স্বর্নালী মন্দিরের কিছুটা সামনে নীল রঙের অপুর্ব এই স্থাপনাটি যেখানে শ্বেত পদ্মের ছাতা মাথায় বোধিস্বত্বার শ্বেতপাথরের ধ্যানরত মুর্তি
২০১৭ তে চিয়াং রাই ভ্রমনের অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছিলাম। এবছর অর্থাৎ ২০১৮ এর ফেব্রুয়ারীতে আবার চিয়াং রাই থেকে চিয়াং মাই ঘুরতে গিয়ে নতুন নতুন যা কিছু দেখলাম তা এতই ব্যতিক্রমী ও সৌন্দর্য্যময় যা আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারলাম না। হোটেলের পাশেই এক ট্যুর কোম্পানীর সাথে সারাদিনের চুক্তিমত ঘুরতে বেরিয়েছি। গাইড কাম ড্রাইভার নাম ডুসিট সে তাঁর নতুন গাড়ি নিয়ে সকাল আটটায় আমাদের হোটেল থেকে তুলে নিল। আমরা মাত্র দুজনই ছিলাম সেদিনের ঘুরঘুর প্রোগ্রামে। তাই নিজেদের পছন্দমত জায়গা ও সময় নিয়ে ঘুরতে পেরেছিলাম।
গত বছরের দেখে আসা ওয়াট রং খুন বা শ্বেত মন্দির
হাসিখুশী গাইড ডুসিট প্রথমেই নিয়ে গেল নীল স্বর্নালী রঙের কারুকাজ করা অপুর্ব সুন্দর নকঁশায় নির্মিত এক বৌদ্ধ মন্দিরে। আগের বার দেখেছিলাম ধবধবে সাদা এক অপরূপ কারুকাজময় মন্দির নাম তার ওয়াট রঙ খুন স্বর্গ থেকে নেমে আসা এক শ্বেত শুভ্র মন্দির
আর এবার ট্যুর কোম্পানীর ব্রশিওর থেকে জেনেছি এই নীল মন্দির এর কথা। দুটি মন্দিরেরই নির্মান কাজ এখনো চলছে আর তা নির্মিত হচ্ছে আধুনিক শিল্পীদের ভাবনা থেকে । কিন্ত তাতে আছে প্রাচীনত্বের পরশ বোলানো যা দেখতে ভালোলাগে। তাছাড়া বৌদ্ধ মন্দির বা মঠ সাধারনত নির্মিত হয়ে থাকে স্বর্নালী ও লাল রঙ্গে। কিন্ত এদুটো দেখলাম পুরোপুরি ব্যতিক্রম।
মন্দিরে প্রবেশ পথের দুধারে নীল রঙের পাথরে নির্মিত ভাস্কর্য্য
বুদ্ধের মুর্তির পাদদেশটি অপরূপা নকঁশায় খচিত
সেই একই স্থানে বিভিন্ন কারুকাজ
ভেতরে পিলারগুলোর গায়ে খোদাই করা আছে এমন মুর্তি আর ফুলের ভাস্কর্য্য
মন্দিরের ভেতরে শ্বেত পাথরের প্রমান সাইজ বুদ্ধের মুর্তি যা বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের প্রধান পুজনীয় দেবতা
মন্দিরের পেছন দিকে যাবার রাস্তা
পেছনে মুল মন্দির থেকে হাত তিনেক দুরত্বে রয়েছে নীল রঙ্গা একটি স্তুপা
নীল মন্দির থেকে বেড়িয়ে এবার আরেকটি গন্তব্যে যাবার সময় দেখি পথের পাশে বিভিন্ন স্থানীয় ফলের দোকান। আমাদের চালককে এখানে থামাতে বললাম। তাজা টসটসে এক কেজি স্ট্রবেরী কিনলাম মাত্র ৫০ বাথে, ব্যাংককে যার দাম কমপক্ষে ৫০০ বাথের উপরে। সাথে স্ট্রবেরীর মতই রঙের সুন্দরী বিক্রেতার মিস্টি হাসি ও স্বাদ পরীক্ষার জন্য ফল আর ছোট এক গ্লাস জুস ফ্রি ।
স্ট্রবেরী হাতে সেই বিক্রেতা
চএরপরের গন্তব্য ছিল বাঁদর আর মাছের গুহা। রাস্তার বাদিকে সামান্য পথ পেরিয়েই যে প্রাঙ্গনে হাজির হোলাম তাতে আছে বৌদ্ধ মন্দির আর তার পেছনেই চলে যাওয়া উত্তুরে পাহাড়ের সার । মন্দিরে ঢুকে দেখি দানের পাওয়া টাকাগুলো সুন্দর করে ঝুলিয়ে রেখেছে। এক নজর চোখ বুলিয়ে বাইরে আসলাম বানরের গুহায় যাবো বলে। বানর শুনে আমার সহ পর্যটক তো যাবেই না কারন তার অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে তবে আমারও কিছু কিছু আছে বৈকি ।
মাংকি কেভে ঢোকার প্রাঙ্গনেই বৌদ্ধ মন্দির
যাই হোক গাইড জানালো বানরগুলোকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে সুতরাং আমরা নিশ্চিন্তে যেতে পারি। বেশ অনেকগুলো সিড়ি বেয়ে উঠে গুহার প্রবেশ মুখেই এক মুর্তি তাদের ভাষায় স্পিরিট। কিসের স্পিরিট বুঝলাম না । তারপরেই বুদ্ধের এক শায়িত মুর্তি যা নির্মানে রয়েছে কাঁচা হাতের ছাপ। তাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে দেখলাম উপবিষ্ট আরেক মুর্তি, গাইড জানালো উনিও লর্ড বুদ্ধ! তাকেও চেনার উপায় নেই।
গুহার মুখেই শায়িত বুদ্ধের মুর্তি
বের হয়ে যখন বানরশুন্য প্রাঙ্গন পেরিয়ে গেটের দিকে যাচ্ছে গাইড অবাক কি ব্যাপার মাছের গুহা দেখবে না ! আমরা ইশারা করলাম ঐদিকে বানরের হাট বসেছে । পর্যটকরা গেটের পাশেই রাখা লাঠির স্তুপ থেকে লাঠি নিয়ে সেদিকে যাচ্ছে তাদের ভয় দেখানোর জন্য। এত হ্যাপা কে পোহায় ! সেখান থেকে বেরিয়ে গেলাম বিখ্যাত একটি মিউজিয়াম দেখতে যার প্রতিষ্ঠাতা তাদের জাতীয় শিল্পী । তা নিয়ে আলাদা ভাবে লিখবো নাহয়।
চিয়াং রাই এর বিখ্যাত শিল্পীThawan Duchanee ব্যক্তিগত মিউজিয়াম যা এখন দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত
দুপুরে খাবার পালা সাংগ করে আমাদের গন্তব্য বার্মা থাইল্যান্ড বর্ডারের গা ঘেষে এক পাহাড় চুড়ো। এর নাম স্করপিওন পয়েন্ট। অনেকগুলো মন্দিরের সমন্বয়ে তৈরী সেই চুড়োর এক পাশে রয়েছে বিশালাকৃতির কাঁকড়া বিছে যা আবার আমার সহ পর্যটকের রাশি চিনহ ।
কালো পাথরে তৈরী বিশাল কাঁকড়া বিছের ভাস্কর্য্য
স্করপিওন মন্দির প্রাঙ্গন
পাশ থেকে দেখা যাচ্ছে মায়ানমারের ঘরবাড়ি, যাই হোক সেখানে ঘুরে ফিরে ছবি তুলে আসলাম পাথরের দোকানে । সহ পর্যটক গতবার আশ মিটিয়ে কিনতে পারেনি তার সখের ক্ষুদে হাতি । এবার সময় লাগিয়ে কিনে ফেল্লো প্রায় গোটা আটেক। আর আমি কিনলাম পাথরের একটি মালা।
এখান থেকেও কেনা হয়েছে কিছু জেড, লাপিস লাজুলি আর কি কি পাথরের হাতী
সেখান থেকে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল গিয়ে মেকং নদী পারি দিয়ে লাওস এর ডনসাও হয়ে ফিরে আসলাম চীন থেকে থাইল্যান্ডের মাটিতে পা দেয়া রাজপুত্র সিংহানুয়াত না্কর্ন প্রতিষ্ঠিত প্রথম রাজধানী চিয়াং সেন এ। ছয় শতাব্দীতে এসে গড়ে তোলা সেই রাজধানীতে দাঁড়িয়ে আছে কিছু ভাঙ্গা দেয়াল আর মন্দিরের ভিতটুকু । তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে তারই ফাকে কিছু ঘুরে ফিরে দেখলাম। আশে পাশে মানুষের ঘরবাড়ি হয়েছে অল্পবিস্তর।
প্রাচীনতম রাজধানী চিয়াং সেন এর ভাঙ্গা দেয়াল
হোটেলে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে এলো । ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম পাঁচ মিনিটের হাটা পথের দুরত্বে নাইট বাজারের উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে। এখানে চারিধার ঘেষে নানা রকম খাবারের হাট মাঝখানে টেবিল চেয়ার পাতা তাতে আমাদের মত বেশির ভাগ পর্যটকই স্থানীয় খাবার নিয়ে বসেছে। উত্তর থাইল্যান্ডের খাবার কিন্ত ব্যংককের মত ফিস সসের প্রাধান্য নেই, সেখানকার সত্যি অসাধারন স্বাদ ও গন্ধ এবং দামেও সস্তা । খেতে খেতে দেখলাম স্টেজে চলছে অজস্র পর্যটকদের মনরঞ্জনের জন্য নাচ ও গান যাতে নেই কোন অশ্লীলতার ছাপ ।
উন্মুক্ত আকাশের নীচে স্টেজে শিল্পীদের মন মাতানো সুর ও নাচে মোহমুগ্ধ সবাই
দুদিন পর আসলাম চিয়াং রাইতে। আমার উদ্দেশ্য ছিল এবার দই ইনথাননকে ভালো করে দেখা। এই পাহাড় শ্রেনীকে দেখেই মনে হয় জনৈক জাপানী কবি লিখেছিলেন
চুমিয়া যেও তুমি
আমার বনভুমি
দখিন সাগরের সমীরণ।।
যে শুভক্ষনে মম,
আসিবে প্রিয়তম
ডাকিবে নাম ধরে অনুক্ষন
সারি সারি পাহাড়ের শ্রেনী যা হিমালয় পর্বতেরই অংশমালা
উত্তর সীমান্ত জুড়ে বিস্তৃত থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ পাহাড়শ্রেনী যা হিমালয়ের অংশ। চির হরিৎ অরন্য বেষ্টিত যে পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে এসেছে অজস্র স্বচ্ছ পানির ধারা। সেই পাহাড়টি হলো দই ইনথানন যা আগে দই আংখা নামে পরিচিত ছিল। গাছ-পালা, জীব-জন্ত, ফুল-ফল, ঝর্না, জলাভুমি অর্থাৎ প্রকৃতি ও অরন্যরাজি একটি মানুষের জীবনে কতখানি প্রয়োজন তা অনুভব করেছিলেন লান্নার শেষ স্বাধীন রাজা ইন্থাভিচায়ানন।
লান্নার শেষ স্বাধীন রাজা ইন্থাভিচায়ানন।
অত্যন্ত দুরদর্শী রাজা এই ভু প্রকৃতির মুল্য তিনি বুঝতে পেরে এর রক্ষার্থে মৃত্যুর আগে আদেশ দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর দেহভস্ম যেন দই আংখার সর্বোচ্চ চুড়োয় স্থাপন করা হয় যাতে কেউ সেই পাহাড় ও তার বনভুমিকে ধ্বংস না করে। তাঁর সেই আহবান আজও সন্মানের সাথে মেনে চলছে সে দেশবাসী ।
দই ইনথাননে রাজা ইন্থাভিচায়ানন এর সমাধি যা থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ স্থান
রাজা ইন্থাভিচায়াননের দেহভস্মের উপর একটি ছোট সাদা রংয়ের সৌধ নির্মিত যার উল্টোদিকে থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ স্থানের চিনহ। রাজা ইন্থাভিচায়াননের স্মৃতির প্রতি সন্মান জানিয়ে পরবর্তীতে দই আংখা নামটি পালটে সংক্ষিপ্ত করে দই ইনথানন রাখা হয়েছে। থাই ভাষায় দই অর্থ পাহাড়। বর্তমানে দই ইনথানন চিয়াং মাই এর সবচেয়ে পর্যটক প্রিয় এলাকা।
দই ইনথানন থেকে তোলা একটি সাদা রডোড্রেন্ড্রন
দই ইনথাননের সাদা অর্কিড
চির হরিৎ সেই অরন্যে রয়েছে অসংখ্য ফার্ন আর অর্কিডের সমাহার। রয়েছে কলকল শব্দ তুলে নেমে আসা ঝর্না ধারা।থাই উপকথা অনুযায়ী সেখানকার মানুষের বিশ্বাস তাদের জলদেবতা ফিফান্নামের আবাস সেই পাহাড়েই। কারন এখান থেকে উৎসারিত প্রচুর পানি প্রবাহ দেশটির মধ্যভাগকে সুজলা সুফলা করে রেখেছে।
এমন অজস্র জলরাশি পুর্ন সিরিথান ঝর্নার স্রোতধারা নেমে এসেছে পাহাড় চুড়া থেকে দুটি ধাপে যার রূপে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই।
পর্যটক প্রিয় সেই পাহাড় দই ইনথাননে যাবার জন্য আগের রাতেই এক ট্যুরিষ্ট কোম্পানী থেকে টিকিট কিনে ছিলাম। মাথাপিছু ১২০০ বাথ।এর মাঝে ছিল শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ভ্যান, হোটেল পিক আপ ড্রপ, ইংরেজী জানা গাইড, পার্ক এন্ট্রি ফি তিনশ বাথ এবং দুপুরের খাবার।সকাল সাতটায় আমাদের হোটেল থেকে নিতে আসবে। আমাদের সাথে ছিল বৃটিশ অস্টাদশী ও দক্ষিন কোরিয়ার এক মা ও তার তরুনী কন্যা, মোট এই পাঁচ জনই ছিলাম আমাদের দই ইনথানন ভ্রমনে।
দেবতাসম রাজা ভুমিবল ও রানীর উদ্দেশ্যে নির্মিত ছেদী
প্রথমেই আমাদের গন্তব্য ছিল প্রয়াত প্রজা প্রিয় রাজা ভুমিবল ও তার স্ত্রী রানী সিরিকিটের উদ্দেশ্যে নির্মিত দুটি ছেদি বা স্তুপা। রাজারটি
ইষৎ কালচে তাম্র বর্নের রানীরটি হাল্কা গোলাপী আভাযুক্ত বেগুনী পাথরের। যে শিল্পীদের হাতে এই স্তম্ভ দুটো নির্মিত হয়েছে অথবা যার ভাবনায় সৃষ্টি তিনি যে তার মন প্রান উজাড় করে দিয়েছিলেন তা নির্মানেই বোঝা যায়। বেশ কয়েক ধাপ সিড়ি বেয়ে উঠে এক প্রাঙ্গন, সেখান থেকে দুটি সিড়ি দুদিকে চলে গেছে । রাজা ভুমিবলের ছেদিটি আকারে রানী সিরিকিতের চেয়ে বড়। রাজার স্তুপার ভেতরে রয়েছে বুদ্ধের মুর্তি যা নিয়মিত পুজা করা হয়।
রাজার সন্মানে নির্মিত ছেদীর অভ্যন্তর
রঙ দুটো মানুষের মনে যে কি প্রবল প্রভাব বিস্তার করে সেটা নিজেই অনুভব করলাম। যেমন মহিমাময় তাম্রবর্নের ছেদীটির সামনে দাঁড়িয়ে ভয় ভয় মিশ্রিত শ্রদ্ধা আর রাজকীয় বর্ন হাল্কা পার্পল রঙের কাছে মনে হলো ভারী মমতাময়ী একজনার পাশে দাঁড়িয়ে আছি যেন।
খানিকটা দুরত্বে থাকা সেই ছেদী দুটো ঘিরে রয়েছে অপরূপ দৃষ্টিনন্দন এক বাগান । অনেকেই সেখানে দাঁড়িয়ে অরন্যঘেরা দূর সবুজ পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে আছে, কেউবা ছবি তুলছে দাঁড়িয়ে বসে অথবা ছোট জলাশয়ের উপর বাকাঁনো সেতুর উপর।
রাজা রানীর উদ্দেশ্যে নির্মিত মঠের কিনারা ঘেষে তৈরী নান্দনিক নকশায় ঘেরা বাগানের খানিকটা
সবুজ অরন্য ঘেরা পাহাড়কে পেছনে রেখে রানী সিরিকিটের হাল্কা বেগুনী গোলাপী আভার মিশ্রনে তৈরী ছেদী
তাম্র বর্নের রাজার ছেদীর বাইরের দেয়ালে তাম্রবর্নের টেরাকোটার কারুকাজে বুদ্ধ ধর্মের অনুশাসন ফুটে উঠেছে
আর বেগুনী গোলাপী রঙের রানীর ছেদীর দেয়ালে তেমনি রঙের কারুকাজ
রানীর স্তুপায় সিড়ি বেয়ে উঠছে পর্যটকের দল । তবে এস্কিলেটারও রয়েছে দুটি স্তুপায় ওঠার জন্য
রাজা রানীর মঠকে বিদায় জানিয়ে এবারে আসলাম জলপ্রপাতের কাছে। দই ইনথাননে রয়েছে প্রচুর জলপ্রপাত। অনেক উপর থেকে দুরন্ত বেগে নেমে আসছে জলরাশি যার আওয়াজ সেই নিরিবিলি নিশঃব্দ দুপুরে দূর থেকেও শোনা যায় ।
ওয়াচিরিথান ঝর্না
দুটো ঝর্না সিরিথান এবং ওয়াচিরাথান এর অপরূপ নৈসর্গিক রূপ মুগ্ধ আমরা সেখানে কিছু সময় কাটিয়ে গেলাম পরের গন্তব্য সেখানে বসবাস করা আদিবাসী মংদের গ্রামে। ইংরাজীতে অবশ্য লেখা হামং । তাঁরা কাপড় বোনা, ফসল ফলানো, ফলকে শুকিয়ে বাজারজাত করে জীবন চালিয়ে থাকে অনেকটা আমাদের উপজাতিদের মতই। অবশ্য তারা সবাই রাজকীয় প্রকল্পের অধীনে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত।
সবাই যখন ব্যস্ত তখন বুড়িমা বাঁশের মাচায় পা মেলে অবসর নিচ্ছে ক্ষনিকের জন্য
রয়েল প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত আদিবাসীদের উৎপাদিত বিভিন্ন ফল ও অন্যান্য জিনিসের ক্ষুদ্র একটি বাজার
পাহাড়ের অজস্র ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছির দল, অত্যন্ত খাটি সেই মধু বিক্রী করতে নিয়ে এসেছে তাদের বাজারে
সবকিছু দেখে উপভোগ করে যখন ফিরে আসি তখন চিয়াং রাইতে রাত্রি নেমে এসেছে ।
রাজা ইন্থাভিচায়ানন ও ১৮ নং এর ছবিটি ছাড়া সব আমাদের মোবাইলে তোলা