somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খোলা চিঠি দিলাম তোমার কাছে ....... ২

০৭ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাড়ে চুয়াত্তর ভাইয়া,
জানিনা তোমার সত্যিকারের নাম কি? কি তোমার পেশা? কোথায় তোমার আবাস? তোমার নাম ধাম পরিচয় কিছুই জানিনা আমি। খুব বেশিদিন হয়নি তোমাকে চেনার। সত্যি বলতে কবিতা আপার চিলেকোঠাতেই তোমাকে চেনার শুরু। চিলেকোঠার গল্পে তোমার এবং আরও কয়েকজনের মজার মজার মন্তব্যগুলি ছিলো সেই গল্পের প্রাণ। তোমাদের মন্তব্যগুলি সেই গল্পের কিছু কিছু প্লটেও বিশেষ ছায়া ফেলেছিলো তোমাদের অজান্তেই। তোমাকেও বিশেষভাবে চেনার বিশেষত্ব আসলে আমার তখন থেকেই শুরু। তোমাকে খুবই মজার একজন মানুষ মনে হয়েছিলো আমার। তুমি সেই গল্পে এবং আমার জড়ুয়া বেহেনাদের প্রায় সব পোস্টেই এমন সব মন্তব্য করেছো যা কৌতুকছলে এবং মাঝে মাঝে কঠিন কঠোর সমালোচনা হলেও তা থেকে খুব অনায়াসেই তোমাকে অনেক কাছের এবং আপন ভাবা যায়। আর আমি তাই ভাবিও।

নানা সময়ে তোমার পোস্ট এবং মন্তব্য থেকে তোমার সম্পর্কে আমার ধারনা কেমন জন্মেছে জানো? তুমি একজন শান্ত শিষ্ট, সৌম দর্শন মানুষ। স্বভাব দোষে শান্ত শিষ্ঠের সাথে লেজ বিশিষ্ঠও লিখে ফেলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু নিজের হাতকে ঠেকালাম। ( বুঝতে পারছি স্বভাবজাত ব্যপারগুলো ঠেকাতে গেলে কেমন কষ্ট লাগে। চাঁদগাজী ভাইয়ারও কেমন লাগে। জীবনের মানে হারিয়ে যায়, কি রকম যেন পানসে ব্যাপারটা :() যাইহোক নিজেকে এই কৌতুক থেকে বিরত রাখলাম কারণ মনে হচ্ছে তুমি নিজে যতই কৌতুকছলে যা খুশি তাই বলে ফেলো না কেনো তোমার সাথে কৌতুকে তুমি কৌতুক বোধ করো না মাঝে মাঝে এবং রেগেও যাও। আমি জানি আমার উপরে তুমি এখন ভীষন রেগে আছো। যদিও মনকে কিছুতেই বুঝাতেই পারছি না তুমি আমার উপরে রাগ করতে পারো। আচ্ছা রাগ না করো আমি জানি তোমার মন খারাপ হয়েছে। রাগ আর মন খারাপ কাদের উপরে হয় জানো? অনেক কাছের আর আপন মানুষদের উপরেই হয়।

মনে মনে হয়ত ভাবছো- এহ আসছেন আমার আপন মানুষ! তুই আমার কোন জনমের আপন মানুষরে!! :( হুম ভাবতেই পারো। আসলেই তো এই ব্লগ। বছরের পর বছর এই ব্লগের পাতায় লিখে চলি আমরা কয়েকজনা। চেহারা জানিনা, পরিচয় জানিনা, জানি না কে কেমন রাজকন্যা বা রাজার কুমার। জানিনা কে কত সমাজের উচ্চ পদে আসিন বা কে কতই না দুঃখে নিদ্রাহীন রাত কাটাচ্ছে। শুধু যা জানি তা এই ব্লগের লেখা দিয়ে দিয়ে। যদিও এই লেখার মধ্যেই সেই আচার আচরণ প্রতীয়মান হয়। ওহ যা বলছিলাম তুমি সেই প্রতীয়মান ব্যাপারটা হতেই আমার কাছে এমনই একজন। যার মাথা মজার মজার বুদ্ধি দিয়ে ঠাসা। সেই মজাটাই তোমার আনন্দময় জীবন আর বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক বটে। তবে তুমি মাঝে মাঝে চরম ভাবালু হয়ে যাও। তখন তোমার এই পৃথিবীর মোহমায়া আর টানে না। তুমি থাকো তখন অন্য কোথাও, অন্য কোনোখানে। আর সেই সময়টাতেই কোনো কৌতুক বা মজা তোমার মোটেও সহ্য হয় না।

ওহ তোমার মন্তব্যগুলো থেকে জেনেছি। তোমার ৩ টা বা ৪টা ছেলে আছে। এবং আমাদের আছে একজন বুদ্ধিমতী ও ভালোমানুষ ভাবীজী। যে আমার রান্নাবান্নার আর ঘরবাড়ি সাজানোর ছবিগুলি দেখে দেখে আমাকে অনেক ভালো বলে। আর তুমি নিশ্চয় বলো না না এত কিছু আসলে সুফিয়া বানায়, আসমা বানায় এই বেহেনা শুধু ছবি দেয়। এসব দেখে মোটেও মুগ্ধ হয়ো না। যাইহোক তোমাকে নিয়ে যাই ভাবিনা কেনো সবখানেই তোমাকে একজন মজার মানুষই মনে হয়। মনে হয় জীবনে যা পেয়েছো সব কিছু নিয়েই সন্তুষ্ট একজন মানুষ তুমি। আমার ধারণা তুমি সৌদী আরাব বা দুবাই এমন কোনো দেশে জব করতে একটা সময়। যদিও এখন কোথায় থাকো জানিনা আমি। তবে এখন আর সেখানে থাকো না এমনই মনে হয় আমার। থাকুক আমার তোমাকে নিয়ে এমন ভাবনা চিন্তা। এখন একটা কথা বলি।

আজ কিন্তু তোমাকে আমি এই চিঠি লিখতে চাইনি। আজকে আমি অন্য একজনকেই লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত বদলাতে হলো। মনে হলো তুমি অনেক বেশি রাগ করেছো আমার উপরে, কষ্ট পেয়েছো বা দুঃখ পাচ্ছো। আর সেই রাগটার কারনই আমার সেই নিয়তির ফের। একটা কথা বলি ভাইয়া আমি আমার ভালোবাসার মানুষদেরকে কখনও ভুল করেও কষ্ট দিতে চাই না। কিন্তু নিয়তির ফেরে কষ্ট দিয়ে ফেলি। আর জানো আমার সকল কষ্ট দুঃখ বা বিপদ আপদ ঘোরতর ঝামেলার পিছে আমার এই নিয়তির ফেরটাই দায়ী। সেই ফেরটা কি জানো? সব কিছুতেই আমারও কৌতুক খুঁজে পাবার চেষ্টা।

হয়ত ভাবছো- হুম সব কিছুতে কৌতুক পায় একমাত্র পাগলেরা। তবে কি আমি পাগল?? জানিনা আমি। :( হবোও হয়ত। তবে বিশ্বাস করো দুঃখের মাঝেও আমার হাসি পায় কখনও কখনও বা যে কোনো দুঃখ কষ্ট বেদনাকেই আমি চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়ে ফেলি। দুঃখ কষ্ট বা মন খারাপের ব্যপারটা আমার কাছে ভোতা হয়ে গেছে। জানো একবার না অনেকবার আমার এই অতি আনন্দ বা কৌতুক পেয়ে হেসে ফেলা বা কারো সাথে কৌতুক করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে নিজের অজান্তেই। একবার রাজীব নূর ভাইয়া ব্যানড হয়ে লিখেছিলেন উনি স্বপ্নে কি যেন দেখেছেন ব্লগ নিয়ে এটা শুনে আমার খুব হাসি পেলো। সেই কমেন্ট নিয়ে ঠাকুর মাহমুদ ভাইয়া খুব খুব রাগ করলো। ভাইয়া ধরেই নিলো আমি অন্যের দুঃখে হাসি। এমনই শয়তানের লাঠি আমি। তুমিও প্রায় তেমনই ভেবেছো আজ। এটা তোমার দোষ না। অনেকেই ভেবেছে। ভুল বুঝেছে। কাছের মানুষ দূরে চলে গেছে।

ভাইয়ামনি আমি জানিনা আমার এই চিঠি পড়ে তোমার রাগ ভাঙ্গবে বা মন খারাপ ঠিক হবে কিনা জানিনা আমি সত্যিই কিন্তু জানি আর যারা পড়ছে তারা এই মন খারাপ বা রাগের কারণ খুঁজে বেড়াবে। তাই আমি চিঠিটা প্রকাশের আগেই তোমার রাগের কারণ বুঝা যায় এমন ব্যপারগুলো মুছে ফেলবো। হা হা যেন তুমি ছাড়া আর কেউ জানতেই না পারে কেনো আমি এই কথাটা লিখলাম। সবাই খুঁজে মরুক।

এবার একটু ভাবের কথা বলি। জীবনে চলার পথে বহু মানুষের সাথে আমাদের পরিচয় হয়। বহু মানুষের আগমন ঘটে আমাদের এই ক্ষুদ্র ও নশ্বর জীবনে। একইভাবে বহু মানুষ হারিয়েও যায়। আমাদের জীবনে বহু প্রিয়জনের আবির্ভাব হয় যাদের ছাড়া বুঝি এক মুহুর্তও বাঁচবো না বলে বোধ হয়। কিন্তু তারাও হারিয়ে গেলেও আমরা কিন্তু ঠিকই বেঁচে থাকি। ঠিকই খাই দাই চলি ফিরি, সংসার ও জগতের নানা কাজও করি আর মাঝে মাঝে খুব মিস করি তাদেরকে। ধীরে ধীরে স্মৃতির উপর ধুলো জমতে শুরু করে। এক সময় আমরা প্রায় তাকে ভুলেই নতুন ভাবে জীবনের আনন্দে মাতি। কিন্তু এই যে হারিয়ে যাবার প্রাক্কালে আমাদের কারো কারো খুব মন খারাপ হয়।
এতটাই খারাপ যে একদম নড়বড়ে হয়ে ভেঙ্গে পড়ে তখন মানুষ। এই ব্যাপারটাকে কিন্তু সেপারেশন এংজাইটি বলে। এই সেপারেশন এংজাইটিটা বড় কষ্টের।

আজ তুমি যখন রাগ করলে আমার সেই সেপারেশন এংজাইটির সিম্পটম দেখা দিলো। মনে হলো এই জীবনে হারিয়ে ফেলা শত শত মানুষের ভীড়ে আরও একটা নাম যোগ হলো। ভাইয়া তোমাকে কষ্ট দেবার কোনো ইচ্ছেই আমার ছিলো না বা নেইও কখনও। আমি শুধুই মজা করেছিলাম সবকিছু শেষের পরে। কিন্তু তোমাকে যেন কেউ অপমান না করে সেই সময়টাতে কিন্তু আমি তৎপর ছিলাম। কিভাবে এবং কেমনে তা নাই বা বললাম। আসলেই আমি কখনও চাইনি বা চাইও না তুমি কষ্ট পাও। সেই কষ্ট থেকে বাঁচাতে গিয়ে আবার নিজেই কষ্ট দিয়ে ফেললাম তোমাকে। একেই বলে যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর..... একটা কথা জানো? আামার ইদানিং কালের সকল লেখাই গুটিকয় মানুষের জন্য। তুমিও তাদেরই একজন......মানুষ যখন ভুল বোঝে, ভুল বুঝে দূরে সরে যায় তখন ভুলে যায় এই একদিনের স্মৃতি হাজার দিনের সুন্দর স্মৃতিগুলির কাছে কতটাই না তুচ্ছ।


যাইহোক তুমি ভালো থেকো। তোমার মত করেই ভালো থাকবে ইনশাল্লাহ.......অনেক ভালোবাসা তোমাদের জন্য............

ইতি,
কঙ্কাবতী
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ২:৪৭
৪৪টি মন্তব্য ৪৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×