somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অপূর্ব আহমেদ জুয়েল
আমি অতি সাধারন একটা মানুষ …………পৃথীবির প্রতিটি মানুষের কিছু আশা-আকাঙ্কা থাকে, থাকে সীমাহিন স্বপ্ন। যেখানে সে তার জীবনকে সাজায় একিবারে নিজের মত করে। আমারো তেমন একান্ত কিছু স্বপ্ন আছে, যা আমাকে ভালো কিছু করার প্রেরনা যোগায়।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডঃ রাস্ট্রীয় বাহিনী ও সরকারের একটি আনহোলি নেক্সাস।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০৪ সালে বিএনপি জামাত সরকার কতৃক উদ্ভুত বিশৃঙখল পরিস্থিতি মোকাবেলায় র‍্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়েছিল।

সন্ত্রাসী, মাদককারবারী, ত্রাস সৃষ্টিকারীদেরকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার মাধ্যমে দ্রুত সময়ে ঝামেলা থেকে get rid of করার একটি কুখ্যাত কৌশল আবিষ্কার করেছিল এই কালো বাহিনীটি। কোনরকম বিচার, আইন কিংবা মানবাধিকারের তোয়াক্কা না করেই এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হতো। এর পরে ১/১১ এর সময়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপির দুর্নীতিবাজ বিভিন্ন নেতানেত্রীকে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল এ নিয়ে ডিজিএফআই কতৃক নির্যাতন ছিল তারই ধারাবাহিকতা। এর পরে আমরা দেখেছি আওয়ামীলীগ সরকার আসার পরে বিরোধী দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের গুম ও অস্ত্র উদ্ধার করতে যাওয়ার নাম করে ক্রসফায়ার।

সর্বশেষ যে ব্যাপারটা আন্তর্জাতিক মহলে সাড়া ফেলেছে সেটা হলো ২০১৮ সালের মাদক নির্মূলের নামে সন্দেহভাজন কারবারিদেরকে ক্রসফায়ার। টেকনাফের একরাম হত্যাকান্ডের সময়ে ফোনে তার কণ্যার “আব্বু তুমি কান্না করতেছ যে…” তো একেবারে পপুলার কালচারেও জায়গা করে নিয়েছে। এর পরেই আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট নড়েচড়ে বসে এবং আল্টিমেটলি র‍্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দেয়। নিষেধাজ্ঞা খাওয়ার পরে কিছুদিন ঘাপটি মেরে থাকলেও নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে যেসব মেকানিজম করা প্রয়োজন তার অংশ হিসেবে আবার তারা গুম, ক্রসফায়ার শুরু করেছে।

ক’দিন আগে বুয়েটছাত্র ফারদিনকে হত্যা করা হলো। এটা নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য ও সামঞ্জস্যপূর্ণ দুটি ন্যারেটিভ শোনা যাচ্ছে। একটা হচ্ছে ফারদিনকে র‍্যাব/সিক্রেট এজেন্সি নিজেরাই খুন করে মাদক কিনতে গেছে তারপরে ওদের সাথে বাকবিতন্ডায় খুন হয়েছে বলে বাজারে প্রচার করছে। আরেকটা ন্যারেটিভে বলা হচ্ছে যে ফারদিনকে আওয়ামীলীগ/র‍্যাব/সিক্রেট সারভিসের প্রেসক্রিপশন মত স্থানীয় আওয়ামীলীগ পাতি নেতা ও দাগী আসামী সিটি শাহিন খুন করেছে এবং পরে প্রমাণ গায়েব অথবা “দেখুন কালপ্রিটকে আমরা ছাড় দিলাম না, ওকে তাৎক্ষণিক মেরে শাস্তি দিয়ে দিলাম” করার জন্যে সিটি শাহিন কে র‍্যাব ক্রসফায়ারে দিয়েছে। দুটি ন্যারেটিভের যেটাই ঘটুক প্রতিটাতেই র‍্যাব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড লিপ্ত হয়েছে। এটার মোটিফ হচ্ছে সরকারের পাওয়ার মেকানিজম এবং পাবলিক সেন্টিমেন্ট কে ইঞ্জিনিয়ারিং করা।

নেত্রনিউজ কতৃক প্রচারিত আয়নাঘর এ উঠে এসেছে সিক্রেট সারভিসের বিরোধী দলের নেতাকর্মী কিংবা ভিন্ন মতাবলম্বীদেরকে নির্যাতন, গুম ও খুনের গোপন চেম্বারের কথা।
সরকারের সিক্রেট সারভিস/র‍্যাব কে দিয়ে আইনবহির্ভূতভাবে সিস্টেমের বাইরে গিয়ে রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার জন্যে উল্টাপাল্টা কাজ করায় বিনিময়ে ওরাও সরকারের কাছ থেকে কিছু বিষয়ে যা খুশি তা করার ইন্ডেমনিটি/সাত খুন মাফ টাইপের সুবিধা পায়। এই আনহোলি নেক্সাস হচ্ছে বর্তমান এস্টাবলিশমেন্টের ক্ষমতার মূল।

এই পরিস্থিতিতে একটি গ্রাসরুট মুভমেন্টের মাধ্যমে স্টেট মেশিনারির আগা টু গোড়া অবধি একটা রিপল/নাড়াচাড়া না দিলে অথবা আন্তর্জাতিক মহল থেকে শক্তভাবে হস্তক্ষেপ না করলে পরিবর্তন সম্ভব নয়।
পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত বাংলাদেশকে আরেকটু জুম ইন করে সিরিয়াসলি ওয়াচ করা এবং প্রয়োজনে আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বর্তমান এস্টাবলিশমেন্টের মুভ করার পজিশনগুলোকে চোকিং করা। দেখা যায় যে এস্টাবলিশমেন্টের এই আনহোলি নেক্সাসে যারা নেতৃস্থানীয় অবস্থানে কাজ করে তারা এই সময়ের মধ্যেই অবৈধভাবে টাকা কামিয়ে অন্য সেইফ কোন পশ্চিমা দেশে সম্পদ বানিয়ে রাখে। যাতে রি অর্ডারিং হলে নতুন এস্টাবলিশমেন্ট এসে ওদের কচুকাটা করলে দ্রুত সময়ে দেশ ছাড়তে পারে।

পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো থেকে সম্পদের ফ্লো গুলোতে আরো ওয়াচডগ বসানো এবং এই তথ্যগুলো পাবলিক করে দেওয়া। বেশিরভাগ সময়েই দেখে যায় বাংলাদেশ টাইপের দেশগুলো থেকে একটা নির্দিষ্ট অংকের বেশি যে টাকা আসে তার প্রায় প্রতিটাই ব্লাড মানি। এগুলো এসব উদারপন্থী সম্পদশালী দেশগুলোর না হলেও চলবে। সম্প্রতি কানাডার বেগমপাড়াতে অবৈধভাবে পাচারকৃত সম্পদের বিরুদ্ধে সেদেশের সরকারের স্ক্রুটিনি দাবি করে কিছু সুশীল সচেতনমহল আন্দোলন/কাজ করে যাচ্ছে। এটা ভাল উদ্যোগ। স্বাগত জানাই।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৮
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×