আগের পর্ব -
Click This Link
ড. আহমদ শরীফ
বাংলা বিভাগের কিংবদন্তী অধ্যাপক ড. আহমদ শরীফ স্যারকে অল্প সময়ের জন্য পেয়েছিলাম। তিনি পড়াতেন সাংবাদিকতার ভাষানুশীলন (বাংলা)। পাশাপাশি ভাষাতত্ত্ব বিষয়ক কিছু অংশ। তাঁর মনীষার সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করে রাখতো। তাঁর চাচা লোক সাহিত্য সংগ্রহ, সম্পাদনা আর গবেষণার কিংবদন্তী আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের কাজকে মনীষাঋদ্ধ করে উপস্থাপন করেছেন তিনি। মধ্য যুগের বাংলা সাহিত্য বিষয়ে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য সত্যিই ঈর্ষণীয়।
প্রফেসর কে এম এ মুনীম
ইংরেজী বিভাগের প্রফেসর কে এম এ মুনীম পড়াতেন সাংবাদিকতার ভাষানুশীলন (ইংরেজী)। সম্পাদনার ক্ষেত্রে (সাংবাদিকতার ভাষায় কপি রিডিং) মুনীম স্যার ছিলেন সর্বমান্য ব্যক্তিত্ব। এস এম আলী ডেইলী স্টারের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হয়ে চলে আসার পর মুনীম স্যার বাংলাদেশ অবজারভারের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হন। পরে সম্পাদক হন। আমৃত্যু এ পদে ছিলেন তিনি।
আবদুর রহীম
আবদুর রহীম স্যার ছিলেন বাংলাদেশ অবজারভারের নির্বাহী সম্পাদক। খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে তিনি আমাদের পড়াতেন সমকালীন বিষয়াবলী। তিনি পরে চলে যান লন্ডনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার হিসাবে। ফিরে এসে হন পিআইডি'র প্রধান ( পিআইও বা প্রিন্সিপাল ইনফরশেন অফিসার) । এখন আন্তর্জাতিক লেখক সংঘ পিইএন এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের অন্যতম কর্মকর্তা। এই সংগঠনের জার্মানী শাখার অর্থায়নেই মৃত্যুর আগে জার্মানী গিয়েছিলেন ড.হুমায়ুন আজাদ।
জাওয়াদুর রহমান
জাওয়াদুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশ অবজারভারের সহকারী সম্পাদক। বাংলাদেশ বিষয়াবলী পড়াতেন আমাদের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে। খুব শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। ক্লাসে মাঝে মাঝে সিগারেট টানতেন। কথা বলতে বলতে আনমনে বাইরের দিকে চেয়ে থাকতেন। তাঁর একটা কথা আমার খুব ভালো লেগেছিলো- আমরা সবাই যৌবন ধরে রাখার জন্য অস্থির হয়ে থাকি। বার্ধক্য নিয়ে আমরা আতঙ্কিত থাকি। অথচ বার্ধক্যেরও আলাদা একটা সৌন্দর্য আছে। সুন্দর করে বুড়ো হওয়াও একটা আর্ট।
কিছু দিন আগে স্যার মারা গেছেন বলে শুনেছি।
শাহেদ কামাল
কবি বেগম সুফিয়া কামালের বড়ো ছেলে শাহেদ কামাল। সুঠাম দেহী অকৃতদার এই ভদ্রলোক ছিলেন চূড়ান্ত রকমের স্বনির্ভর মানুষ। চলাফেরা করতেন সাইকেলে। তাঁর সাইকেল চালানো দেখলে মনে পড়তো চে'র সাইকেলের কথা। খুব রাশভারী মানুষ ছিলেন। আমি যমের মতো ভয় পেতাম। সম্পাদনা' বিষয়ে পড়াতেন তিনি। শিক্ষক হিসাবে দুর্দান্ত ছিলেন। চাকরী করতেন বাসস-এ।
এনায়েত উল্লাহ খান
অল্প কিছু দিনের জন্য পেয়েছি এনায়েত উল্লাহ খান স্যারকে। (অনেকেই তাঁকে আর হলিডে সম্পাদক রাশেদ খান মেননদের ভাই এনায়েত উল্লাহ খানকে এক করে ফেলেন) স্যার এখন মূলত: ব্যবসায়ী। কসমস গ্রুপের মালিক। মৌচাক মোড়ে নব্বইয়ের দশকের শুরুতেই তৈরী কসমসের স্মার্ট অফিস ভবন ঢাকার আধুনিক কর্পোরেট অফিসের অন্যতম পথিকৃৎ। মতিঝিল দিলখুশার বাইরেও যে ব্যবসায়িক অফিস হতে পারে সেটাও ছিলো এক নতুন ভাবনা। বেসরকারী বার্তা সংস্থা ইউএনবি এবং ইংরেজী সাপ্তাহিক ঢাকা কুরিয়ার সম্পাদনার মাধ্যমে সাংবাদিকতার সাথে সম্পর্কটি এখনো বজায় রেখেছেন। সেই কালেই ইউএনবির সাংবাদিকদের কম্পিউটারে রিপোর্ট লিখতে হতো। এ বিষয়ে ইউএনবিই পথিকৃৎ।
এখনো স্যার দারুন কর্মজঞ্চল। প্রায়ই দেখা হয় স্যারের সাথে।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



