Click This Link
হোটেল ইণ্টারকন্টিনেন্টাল ও হোটেল শাহবাগ
ঢাকার আধুনিক হোটেল জগতে তখন দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (বর্তমানে ঢাকা শেরাটন) আর হোটেল শাহবাগ ( বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ)। এছাড়া মুসলিম লীগ নেতা কাজী কাদেরের হাটখোলা মোড়ের হোটেল ইলিশিয়ামও বেশ নামকরা ছিলো।( এটি বর্তমানে সরকারী কর্মকর্তাদের ডর্মিটরী হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।) ইন্টারকন তখন ছিলো ৪ তলা আর শাহবাগ ৭ তলা। সত্যমিথ্যা জানিনা, পুরনো ঢাকার লুঙ্গিপরা কোন এক ধনী ব্যক্তিকে ইন্টারকনে ঢুকতে না দেয়াকে কেন্দ্র করেই নাকি হোটেল শাহবাগের জন্ম। পুরনো ঢাকার সেকালের অভিজাত মানুষজন খুব দামী ও সৌখিন লুঙ্গি পরতে ভালো বাসতেন। বেতার ভবনে বেড়াতে এসে কোথায় চা খাওয়া হবে এ নিয়ে মতভেদ দেখা গেলো। এক পক্ষ ইন্টারকনে অন্যপক্ষ নতুন তৈরী শাহবাগে যেতে আগ্রহী। শেষ পর্যন্ত বয়োজ্যেষ্ঠ হিসাবে বড়ো চাচাই সিদ্ধান্ত নিলেন ইন্টারকনে যাবেন। বিদেশ ঘোরা বড়ো চাচা জানতেন শাহবাগ যতো সুন্দরই হোক সেটা স্থানীয় হোটেল আর ইন্টারকন চেইন হোটেল । ( ১৯৮৮ কি ১৯৮৯ পর্যন্ত এটি ইন্টারকন ছিলো এরপর চলে যায় শেরাটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায়)
দোতলা বাসে মিরপুর
বড়োচাচা মিরপুরে জমি কিনেছেন সেটা দেখার জন্য মিরপুর গেছি। সেটাই আমার জীবনে প্রথম দোতলা বাস ভ্রমন। ১৯৬৩ সালে ইটালীর ফিয়াট কোম্পানীর তৈরী দোতলা বাস চলাচল শুরু করে ঢাকায়। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তার দুএকটা মিরপুরের রাস্তায় চলতে দেখেছি বিশেষত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ''চৈতালী" রুটে আমরা চড়তাম একটায়। এরপর আসে ভারতের অশোক লীল্যাণ্ডের দোতলা বাস। এখন আছি ভলভো জগতে। যাই হোক, মিরপুরের রাস্তা ছিলো গাবতলী হয়ে মাজার রোড দিয়ে। সে রাস্তা আবার পিচঢালাই ছিলো না, ছিলো আরসিসি ঢালাই। এরপর টেকনিক্যাল হয়ে রাস্তাটি হয়। ১৯৮৯ কি ১৯৯০ সালে সম্পন্ন হয় রোকেয়া সরণী।
পল্লবী মডেল টাউন
সেখান থেকে গেলাম পল্লবী মডেল টাউন দেখতে। এখন যেরকম ডুপ্লেক্স বাড়ীসহ জমি বিক্রি হচ্ছে পিঙ্ক সিটি জেনোভেলিতে সেরকম একতলা বাড়ীসহ জমি বিক্রি করেছে ইস্টার্ন হাউজিং। নাম দিয়েছিলো পল্লবী মডেল টাউন। দু' বছর আগেও সেই পুরনো দু'একটা বাড়ী আমি দেখেছি পল্লবীতে।
চিটাগাং মেইল
ঢাকা ভ্রমন শেষে সেকালের বিখ্যাত চিটাগাং মেলে চিটাগাং গেলাম। খুব লম্বা ট্রেন ছিলো। চিটাগাং গিয়ে উঠলাম গ্রীন হোটেলে। তখন এটা বেশ নাম করা হোটেল। এছ্ড়া হোটেল মিকসাও ছিলো। আগ্রাবাদ হোটেলের কথা তখন শুনেছি কিনা মনে নেই। এখন তো হোটেল পেনিনসুলাই ওখানে সবচেয়ে ভালো। পাহাড়ের ওপর বাতিজ্বলা বাড়ী আমার খুব মন কেড়েছিলো। পতেঙ্গা বিচ, ফয়'স লেক আর বন্দরে গিয়ে জাহাজ দেখার কথা আবছা মনে আছে। সবচেয়ে বেশী মনে আছে চট্টগ্রামের ভাষা। কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।
জার্নি বাই হেলিকপ্টার
চট্টগ্রাম থেকে হাতিয়া গেলাম হেলিকপ্টারে। হেলিকপ্টার স্টার্ট নেবার পর বিকট শব্দে ভয় পেয়ে যাই। তখনতো এসির কোন কারবার ছিলো না। ভেতরটা খুব গরম হয়ে ছিলো। কাগজেরর ছোট ছোট পাখা দেয়া হলো সবার হাতে। আমাকেও একটা দিলো। এরপর একজন ক্রু এলো ট্রে-ভরা চকলেট নিয়ে। নাবিস্কো চকলেট। একটু টক একটু মিষ্টি। আমি দু'টা নিলাম। হোস্টেস হেসে দিয়ে আমার ছোট পকেটে আরো কয়েকটি দিলেন। আমার ছোট ভাইয়ের সামনে যেতেই সে ট্রের ওপর থাবা বসিয়ে দিলো। ট্রে ছিটকে পড়ে হেলিকপ্টারের মেঝে হয়ে গেলো চকলেটময়। (চলবে)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


