আমাদের মধ্যে অনেকেই হ্জ্ব করিনি। হজ্ব করার ইচ্ছাও অনেকের নেই। কারণ হজ্ব কখন কার উপর ফরয হয় তা আমরা অনেকেই ভালভাবে জানি না। নিজের ও পরিবারের প্রয়োজনীয় খরচ মিটিয়ে বায়তুল্লাহ্ পর্যন্ত যাওয়ার-আসার খরচ বহনের ক্ষমতা হলেই হজ্ব ফরয হয়ে যায়। কেননা মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের ৩ নম্বর সূরা আলে-ইমরান এর ৯৭ নম্বর আয়াতাংশে মহান আল্লাহ তা’য়ালা এভাবে বলছেন- লোকদের উপর আল্লাহর এ অধিকার রয়েছে যে, যার এ ঘর (বায়তুল্লাহ) পর্যন্ত পৌছাবার সামর্থ আছে সে যেন হজ্ব সম্পন্ন করে। কারো যদি নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত জমি থাকে, যে জমির ফসল না হলেও তার পরিবারের খরচ নির্বাহ হয়, অথবা কারো অতিরিক্ত বাড়ি থাকে যে বাড়ি তার ব্যবহার করতে হয় না, বরং ভাড়া দেওয়া, অথচ সে বাড়ির ভাড়া না হলেও তার বছর চলে যায় তবে সেই জমি বা বাড়ি বিক্রয় করে হলেও তার হজ্বে যাওয়া ফরয হবে বলে অনেক ফকীহ সুস্পষ্টত উল্লেখ করেছেন। তাহলে চিন্তা করুন! আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা প্রতি বৎসর প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা দিয়ে জমি কিনছেন, বাড়ি বানাচ্ছেন বা বিনিয়োগ করছেন অথচ হজ্ব করছেন না। আমাদের সমাজে অনেক লোকই রয়েছেন যারা হজ্ব সম্পন্ন হওয়ার খরচের চেয়ে অনেক বেশী অর্থ ঘুষ প্রদান করে বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণ করে থাকেন কিন্তু হজ্ব করছেন না। যাকাত ফরয হওয়ার জন্য শরিয়তে সম্পদের পরিমান উল্লেখ আছে কিন্তু হজ্ব ফরয হওয়ার জন্য কোন সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ নাই। আর হজ্ব ফরয হওয়ার পরেও হজ্ব না করে মৃত্যুবরণ করাকে কোন কোন হাদীসে ইয়াহূদী--খৃস্টান হয়ে মরা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের ২ নম্বর সুরা আল-বাক্বারাহ এর ১৯৭ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা হজ্বের জন্য এভাবে ঘোষণা করছেন - হজ্বের মাসগুলি নির্দিষ্ট, অতএব যে কেউ এ মাসগুলোতে হজ্বের নিয়ত করলো তখন হজ্বের মধ্যে না সে যৌন সম্ভোগ করবে, না সে অন্যায় আচরণ করবে এবং না কলহ বিবাদ করবে, আর তোমরা যে ভাল কাজ কর আল্লাহ তা জানেন, তোমরা পাথেয় সাথে নাও তবে নিশ্চয় উত্তম পাথেয় আল্লাহভীতি, ওহে জ্ঞনীগণ তোমরা আমাকে ভয় কর। হজ্বের নির্দিষ্ট সময় হলো শাওয়াল, যিলক্বাদ ও যিলহাজ্ব মাস।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ কুরআন ও হাদিসে অগণিত স্থানে বারংবার হজ্বের গুরুত্ব ও ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। বুখারী শরীফ এর হ্জ্ব অধ্যাইয়ে হজ্বের ফযীলত সংক্রান্ত যে হাদীসটি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে তা আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি- যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্ব করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত রইল, সে নবজাতক শিশু, যাকে তার মা এমুহূর্তেই প্রসব করেছে, তার ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরবে। চলবে----------
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৪