somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীল সায়রের অতল জলে (ছবি ব্লগ)

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গায়ক সুবীর সেন নামটি হয়তো আপনাদের অনেকের কাছেই পরিচিত। এক সময়ের আধুনিক বাংলা গানের জনপ্রিয় এই গায়ক তাঁর বিখ্যাত একটি গানের বানীতে শ্রোতাদের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেনঃ-

তুমি বলেছিলে কোন মনের মুক্তো যায়না তো কভু কেনা ।
ওগো মন পেতে হলে মনের মুল্য চাই ।
সুনীল সাগরে পাঠালে আমাকে ঝিনুক কুড়াতে তাই ….
তুমি বলেছিলে ….
সারাদিন ধরে ঝিনুক কুঁড়িয়ে শেষে ,
অনেক আশায় দাঁড়ালেম কাছে এসে
ঝিনুকের কথা ভুলেছো তখন শুধালে আমারে শুধু ,
“সাগর কেমন সুন্দর বলো তাই” ?

তুমি বলেছিলে

সেই গানের বানীতে করা প্রশ্নের উত্তর যদি দিতেই হয় তবে বলতে হয় সাগরের সেই অপরূপ সৌন্দর্য্যের বর্ননা যত কাব্যিক ভাবেই তুলে ধরি না কেন, তাতে হয়তো তার আসল রূপের ছিটেফোটা টুকুই ফুটে উঠবে। আর সেই নীল সায়রের অতল তলে যে জগৎ লুকিয়ে আছে এক অলৌকিক, অপার্থিব সৌন্দর্য্য নিয়ে বাস্তবে তা অবলোকন করার সৌভাগ্য খুব কম মানুষেরই হয়েছে । যদিও আধুনিক প্রযুক্তির কল্যানে এই পৃথিবীর কোন রহস্যই আর মানুষের দৃষ্টির বাইরে নেই। অজানা নেই অতল সাগরের রূপও । তারপর ও কথা থেকে যায় ।


অপুর্ব সুন্দর এই মাঝের ঝাঁকের মাঝে কোন সে জন ?


মাথার উপর দিয়ে ভেসে বেড়ানো বিশাল হাঙ্গর যার সুতীক্ষ দাত আপনাকে নিমেষে ছিড়েখুড়ে একাকার করে ফেলতে পারে ।


অথবা আট শুড় ওয়ালা অক্টোপাস যে কিনা ক্ষনে ক্ষনে তার বিশাল দেহের আকৃতি আর রঙকে বদলে ফেলছে।


পানির মাঝে এধার থেকে ওধারে ছুটে চলা স্টিং রে

স্টিং রে গুলো তার চাবুকের মত লম্বা লেজ নিয়ে বিদ্যুৎ গতিতে আপনার বিস্মিত চোখের সামনে এসে আবার ছুটে যায় অদুরে সেই অন্ধকারের দিকে তখন সৃষ্টির সেই বিস্ময়কর রূপ দেখে নির্বাক হতে হয় , চিৎকার করে উঠতে হয় । অদ্ভুত এক ভালোলাগায় ভরে যায় ক্ষুদে ক্ষুদে দর্শকদের মত আমাদেরও মন ।


সমুদ্র দেবতার করতলে মাছের মেলা


সি লাইফ অথরিটি


মেঝেতে সংস্থার নাম দেয়া দিক চিনহ
সাগর তলের সেই রহস্যময় জগতকে খুব কাছ থেকে জানার জন্য মানুষের মনের যে আকুতি তা উপলব্ধি করতে পেরেই আন্তর্জাতিক সংস্থা সী লাইফ সেই বিস্ময়কর জগতকে পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষের চোখের সামনে তুলে ধরেছে । এই অনেক দেশের মাঝে রয়েছে থাইল্যন্ড।সময় আর সুযোগ থাকায় সী লাইফ সৃষ্ট সমুদ্র তলদেশের সেই অসাধারন রূপ দেখার জন্য একদিন হাজির হোলাম ব্যংককের বিখ্যাত এলাকা সিয়ামে।


বিখ্যাত শপিং মল সিয়াম প্যরাগন

বিদেশী সব ট্যুরিষ্টদের স্বপ্ন বিখ্যাত শপিং মল সিয়াম প্যরাগনের নীচেই ১০ হাজার স্কয়ার মিটার জায়গা জুড়ে দুই স্তরে নির্মিত এই সামুদ্রিক এক্যুরিয়ামটি দক্ষিন পুর্ব এশিয়ার মাঝে সবচেয়ে বড়। অত্যন্ত দৃষ্টি নন্দনভাবে তৈরী সেই কৃত্রিম সাগরতলে ৫,০০০,০০০ লিটার লবনাক্ত পানির মাঝে ঘুরে বেড়ানো ৩০ হাজারেরও বেশি বিচিত্ররূপধারী সব সামুদ্রিক প্রজাতি আপনাকে সাদর আমন্ত্রন জানাবে তাদের বিস্ময়কর জগতটি দেখার জন্য ।


দুটি স্তরে বানানো সমুদ্র তল


অচেনা মাছেরা সাতার কেটে যায়

ছবির মত সাজানো সেই নীলাভ সমুদ্রতলে আমরা যখন গানের মত ডুবে ডুবে মুক্তো খুজতে নেমেছি তখন স্থানীয় সময় সকাল ১১টা। অল্প আলো আধারির মাঝে পথ চলতে চলতে মুক্তো খুজে না পেলেও কৃত্রিম সেই সাগর তলের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ আমি । আশাকরি আপনিও মুগ্ধ হবেন বৈকি ।


প্রবালের স্তরে লুকিয়ে থাকা জলজ প্রানী


লাল আলোয় সামুদ্রিক প্রানী জেলী ফিস


এবার সবুজ আলোয় একটিবার দেখুন কি সুন্দর জেলী ফিস


ছোট বড় সব দর্শকের কাছেই আকর্ষনীয় এ জগত


বহু আগে ডুবে যাওয়া কোন ভাঙ্গা নৌকার পাশ ঘেষে রাজকীয় চালে ভেসে বেড়ানো একাকী হাঙ্গর


সি হর্সের মত এমন প্রানীদের রক্ষাকর্তা সী লাইফ সংগঠন


প্রবাল ঘিরে থাকা সি হর্স


সাগর তলে লাল নীল মাছ সাতার কেটে চলে


প্রবাল আকড়ে আছে কোন এক সামুদ্রিক প্রানী


ভয়ংকর হাঙ্গরের চলাফেরা


স্কুলের বাচ্চারা টিচারদের সাথে


এও এক অজানা রঙ্গীন সামুদ্রিক মাছের ঝাঁক


লাল প্রবালের ঝাড়ে বাতাসে ঝড় উঠে কি ?


ক্ষিধে লেগে গেছে ? কোন চিন্তা নাই । এখান থেকে খেয়ে দেয়ে ঘুরতে পারবেন রাত নটা পর্যন্ত ।


আম্মু ভয় পাই


বাঁদিকে কার মুর্তি বাশী বাজিয়ে সমুদ্রের দেবতা কি দানোকে ডেকে চলেছে ?


সামুদ্রিক ঘাসের ফাকে পাতার মত দেখতে হলুদ সবুজ মাছের আনাগোনা


এম্পায়ারার পেঙ্গুইন এর সাথে ক্ষুদে দর্শক


মুক্তো খুজে বেড়াচ্ছে কি ?


আহা আমিতো কেবল ডুবুরীর মত অতলেই ঘুরে মরেছি,
ঝিনুক খুজতে খুজতে
সাগর দেখার সময় তো পাই নাই ...তুমি বলেছিলে... "সাগর কেমন সুন্দর বলো তাই".....



নীল সায়রের অদ্ভুত এই মাছগুলো ও দারুন সুন্দর


মাথার উপর ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে হাঙ্গর


রূপসায়রে ডুব দিয়েছে অরূপরতন আশা করে , ডুবুরীর সাথে দুই দর্শক


বাব্বাহ এত্ত বড় মাছ



সেই সমুদ্রের দেবতা নেপচুন হাত তুলে কিছু বলছে কি ?


সামুদ্রিক লাল কাকড়া ।


বেরিয়ে আসার আগে এখানে এই দোকান থেকে কিনে নিতে পারেন সামুদ্রিক সব প্রজাতি নিয়ে তৈরী স্টাফড টয় ।

ছবি আমাদের ক্যমেরায় তোলা
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৫৬
৮৯টি মন্তব্য ৮৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×