somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাটির টানে (১ম পর্ব )

১৪ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পৌষ মাস নাকি শেষ হয়ে আসছে। সকালে খালামনিরা আগের রাতের বানানো ভাপা পিঠা খেতে খেতে নানুর সাথে আলাপ করছিল তাই শুনেছি। আমি বাপু পৌষ মাঘ বুঝি না তবে প্রচন্ড শীতে আমার জান বের হয়ে আসছে, একেবারে মনে হয় হাড় ফুড়ে মজ্জার ভেতর গিয়ে ঢুকেছে। আমি তাড়াতাড়ি ওয়ার ছাড়া নানুর শালুর লেপটার নীচে গিয়ে ঢুকি। প্রতিদিন রাতেই নানু আমাকে তাড়াতাড়ি খাইয়ে দেয়, বলে তুই ছোট মানুষ আমাদের সাথে খেতে গেলে তোর অনেক দেরি হবে । তা ঠিক ওনারা সবাই যখন খেতে বসে তখন তো আমি ঘুমিয়ে এক্কেবারে কাদা। প্রচন্ড শীতে আজ আমার ঘুম আসছে না একেবারেই। নানুকে জড়িয়ে ধরে যখন ঘুমাই তখন আস্তে আস্তে চারিদিকটা গরম হয়ে উঠে।
চৌচালা টিনের লম্বামত ঘর, কাঠের বন্ধ জানালার উপর চাদর দেয়া। তাও হু হু করে বাতাস আসছে। আমি একা একা শুয়ে আছি শুনি চালের উপর টপ টপ করে কিসের যেন আওয়াজ । ছোট খালামনিকে জিজ্ঞেস করলে জানালো ওগুলো কুয়াশা পানি হয়ে ঝরে পরছে চালে । বাপ্রে কি কুয়াশাই না তাহলে বাইরে ।
চল্লিশ পাওয়ারের টিমটিমে এক ঘোলাটে বাল্বের আলোয় ঘরের কোনায় কোনায় অন্ধকার জমাট বেধে আছে। আমি লেপ থেকে মাথা বের করে সেই অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে দেখি আবার টুপ করে ঢুকে পরি। নানু কখন আসবে কে জানে ! আমার ভালোলাগে না একা এক ঘরে শুয়ে থাকতে । যদিও পাশের ঘর থেকে সবার কথা শুনছি। তারপর কখন ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। অনেক রাতে হটাত দরজায় কে যেন ঠক ঠক করে কড়া নাড়ছে। নানু কখন এসে আমার পাশে শুয়ে পরেছে জানি না । আবারও কড়া নাড়ার শব্দ, আমি ফিস ফিস করে নানুকে ঠেলা দিয়ে বলি "নানু, নানু কে যেন কড়া নাড়ছে । বিস্মিত গলায় নানু বলে উঠে, হ্যা আমি শুনেছি কিন্ত এত রাতে কে আসলো !
আস্তে আস্তে লেপ সরিয়ে উঠে নানু বাতি জালিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । আমি বলছি 'নানু একলা যেও না, তুমি মামাকে ডাকো'। ততক্ষনে উনি দরজার কাছে । আস্তে করে কাঠের বড় ডাসাটা নামালো তারপর খিল না খুলেই জিজ্ঞেস করলো কে আপনি এত রাতে ! "বুজান, বুজান দরজা খুলেন আমি"। চিকন পাড়ের থান শাড়ি পরা আমার নানু দরজা খুলতেই বিছানায় আতংকে উঠে বসা আমি দেখতে পেলাম দরজার ওপাশে ঘন কুয়াশার মাঝে লম্বামত একটা লোক দাঁড়িয়ে। সেই মিটমিটে আলো আর কুয়াশার ছায়ার ওপাশে সাদা পাকা বাবড়ি চুলের লোকটির মুখ ভর্তি বসন্তের গভীর দাগ। তার পরনে একটা সাদা লুংগী আর মলিন সাদা খদ্দরের চাদর। এক হাতে একটি মাটির কলসী আরেক হাতে ছেড়াখোড়া একটা কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে এক পায়ের উপর ভর দিয়ে দাঁড়ানো লোকটি হাসি ভরা মুখে বলে উঠলো, "বুজান আমারে চিনতে পারতাছেন না, ভাগ্যকূল থিকা আসছি !
আমি খঞ্জর" ।

ছবি আমার আকা
https://www.somewhereinblog.net/blog/June/30352266
দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ পর্ব

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৫:২৬
১১টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×