যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনে পুনরায় জয়ী হন, তবে তার প্রশাসন বাংলাদেশের জন্য কিছু নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। ট্রাম্পের আগের প্রশাসনের নীতি অনুসারে, বাণিজ্য, ভিসা, ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক, এবং অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কিছু প্রভাব অনুভব করতে পারে।
১. বাণিজ্য ও রপ্তানি: ট্রাম্প সাধারণত আমেরিকার নিজস্ব উৎপাদন এবং শিল্পকে অগ্রাধিকার দেন। ফলে তিনি বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্য শুল্ক আরোপ এবং চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে পছন্দ করেন। এ ধরনের নীতির কারণে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন রপ্তানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।
২. ভিসা ও অভিবাসন নীতি: ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি সাধারণত কঠোর হয়ে থাকে, যা বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া কঠিন করতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, কর্মসংস্থান এবং পর্যটকদের জন্য ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
৩. যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের প্রভাব: ট্রাম্পের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। বাংলাদেশ চীনের সাথে তার অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে কিছু চাপে পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের চীন-বিরোধী নীতির কারণে বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখতে বাড়তি কূটনৈতিক কৌশল প্রয়োজন হতে পারে।
৪. উন্নয়ন সহায়তা ও আর্থিক সংস্থার সাথে সম্পর্ক: যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে, বিশেষ করে মানবাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন অতীতে এই ধরনের সহায়তাগুলো কমিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল, যা পুনরায় হতে পারে। ফলে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য আর্থিক সহায়তার উৎস সংকুচিত হতে পারে।
৫. মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে চাপ: ট্রাম্প প্রশাসন সাধারণত মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র নিয়ে তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্ব আরোপ করেছিল। তবে এই ক্ষেত্রগুলোতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক চাপের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়, বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অবনতির মুখে।
৬. শ্রমিক অধিকার ও নিরাপত্তা বিষয়ে শর্ত: ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় জোর দিয়ে থাকে। তাই বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার ও নিরাপত্তা মানদণ্ড উন্নত করার জন্য বাড়তি চাপ আসতে পারে, যা রপ্তানির শর্ত হিসেবে প্রণীত হতে পারে।
সবমিলিয়ে, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে বাংলাদেশের জন্য কিছু কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে একই সঙ্গে বাংলাদেশের নিজস্ব কূটনৈতিক দক্ষতা ও বৈশ্বিক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সুযোগও থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



