ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়। আর তা হয় সেই ব্যবস্থা অনুযায়ী যারা কর্মকাণ্ড চালান তাদের ব্যর্থতায়। সুতরাং রাষ্ট্র ব্যর্থ নয়, যারা চালান তারা ব্যর্থ। রাষ্ট্রকে দোষ দেওয়া, আবার বলছি বোকামি, না হয় অন্য কোনো ধান্ধা আছে।

রাষ্ট্রের বড় সফলতা হলো নাগরিকের জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়া। তার জন্য নিরাপত্তা প্রধান শর্ত। তারপর খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-চিকিৎসা। প্রধান শর্ত পালনে ব্যর্থ হলে প্রীতির মতো নিরাপরাধরা ভুল নিশানার শিকার হয়ে নিহত হন। মানুষ নিহত হলে, না থাকলে আর সব অর্থহীন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, শহরের পর শহর খালি, মানুষ নেই। দৃষ্টি জুড়ে শুধু কংক্রিটের জঞ্জাল, ধ্বংসস্তুপ। মানুষ ভালো না থাকলে, বেঁচে না থাকলে, এই যে সেতু, উড়াল সেতু, মেট্রো বা পাতাল রেল সব অর্থহীন, সব কংক্রিটের জঞ্জাল।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৪৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×