আমি কুরবানী সাপোর্ট করি না।
সারা বছর গরিবকে লাথি মারা ভদ্রলোকরা যখন মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ গরিব দুঃখীদের দিয়ে এক বেলা মাংস খাইয়ে জুতা দান করে কুরবানীকে হালাল করতে আগ্রহী তাদের সাথে যুক্তিতে পেরে ওঠা আমার পক্ষে সম্ভব নহে।
আমি মৌসুমী ''জীবপ্রেমী'' নই। আমিও প্রতিনিয়ত প্রানীর মাংসে কামড় বসাই। আমি সালাদ খাবার নামে উদ্ভিদ হত্যা করি। আমিও নিঃশ্বাসের সাথে কোটি কোটি ব্যাক্টেরিয়া হত্যা করি। কিন্তু একদিনে কোন অদৃশ্য ঈশ্বরের পুন্য লাভের আশায় সারা বিশ্বে কোটি কোটি প্রানী হত্যা সমর্থন করিনা। আল্লাহ নাকি বলেছে নিজের সবচেয়ে প্রিয় জিনিষ কুরবানি করতে। মুসলমানরা কয়জন তাদের প্রিয় আইফোন অথবা ল্যাপটপ বিক্রি করে গরিব দুঃখীদের দান করেছে? ঈদের আগের দিন হাট থেকে কিনে আনা পশু কিভাবে সবচেয়ে প্রিয় হয় আমার ক্ষুদ্র মস্তিস্ক ধারন করতে অক্ষম। যদি গরিবদের সাহায্য করতে মন এতই উতলা থাকে যারা কুরবানী দিয়েছে তারা কয়জন জাকাত আদায় করেছে? ঈদের আগে নির্ধারিত ফেতরা অথবা প্রানীর চামড়া দান করে দিয়েই কর্তব্য শেষ?
বিবিসির সুত্রমতে শুধু বাংলাদেশে এবার ১ মিলিয়ন গরু জবাই হয়েছে। ঈদের দিন বৃষ্টি হওয়ায় রক্ত বৃষ্টির পানিতে মিশে জলাবদ্ধতার কারনে রক্ত নদীতে পরিনত হয়েছে। যখন এই ছবিগুলি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পরল তখন সারা বিশ্ব কুরবানীর ভয়াবহতা ও প্রানীহত্যার এই বর্বর উৎসব সম্পর্কে সচেতন হল। যেখানে উন্নত দেশগুলি খাদ্যশৃঙ্খল বজায় রাখতে কৃত্তিম আমিষ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানে এইরকম নির্বিচারে পশুহত্যা বিশ্বকে থমকে দিয়েছে। এই সব ছবি শেয়ার করেছে তারা নাকি ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
ধার্মিকদের মতে যেখানে ধর্মের কাছে মানবতা, দেশপ্রেম, সংস্কৃতির কোন মুল্য নেই, সেখানে জীবের অধিকার, প্রকৃতির ব্যালেন্স নিয়ে কথা বলা উলু বনে মুক্তো ছড়ানো মাত্র। ধর্মগ্রন্থে বলাই আছে , প্রানী উদ্ভিদ সব নাকি মানুষের সেবার জন্য তৈরী করা হয়েছে। কিসের পরিবেশ, আর কিসের প্রকৃতি। জান্নাতের ৭২ হুর ইজ ওয়েটিং। সুতরাং দে জবাই, আল্লাহু আকবর।
ভাইসব, ঢাকার ''রক্ত নদী'' র ছবি শেয়ার করলেই ''নাস্তিক'' ট্যাগ খেয়ে যাবেন। ফটোশপ কৈরা রক্ত পানি যারা ঘোলা বানাচ্ছে তাদের কমেন্টে রক্ত পানির ভিডিও দিলেও ''নাস্তিক'' খেতাব পাবেন।
সুতরাং খুব খিয়াল কৈরা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:৩৩