একটি পুরনো জোকসঃ
এক ছেলে কুমির ছাড়া অন্য কোন রচনা মুখস্ত করে নাই। কারন সে উপলব্দি করেছে যে কুমির রচনা মোটামুটি সব পরীক্ষায় কমন। তো সে পর পর কয়েকটি পরীক্ষায় কুমির রচনা লেখার পরে বিষয়টি বাংলা শিক্ষকের নজরে আসে। বাংলা শিক্ষক তাই পরবর্তী পরীক্ষায় কুমির রচনা না দিয়ে বরং গরু রচনা লিখতে দিলেন।
ছেলেটি লিখলঃ
গরু একটি গৃহপালিত প্রানী। এর চারটি পা, একটি লেজ, দুইটি কান আছে। গরু ঘাস খায়। কিন্তু কৃষক ভাই, ভুলেও গরু নদীর পাড়ে বাধবেন না। কারন ঐ নদীতে বাস করে পানির দানব কুমির। সে অত্যন্ত হিংস্র প্রানী। তার বিশাল বড় একটি মুখ আছে। সে অনেক শক্তিশালী। তার অনেক বড় একটি লেজ আছে। তার লেজে খাজ কাটা খাজ কাটা.........
শিক্ষক তো পড়লেন মহা বিপদে! এ কোন মসিবত? কোন ভাবেই তো এই ছেলেকে কুমির থেকে আলাদা করা যাচ্ছে না। অনেক ভেবে চিন্তে তাই তিনি পরবর্তী পরীক্ষায় দিলেন বাড়ি রচনা লেখার জন্য। তৃপ্তির হাসি নিয়ে শিক্ষক ভাবেন, যা ব্যাটা, দেখি এবার কিভাবে কুমির রচনা লিখিস।
পরীক্ষার খাতায় ছেলেটি লিখলঃ
বাড়ি আমাদের থাকার স্থান। সেখানে আমরা সবাই মিলেমিশে বসবাস করি। আমাদের সবারই থাকার জন্য বাড়ি দরকার। কিন্তু ভাই! ভুলেও কেউ তাদের বাড়ি নদীর পাড়ে তৈরি করবেন না। কারন, ঐ নদীতে বাস করে পানির দানব কুমির। সে অত্যন্ত হিংস্র প্রানী। তার বিশাল বড় মুখ। ......... খাজ কাটা খাজ কাটা...
এখনকার পরিস্থিতিও অনেকটা ঐ একটিমাত্র রচনা মুখস্ত করা ছেলেটির মত। ইস্যু যাই হোক না কেন সেখানেই "যুদ্ধাপরাধীদের বিচার" টেনে আনতে হবে।
লোকে বলে, " ভাই, এই যে ভারতের কোম্পানী এনটিপিসি, রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে অর্জিত মুনাফার সম্পূর্ণ অংশই বাংলাদেশ সরকারকে কর না দিয়ে দেশে নিতে পারবে, এমন চুক্তি করা কি সরকার এর উচিত হইছে?"..
তেনারা বলেন, “একাত্তরে ভারত বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে সরকার।“
লোকে বলে, ভাই, শেরপুরে শহীদ মিনার ভাঙতে যেয়ে ধরা পড়া যুবলীগ নেতাকে পুলিশ পাগল সাব্যস্ত করে ছেড়ে দিয়েছে।“
তেনারা বলেন, "ওতো পাগলই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে সরকার।"
লোকে বলে, “ ভাই, সে যদি পাগলই হবে তাহলে ছাত্রলীগ এর নেতা হল কিভাবে?"
তেনারা বলেন, “ ওতো পাগল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে সরকার।“
লোকে বলে, "ভাই, বিশ্বজিৎ কে দিনে-দুপুরে কিভাবে কুপিয়ে মারল ছাত্রলীগ এর কর্মীরা”
তেনারা বলেন, “ বিশ্বজিৎ এর খুনীরা ছাত্রলীগের কর্মী না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে সরকার”
লোকে বলে, “ ভাই, বিশ্বজিৎ এর শার্ট নিখোঁজ। কিন্তু এই মামলার সুষ্ঠু তদন্তে যা খুব দরকার ছিল”
তেনারা বলেন, “৭ জন আসামী ধরা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে সরকার”
লোকে বলে, “ ভাই, হলমার্ক, পদ্মা সেতু, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী, ...
তেনারা বলেন, “ থামেন। সংবাদ এর সময় হইছে। সংবাদ দেখতে হবে বাসায় গিয়ে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে সরকার। জানেন তো”
লোকে নিষ্পলক চেয়ে থাকে আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, “ হ ভাই জানি, আমরা সব জানি।"
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৪৮