“কাল ইশার সালাত পড়ার সময় প্রজাপতিটিকে জীবিত দেখেছিলাম। আমার ঠিক সামনে মিনারের ওয়ালে বসে ছিল। ভেবেছিলাম— সুস্থই আছে, কাল ধরে বাইরে মুক্ত করে দিব; নইলে ফ্যানের পাখার অভিঘাত খাবে নিশ্চিত। আজ ফজরের পর দেখি সে মৃত্যু। হাতে নিয়ে দেখি, পাখাগুলো ভেঙে গেছে। আমি নিশ্চিত হলাম যে, কালকেই হয়তো ফ্যানের পাখার আঘাত লেগেছিল। তাই সারারাত কোঁকাতে কোঁকাতে মরে গেছে। এভাবেই শেষ হলো একটি প্রজাপতির জীবন...।” [১]
“কাল জুমুআ’র সালাতের আগে বেশকিছু মৌমাছি মসজিদের ভিতরে ঢুকে পড়ে। জানালার পাশ-কেটে ঢোকার সময় খুশিমনে ঠিকই ঢোকে, কিন্তু বের হওয়ার সময় ঘটে বিপত্তি। বেদিশা হয়ে পড়ে। বের হতে গেলে জানালার গ্লাসে গিয়ে ধাক্কা খায়। আবার বেশি নাচানাচি করতে যেয়ে ফ্যানের পাখার আঘাতে বেশকিছু মৌমাছি ফ্লোরে পড়ে গেলো। পাখিরাও কম নয়; তারাও খাদ্যের সন্ধানে প্রায়শই মসজিদে প্রবেশ করে। তৎক্ষণাৎ একটা পাখি এসে ভিতরে প্রবেশ করলো। ফ্লোরে পড়ে থাকা মৌমাছিগুলোকে ধরে কোঁৎ-কোঁৎ করে গিলতে লাগলো। পাখিকে কোনো রকম খ্যাদাইয়া খুদাইয়া বের করে দিলাম। কারণ, উপরে ফ্যান ঘুরছে। অকস্মাৎ যদি একটা আঘাত লাগে, তাহলে শেষ।” [২]
“মাঝেমধ্যে ভাবি— এরা কেন যে এখানে প্রবেশ করে? হয়তো খাদ্যের সন্ধানে। কারণ, না খেয়ে থাকলে তো জীবন চলবে না। শরীর নিস্তেজ হয়ে যাবে। অনাহুত অবস্থায় মারা যেতে হবে। এজন্য বেঁচে থাকার জন্য প্রাণীরা খায়, খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে যায়। দুমুঠো ভাতের জন্য আমরাও তো অনেক কিছুই করি। দিক দিগন্তে ছুটে বেড়াই। এদিক সেদিক ছোটাছুটি করি। কিন্তু এই খাদ্যের সন্ধান করতে যেয়েই অনেক সময় দূর্ঘটনায় শিকার হই। ওই প্রজাতি কিংবা মোমাছির মতো কাঁতরাতে কাঁতরাতে আর্তনাদের চিৎকার করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ি। ভেবে দেখেছেন?— সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমরা খাদ্য খুঁজি, কিন্তু সেই খাদ্যই অনেকসময় মৃত্যুর কাছে টেনে নিয়ে যায়। সুন্দর করে আর বেঁচে থাকা হয় না।” [৩]
“মৌমাছি এসে সেখানে জীবন দিয়ে দিলো। পাখি এসে তাকে আহার হিসেবে ভক্ষণ করলো। সৃষ্টিকর্তা এভাবেই প্রত্যেক প্রাণীর রিযিক বণ্টন করেন। তিনি প্রাণীদের খাদ্যশৃংখলেও রেখেছেন এক বিস্ময়কর রহস্য। পৃথিবীটা সত্যিই রহস্যময়ম। পৃথিবী সৃষ্টির মতোই রহস্যময় পৃথিবীর সবকিছুই। কেমন যেন এক আবছায়া অন্ধকারের চাদরে মোড়ানো এই রহস্যময় জগতটা। সবকিছুই যেন রহস্যের জালে ঘেরা।” [৪
– কাওছার হাবীব
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৪৩