somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার শৈশব

২১ শে মে, ২০২৩ সকাল ১০:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার শৈশব মানেই সীতাকুণ্ডের পাহাড়ের পাদদেশে কাটানো কয়েকটি বছর, যা আর কখনো ফিরে আসে নি। সে যে কি মধুর দিনগুলো যা বর্ননা করার ভাষা হাতড়ে বেড়াচ্ছি কিন্ত টুকরো টুকরো সৃতিগুলো জোড়া লাগানো বড় কষ্টকর।
মনে আছে আব্বার বদলীর সুত্রে ঢাকা থেকে সীতাকুন্ডে যখন হাজির হোলাম তখন আমাদের মত ছানাপোনাদের বেশ রাত। কম পাওয়ারের হলদেটে বাতির আলোয় শুধু নজরে এলো চারিদিকে বারান্দা ঘেরা বেশ পুরনো একতালা একটা বিল্ডিং।
ঘরে ঢুকে ফ্রেশ হতেই আম্মা বাবুর্চির রান্না ভাত আর মুরগীর মাংস ডাল দিয়ে মাখিয়ে একটি প্লেটে নিয়ে আমাদের মুখে তুলতে না তুলতেই আমরা ছোট ছোট চার ভাইবোন ঘুমিয়ে কাদা। তখন আমাদের কিইবা বয়স! কেউ স্কুলেও ভর্তি হইনি। তবে বড় ভাই ঢাকার একটা স্কুলে মাত্র ভর্তি হয়েছিল এটা আমার মনে আছে।
যাইহোক পরদিন খুব ভোরে প্রকৃতি প্রেমিক আব্বার ডাকে ঘুম ভাংলো। আমরা পরমরি করে দৌড়ে বারান্দায় আসলাম। বারান্দার বাইরে চারিদিক ঘিরে অসংখ্য নয়নতারা ফুটে আছে, সাথে সবুজ পাতার মাঝে সন্ধ্যামালতীর নত হয়ে পরা ফুল। সামনে বিশাল দিঘি যার বুকে শাপলারা মাত্র পাতা মেলছে। আমরা অবাক নয়নে দেখছি সেই অচেনা পরিবেশ আর তার রূপকে।
আব্বা ডেকে বল্লো "ফুল পরে দেখো, ওইদিকে তাকাও" বলে পুর্ব দিকে হাতের ইশারা করলো। বিস্ময়াভিভূত আমরা বড় দুই বোন মেঘে ঢাকা সবুজ শ্যমল সীতাকুণ্ড পাহাড়ের দিকে চেয়ে রইলাম। সমতল থেকে আসা কত ছোট আমরা তাও উপলব্ধি করলাম সেই বিশাল পাহাড়ের মহিমা আর তার সৌন্দর্য । যতদূর চোখ যায় সেই গাঢ় থেকে হাল্কা সবুজ ঘেরা সুউচ্চ পাহাড় টানা চলে গেছে উত্তর থেকে দক্ষিনে। পরে সেই পাহাড়ে অনেক চড়েছি কিন্ত প্রথম দিনের সেই রূপ আর কখনোই দেখিনি।

আসার সময় আমার এক কাজিন আমাদের দু বোনকে দুটো খেলনা সানগ্লাস উপহার দিয়েছিল সাথে কিছু রাশিয়ান উপকথা। বানান করে দুই এক লাইন পড়ি আর ছবি দেখি। দুদিন পর সকালে আমি আর আমার বোন সেই সানগ্লাস পরে প্ল্যাটফর্মের পাশ দিয়ে হাটছি। পাশে দাঁড়ানো এক মালবাহী ট্রেন। হঠাৎ সেই থেমে থাকা ট্রেন এর ইঞ্জিন রুম থেকে তেলচিটচিটে ইউনিফর্ম পরা এক লোক লাফ দিয়ে নেমে আসলো আর তার সেই তেল মবিল লাগানো হাত দিয়ে আমাদের দুজনের হাত ধরে হাসি মুখে বলে উঠলো,"আরে চশমেওয়ালী, চশমেওয়ালী"।
এখন মনে হয় লোকটা কি রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালা ছিল যে কি না তার ছোট মেয়েকে অনেক দূর দেশে রেখে এসেছিল জীবিকার তাগিদে। আমাদের দেখে কি তার মেয়েদের কথা মনে পরেছিল! উত্তর জানা হয়নি কারন কুউউউ করে ট্রেন ছাড়ার বাশি বেজে উঠল লোকটা লাফিয়ে ইঠে জানালায় হাত রেখে চেয়ে রইলো আমাদের দিকে যতদুর দেখা যায়।


আর সব ছবি আমার মোবাইল


সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০২৩ সকাল ১০:৫৬
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×