somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিদ্যালয় কড়চা - ০১

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিনজন ঘুরতে বেরিয়েছি ক্যাম্পাস । না, আবার ভাববেন না ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা তো ঘুরবেই, এ আবার জানানোর কি আছে ? না, মানে, আমাদের ঘুরা মানে শুধুই ঘুরা নয় । ঘুরাঘুরির মাঝেই চলতে থাকে অফুরন্ত হাসি ঠাট্টা তামাশা, কৌতুক, জ্ঞান-গর্ভ কথাবার্তা, নারী দেখা, আর পরিচিত কাউকে হঠাৎ অপ্রুস্তুত অবস্থায় ফেলার চেষ্ঠা ইত্যাদি ইত্যাদি করা । আমরা ঠিক গৌধূলির সময়টাতে বাইরে বের হওয়ার চেষ্ঠা করি । মানে হল বিকেল আর সন্ধ্যার ঠিক মাঝামাঝি সময়টাতে । আর ঘুরাঘুরি চলে সন্ধ্যার সময় থেকে একটু বেশি সময় । আমরা তিনজন বলতে আমরা দুই বন্ধু আর আমাদের খুবই ক্লোজ একজন বড় ভাই । কি করবো ভাই, প্রেমের ডিউটি করতে হয়না তো তাই আমরা এখনও কর্মহীন রয়েছি, তাই এমন ঘুরাঘুরিতে কারও কোন সমস্যা নেই । আসলে কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা বলবো বলেই আজ এই স্ট্যাটাস ।

তো যথারীতি আমরা ঘুরতে বের হলাম কিন্তু আজ বেশ দেরি হয়ে গেছে । আজ বের হলাম সন্ধ্যারও পরে । আমাদের ক্যাম্পাসে আবার গরমকালের দিকে মেয়েদের হল (বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের এই একটিই হল । এটি বন্ধ হলেই ক্যাম্পাস হয়ে যায় একেবারেই জনশূন্য) বন্ধ হয় রাত ৮ ৮:৩০ এর দিকে আর শীতকালের দিকে সেই হল বন্ধ হয় রাত ৮:০০ এর দিকে । এখন অবশ্য গরমকালই বলা চলে তাই হল বন্ধ হয় রাত ৮:৩০ এর দিকে । আমরা হাঁটতে হাঁটতে ক্যাম্পাসের কোনার দিকে চায়ের দোকানে গিয়ে বসলাম । আজকে আবার বড় ভাইয়ের মনটা খারাপ । পারিবারিক সমস্যা । আমরা বিস্তারিত জিজ্ঞেস করিনি । আজকে বড় ভাইকে সান্ত্বনা দিতে দিতেই সময় কেটে যাচ্ছে তাই হাসি ঠাট্টা তামাশা সব কিছু আপাতত স্থগিত । চায়ের এই দোকানটিও সবকিছু গুছাচ্ছে মানে আরেকটু পর বন্ধ হয়ে যাবে । মেয়েদের হল বন্ধ হতে আর মাত্র বিশ মিনিটের মত । কিন্তু মনে হচ্ছে ক্যাম্পাস ইতিমধ্যেই জনশূন্য হয়ে গেছে । আমরা গল্প করছিলাম, এর মধ্যেই হঠাৎ খেয়াল করলাম একটি মেয়ে আর একটি ছেলে আমাদের পাশ দিয়ে চায়ের দোকানটির পিছন দিয়ে অন্ধকারে আসতে আসতে হেঁটে দূরের দিকে যাচ্ছে । মেয়েটিকে চিনলাম । জুনিয়র একটি মেয়ে, অন্য আরেকটি ডিপার্টমেন্টে পড়ে । কিন্তু ছেলেটি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের না । কেমন জানি খটকা লাগলো ।

ওরা যাবার পাঁচ মিনিট পর বড় ভাই প্রস্তাব দিল তাদের পিছন পিছন যাওয়ার জন্য । আমার কেন জানি একদম ইচ্ছে হচ্ছিল না কিন্তু দেখলাম আমার বন্ধুটিও বেশ আগ্রহী । কি আর করার । আমরা তিনজন ওদের পথ অনুসরণ করে চলতে লাগলাম । প্রায় একমিনিট হাঁটার পর একটু দূর থেকেই ওদেরকে দেখতে পেলাম । একসাথে বসে আছে, খুবই ক্লোজভাবে । এবার বড় ভাইয়ের মাথায় কেন জানি একটি দুষ্টু বুদ্ধি আসলো । তিনি প্রস্তাব করলেন চল ওদের ডিসক্লোজ করি । এবার আমি পরিস্কার ভাবেই এতে অস্বীকৃতি জানালাম আর ফিরে যেতে চাইলাম । কিন্তু আমরা বন্ধুটি এবারও রাজী । তারা আমাকে ছাড়াই সেখানে যেতে চাইলো দুইজনে । এরপর আমাকে রেখেই তারা দুইজনে সেখানে গেল । আর আমি ফিরে আসলাম ।

পরে বন্ধুটির কাছ থেকে শুনলাম সেখানে গিয়ে তারা ঐ কাপল দুইজনকে অত্যন্ত আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায় । তাদের দুইজন সেখানে গিয়ে ছেলেটিকে অনেক মারধোর করেছে । টাকা-পয়সা, মোবাইল সবকিছুই নিয়ে নিয়েছে । প্রথমে দিতে চায়নি কিন্তু বড় ভাইটি যখন মেয়েটিকে রেপ করার ভয় দেখালো তখন তারা আর না করেনি । আসলে মেয়েটি অন্ধকারে এদের দুইজনের কাউকেই চিনতে পারেনি ।

হায়, কপাল, এ আমি এতদিন কাদের সাথে মিশতাম ? আর আমি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে আছি ? শত শত ধিক্কার, সেই মেয়েটিকে, আমার বন্ধুটিকে আর বড় ভাইকে । আজ থেকে আমি থাকবো আমারই মত, ইনশাল্লাহ ।

এখানে আমি মেয়েটিকে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, তোমাদের মানসম্মান তোমাদেরকেই বজায় রাখতে হবে আর বড় ভাই ও বন্ধুটিকে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, আমি কখনো এমনটা ভাবতেই পারিনি । সরি, আমি হয়তো আপনাদের মত হতে পারিনি ।

(বিঃদ্রঃ ঘটনাটি বাংলাদেশের কোন একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে । একজনের জীবনের সত্য একটি ঘটনা । তার মুখ থেকেই শোনা । )
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×