আমার বিশ্বাসের হাতেখড়ি হয়েছিল
'মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব' পড়ে
শিশুদের যেমন মা লিখে হয় বর্ণমালার ।
শুধু বইয়ে ছাপানো বলে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব
জাহিরের অহমিকায় নির্দ্বিধায় মেনে নিয়েছিলাম
কে বলেছেন তার পরিচয়, কোষ্ঠি না জেনেই ।
বই পড়েই জেনেছিলাম
কাঁক কখনো কাঁকের মাংস খায়না ।
অপরিণত নিউরন সেটা বিশ্বাস করতে দেয়নি ।
আজ ছোটবেলার সমস্ত বিশ্বাসকে যখন
দাঁড় করিয়েছি প্রশ্নের সম্মুখে,
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ভাষায়
'বিক্ষত করছি প্রশ্নের পাথরে'
এবং অসংখ্য অবিশ্বাস যখন
যুক্তিবোধের কাছে হার মেনে
পরিণত হয়েছে বিশ্বাসে, বুঝেছি
কাঁক সত্যিই কাঁকের মাংস খায়না ।
বরং একটি কাঁকের মৃত্যু হলে
সমস্ত কাঁক ফুঁসে উঠে প্রতিবাদে,
আর একটি মৃত্যুও মেনে না নেয়ার ঘোষনায়
প্রদর্শন করে কালো পতাকা ।
তখন, ক্ষমতার দেয়াল দৃঢ় করার স্বার্থে
স্বজাতির মাংস নিয়ে নগ্ন উল্লাসে মাতে কারা ?
কাদের কাছে ক্ষুধার্ত শিশুর চেয়ে আনবিক বোমা
ও মহাকাশে প্রমোদ ভ্রমন অধিক মূল্যবান ?
আদর্শের মিথ্যে বুলিতে ভুলিয়ে বঞ্চিত
মজুরের রক্তের বিনিময়ে উপার্জিত টাকায়
কেনা বুলেটে তাদেরকে বিদ্ধ করে কারা ?
কাদের যাত্রা সভ্যতার উল্টো রথে ?
সবকটি প্রশ্নের উত্তরই কি মানুষ নয় ?
সুতরাং, হে মানব সকল
তোমাদের শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষনাটিকেও
আজ আমি প্রশ্নবিদ্ধ করছি ।