somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্র আছে, ক্ষমতা আছে—কিন্তু জনগণ নেই

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইকবাল জিল্লুল মজিদ
তারিখ: ১৭.১২.২৫
বাংলাদেশ স্বাধীন হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে। স্বাধীনতার মূল শক্তি ছিল জনগণ—রক্ত, ত্যাগ আর প্রত্যাশা। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকেই এক অদ্ভুত প্রশ্ন মাথা তোলে:
এই রাষ্ট্র কি জনগণের জন্য, না ক্ষমতার জন্য?
স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা ভাবতে শুরু করে—বহুদলীয় রাজনীতি বাদ দিয়ে একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। জন্ম নেয় বাকশাল। বলা হলো—এটাই মুক্তির পথ। কিন্তু বাস্তবে জনগণকে বাদ দিয়ে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার এই ব্যবস্থাই দ্রুত বিলুপ্ত হয়। তবু বাকশালের দর্শন আর মানসিকতা কখনোই পুরোপুরি মাথা থেকে যায়নি।
এরপর আসেন খোন্দকার মোশতাক আহমদ—ঘোষণা দেন “সবুজ বিপ্লব”-এর। কিন্তু সেই বিপ্লব মাঠে নামার আগেই ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। খালেদ মোশাররফ, তারপর জিয়াউর রহমান। জিয়া রাজনীতিতে নতুন পরিচয় দেন—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। জনগণ আশা করে, এবার হয়তো গণতন্ত্রের পথে দেশ এগোবে।
কিন্তু ইতিহাস থামে না। আসেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ—ঘোষণা করেন ১৯ দফা, গঠন করেন জাতীয় পার্টি। আবারও বলা হয়—উন্নয়ন, শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা। কিন্তু জনগণ থাকে দর্শক, সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতা।
এরপর দীর্ঘ আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, পতন। আসে কেয়ারটেকার সরকার। জনগণ আবার আশাবাদী হয়—এবার হয়তো ভোটের মর্যাদা ফিরবে। কিন্তু রাজনৈতিক সরকারগুলো ফিরে এসে দেখায় এক ভয়ংকর চিত্র—
হরতাল, আন্দোলন, সংসদ বর্জন—সব চলতে থাকে, কিন্তু বেতন-ভাতা, গাড়ি, সুযোগ-সুবিধা ঠিকই নেওয়া হয়।
এরপর আবার সামরিক প্রভাব, আবার তথাকথিত নির্বাচন।
২০১৪, ২০১৮, ২০২৪—ভোটবিহীন বা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন।
ক্ষমতা আছে, সরকার আছে, সংসদ আছে—
কিন্তু জনগণের অংশগ্রহণ নেই।
সবশেষে আসে ছাত্র আন্দোলন। ইতিহাস বলে, যখন ছাত্ররা রাস্তায় নামে, তখন রাষ্ট্র কিছু হলেও ভাবতে থাকে । কারণ ছাত্ররা ক্ষমতা চায় না, তারা প্রশ্ন তোলে। আর প্রশ্নই ক্ষমতার সবচেয়ে বড় ভয়।
তাহলে প্রশ্ন একটাই—
এই দীর্ঘ যাত্রায় জনগণ কোথায়?
উত্তরটা কঠিন, কিন্তু সত্য:
জনগণকে শুধু দরকার হয় স্লোগানে, ভোটের পোস্টারে, আন্দোলনের ঢালে।
রাষ্ট্র চালাতে তাদের প্রয়োজন হয় না—
চালাতে চায় দল, গোষ্ঠী, পরিবার আর ক্ষমতার বৃত্ত।
এই দেশে সরকার বদলায়, দল বদলায়, শ্লোগান বদলায়—
কিন্তু একটি জিনিস বদলায় না:
জনগণ সবসময় বাইরে।
যতদিন না রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দুতে জনগণ ফিরে আসে,
ততদিন এই দেশ চলবে—
কিন্তু এগোবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×