somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কামিকাজি
আমি একজন নিয়মিত ব্লগার। মুক্তচিন্তার প্রকাশ ও চর্চা করি, গান শুনি, মুভি দেখি, আড্ডা মারি, ঘুরে বেড়াই আর জীবনকে উপভোগ করি। কারন জীবন তো একটাই। facebook.com/kamikaze.agnostic.blogger ব্লগ সাইটঃ thekamikazeblog.wordpress.com

যদি পৃথিবীতে ধর্ম না থাকত?

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা মানুষ, সামাজিক জীব। প্রাচীন যুগ থেকেই কোন অদৃশ্য অতিপ্রাকৃতিক শক্তিকে ঈশ্বর নাম দেওয়া হয়েছে। মনস্তাত্ত্বিকভাবেই মানুষ সবসময় ঈশ্বরের উপর নির্ভরশীল থাকে, বিপদে আপদে ঈশ্বরকেই ডাকে। যদি এই ঈশ্বর নামক ধারনা না থাকতো তবে কি হত? ধর্মবিহীন একটি পৃথিবীর পরিবর্তনগুলি কেমন হতে পারত?

১) এত মন্দির, মসজিদ, গির্জা গড়ে উঠত না, সে জায়গাগুলিতে হাসপাতাল, বিদ্যালয় অথবা খেলার মাঠ গড়ে উঠতে পারত।

২) অনেক পাদ্রী, পুরোহিত অথবা ইমামের তৈরী হতনা, যারা শুধুমাত্র ধর্মকে পুঁজি করে ব্যবসা করে যাচ্ছে কোন কায়িক পরিশ্রম ছাড়াই।

৩) মানুষের মাঝে শ্রেণী বিভেদ থাকত না, কেউ কারো দিকে আঙ্গুল তুলে বলত না, এই মানুষ মুসলিম, এই মানুষ হিন্দু। সবার একটাই পরিচয় থাকত যে সে ”মানুষ”।

৪) যেহেতু ধর্ম নাই, সেহেতু ধর্ম নিয়ে দ্বন্দ্ব, হানাহানি, মারামারি হত না। লাখ লাখ মানুষ মারা যেত না। একে অপরকে শুধুমাত্র ধর্ম পরিচয়ের কারনে ঘৃণা করত না। উল্লেখ্য, পৃথিবীতে যত যুদ্ধ হয়েছে, তার বেশিরভাগের মূল কারন ছিল ধর্ম।

৫) ”মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই” টাইপের কোন অযৌক্তিক বানী থাকতো না। তখন হত ”মানুষ মানুষ ভাই ভাই”। কেউ কোন নির্দিষ্ট গোত্রকে ভালবাসত না। কলেমা পড়তে না পারার কারনে কাউকে খুন হতে হত না, অথবা ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়ার কারনে কাউকে ঘরের ভিতরে জলন্তভাবে পুড়ে মরত হত না। সমগ্র মানবজাতি একটি গোষ্ঠীতে পরিনত হত, যারা একে অপরের পরিপূরক হত।

৬) অমুক ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা, তাই আমাকে কেউ জাহান্নামের আগুনে পুড়ে মরার হুমকি অথবা ৭২ হুরের প্রলোভন দিত না। পৃথিবীর ৪২০০ ধর্মের শুধুমাত্র একটি ধর্মের অনুগামী হলে বাকি ৪১৯৯ টি ধর্ম অনুযায়ী আমাকে জাহান্নামে যেতে হবে, কি বিপদ! ধর্মও নাই, শাস্তিও নাই।

৭) শিশুদের ছোটবেলা থেকেই চাঁদ দিখন্ডিত করা, পানির উপর হাঁটা, অথবা হনুমানের হাতে পাহাড় নিয়ে ওড়ার গল্প বিশ্বাস করতে হত না। এইসব গল্পকে ঠাকুরমার ঝুলি টাইপের রুপকথার বইয়ে আষাঢ়ে গল্প হিসেবে পড়ানো হত।

৮) ধর্ম না থাকার কারনে কোন বাধা নিষেধ থাকত না, মানুষ গান শুনতে গেলেই ধর্মগ্রন্থ খুলে দেখতে যেত না ধর্মে কি অনুমতি দেওয়া আছে নাকি নাই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রবিবারের চার্চ গমন অথবা অগুনতি পূজা করতে হত না। এই সময়গুলি মানুষ অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারত, যাতে মানবকল্যানে অগ্রগতি হত।

৯) ”আল্লাহ ভরসা”, ”গড ইস গ্রেট” অথবা ”ভগবান তোমার মঙ্গল করুক” টাইপের মিথ্যা আশ্বাস প্রতিদিন শুনতে হতনা, মানুষ অনুভুতিহীন ঈশ্বরের আশায় না থেকে নিজেরাই সমস্যার সমাধান খুজে বের করত। ডাক্তার রোগী বাঁচালে মানুষ ডাক্তারকেই ধন্যবাদ দিত, ঈশ্বরকে নয়। কোন ভাল ঘটনাকে ঈশ্বরের অনুগ্রহ অথবা খারাপ ঘটনাকে ঈশ্বরের পরীক্ষা শুনতে হতনা।

১০) মানুষ ঈশ্বর বিহীন পৃথিবীতে নিজেকে কোন অদৃশ্য প্রভুর গোলাম হিসেবে মনে করত না, সবাই থাকত স্বাধীন এবং মুক্ত মানুষ। কেউ নিজেকে ঘৃণিত, পাপী, অপরের আজ্ঞাবাহী একটি মাংসপিণ্ডে পরিনত করত না। একজন মুক্ত মানুষ যতটা স্বচ্ছন্দে জীবনযাপন করতে পারে, একজন শিকলে বাধা মানুষ কি তা পারে?

আরো কি কি পরিবর্তন আসতে পারত, ঠাণ্ডা মাথায় একটু চিন্তা করে দেখুন। ধর্ম ছাড়া পৃথিবীটা কত সুন্দর হতে পারত। মানুষের উপর ধর্ম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের নিয়ন্ত্রন করার জন্য, মানুষের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করার জন্য।

অনেকেই এই ঈশ্বর নামক অদৃশ্য ব্যাক্তির গোলামী পছন্দ করেন, তার শাসনগুলিকে শ্রদ্ধা করেন, জান্নাতের লোভে পাগল হন, জাহান্নামের ভয়ে ভীত থাকেন। ধর্মের অনেক ভাল দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেন। ধর্মকে নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালবাসেন। ধর্মে বৈজ্ঞানিক প্রমান তুলে ধরার চেষ্টা করেন এবং নিজের ধর্মকেই সঠিক বলে মানেন। নিজে সঠিক পথে আছেন মনে করে অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপর করুনা করেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ধর্মগ্রন্থের রেফারেন্স খোজার চেষ্টা করেন।

যদি কেউ ধর্ম পালন করতে চায়, যদি কেউ স্বেচ্ছায় অদৃশ্য ঈশ্বরের গোলামী করতে চায়, সেটা সম্পূর্ণই তার ইচ্ছা এবং তার ইচ্ছাকে আমি স্বাগতম জানাই।

আমার শুধু একটাই প্রশ্ন, আপনি ঈশ্বরের কাছে চেয়ে আজ পর্যন্ত সরাসরিভাবে কিছু পেয়েছেন কি? কোন প্রশ্ন করে কোন উত্তর পেয়েছেন কি? কোন সমস্যার সমাধান কি হয়েছে ঈশ্বরের মাধ্যমে?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:১৬
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×