somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

#15 জি. এম. সুলতান মাহমুদ রানা (মেকানিক্যাল, ২কে৮)

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

KUET Talents আচ্ছা বলুন তো, আপনার কেমন লেগেছিল যখন আপনি প্রথম শুনেছিলেন যে সোহাগ গাজী টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে একই টেস্টে সেঞ্চুরী ও হ্যাট্রিক করেছিল??? বা যখন প্রথম শুনেছিলেন আশরাফুলের সবচেয়ে কম বয়সে টেস্ট সেঞ্চুরির কথা???

জাতি হিসেবে অন্যদের তুলনায় আমরা একটু বেশিই আবেগপ্রবণ। তাই যখন স্বজাতির কারো প্রথম কিছু করে ফেলার সাফল্যের কথা শুনি তখন স্বভাবতই একটু এক্সাইটেড হয়ে পড়ি।আর সাফল্যটা যদি আসে সমগ্র বিশ্বের পর্যায়ে 'প্রথম' তাহলে আবেগের মাত্রাটা একটু বেশীই বাঁধনছাড়া হয়। তাহলে ভাবুন তো, কেমন লাগবে যদি তেমন কেউ আপনার নিজের ভার্সিটির হয়???

থাক অতোদূর আর না যাই, নিজের মনের অজান্তেই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

বিশ্বের প্রথম ইউনিভার্সাল স্মার্ট এনার্জি মিটার উদ্ভাবন করেছে কুয়েট"
না,ভূল কিছু দেখছেন না।প্রয়োজনে নিজের চোখ কচলিয়ে বা গায়ে চিমটি কেটে নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনি বাস্তবেই আছেন। তিন তরুণের ব্যতিক্রমী উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা আর পরিশ্রমের ফসল এটি। আর সেই তিনজনের একজন জি. এম. সুলতান মাহমুদ রানা। প্রথমে অপর দুই উদ্ভাবকের মাথায় এই ব্যতিক্রমী উদ্ভাবনের চিন্তা আসে, পরবর্তীতে প্রোগ্রামিং ও অন্যান্য টেকনিক্যাল কাজে সহযোগিতার জন্য তিনিও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তাদের উদ্ভাবিত এ মিটারের সাহায্যে মোবাইল ফোনের SMS এর মাধ্যমেই বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। দরকার হবে না কোন IPS, জেনারেটর বা ব্যাটারির। মিটারটি ব্যবহার করে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রিপেইড ও পোস্টপেইড দুই ধরণের সুবিধাই পাওয়া যাবে এই মিটারটি দিয়ে। ভুতুড়ে বিল থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে নিশ্চিন্তে। (এছাড়াও মিটারটির আরো নানাবিধ সুবিধা আপনি সিম্পলি গুগল করেও জেনে নিতে পারবেন।) মিটারে তিনটি প্রধান ইউনিট আছে- >পাওয়ার পরিমাপক ইউনিট, >ডিসপ্লে ইউনিট, >রিমোট কম্যুনিকেশন ইউনিট। পাওয়ার পরিমাপক ইউনিট মেইন লাইন থেকে সিগন্যাল নিয়ে ভোল্টেজ, কারেন্ট, পাওয়ার ফ্যাক্টর ও ব্যবহৃত বিদ্যুৎ কিলোওয়াট-আওয়ার এ পরিমাপ করবে।

ডিসপ্লে ইউনিট কিলোওয়াট-আওয়ার, ব্যালান্স (টাকা), ভোল্টেজ ও পাওয়ার ফ্যাক্টর প্রদর্শনের কাজ করে এবং রিমোট কম্যুনিকেশন ইউনিটের সাহায্যে মিটারটিকে দূর থেকে কন্ট্রোল করা যায়। আর এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে, একটি GSM মডিউল যার মাধ্যমে ম্যাসেজ দিয়েই যেকোনো জায়গা থেকে এই এনার্জি মিটার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রথমবারের মতো উদ্ভাবিত এ মিটারে ম্যাসেজের মাধ্যমে যেকোনো অপশন আবার কনফিগার করা যায়।একই সঙ্গে এই মিটারে প্রিপেইড ও পোস্টপেইড সুবিধাও প্রথম। আর লোড ব্যবস্থাপনার ধারণাও প্রথম । ট্যারিফ প্লানের যে নতুন ধারণা , সেটাও প্রথম। এছাড়াও থাকছে, পাওয়ার ফ্যাক্টর মনিটরিংয়ের নতুন সুবিধা।

ব্যালান্স সমন্বয়ের মতো অভিনব ব্যবস্থাও থাকছে মিটারটিতে। আর এ মিটারকে একটা কন্ট্রোল রুম থেকেই নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যা পাওয়ার সিস্টেমকে করবে স্মার্ট।

লাইনে যত বিদ্যুতের জন্য লিমিট দিয়ে অন রাখা হবে তার থেকে বেশি নিতে পারবেনা এ মিটার ব্যবহার করলে। এ জন্য অন্য কোনো অতিরিক্ত লোড লাগালে বাসার সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অফ হয়ে যাবে।এ ছাড়া কন্ট্রোল রুমের পাশাপাশি এই মিটারের স্ট্যাটাস গ্রাহক যেকোনো সময় দেখতে পারবেন। দূর থেকে যে কোন গ্রাহক তার নিজের বাড়ির পাওয়ার অফ করে রাখতে পারবেন। মিটারে কেউ কোনো কারসাজি করতে চাইলে কন্ট্রোল রুমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্কবার্তা চলে যাবে। এছাড়া ওভারলোড, ওভার ভোল্টাজ, আন্ডার ভোল্টাজ এবং সেলফ প্রটেকশন তো থাকছেই। আরো আছে বাইপাস সতর্কীকরণ ব্যবস্থা।

এই সাফল্যের বাইরেও তিনি ২০১৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ যাবত কালের সবচেয়ে বড় ইন্টারন্যাশনাল অটোনমাস রোবটিক কম্পিটিশন এ আব্দুল্লাহ আল মামুন খান দীপের সাথে অংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। এছাড়াও Voice Controlled Robot, লাইন ফলোয়ার, মেজ সলভারসহ নানারকম রোবট তৈরির সফলতার রেকর্ড রয়েছে তার ঝুলিতে।

Robotics Club of KUET এর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন জি.এম. সুলতান মাহমুদ রানা। Applications Developer হিসেবে কাজ করেন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস oDesk এও।

বর্তমানে তিনি Pi Labs Bangladesh Ltd. এ কর্মরত আছেন Research & Development Engineer পদে। এছাড়াও আব্দুল্লাহ আল মামুন খান দীপের 'কোয়াডকপ্টার' তৈরির সময়ও তিনি প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করেছিলেন। তার অবদানের জন্য কুয়েটের রোবটিকস এর ইতিহাসে তার নাম সব সময় উপরের দিকেই থাকবে।
"We,all, try to be different & that makes us all 'The same'!! But when we try to be ourselves then that makes us different."

ফেসবুক আইডিঃ http://www.facebook.com/gsmrana.me

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:৩৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×