somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছবিতে উত্তরবঙ্গ : প্রথম পর্ব- বগুড়া

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অফিসের কাজে ৫ দিনের সফরে গিয়েছিলাম উত্তরবঙ্গে। সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর আর দিনাজপুর মোট চারটি জেলা ঘুরে গতকাল রাতে ঢাকা ফিরলাম। কাজের ফাঁকে ফাঁকে যতটুকু পেরেছি দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঘুরে বেড়িয়েছি। বিভিন্ন জায়গার ছবি সঙ্গে অল্পবিস্তর বর্ণনা নিয়ে সাজিয়েছি চারপর্বের এই সিরিজটি। আজ থাকছে বগুড়া।

বেহুলা লক্ষিন্দরের বাসরঘর
গোকুল মেধ বা বেহুলা লক্ষিন্দরের বাসরঘর নামে পরিচিত এ প্রত্নতত্ত্ব স্থলটি ১৯৩৪-৩৬ সালে খনন করা হয়। খননের ফলে ১৭২ টি বদ্ধ প্রকোষ্ঠের সমন্বয়ে ১৩ মিটার উঁচু একটি মঞ্চের ধ্বংসাবশেষ অনাবৃত হয়।
খ্রিস্টিয় ৬-৭ শতকে এ মঞ্চের সমতল শিরদেশে একটি বৌদ্ধ উপাসনালয় স্থাপন করা হয়েছিলো । এরপর সেন আমলে ১১-১২ শতকে একটি বর্গাকৃতির শিব মন্দির নির্মাণ করা হয়।
খননের ফলে এ মন্দিরের কক্ষ তেকে প্রাপ্ত প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে- একটি নর কঙ্কাল, ইটের নির্মিত একটি গোলাকার গর্ত (৩.৮৮মিটার), একটি শিলাখন্ড, ষাঁড়ের প্রতৃকৃতি উৎকীর্ণ একটি স্বর্ণপত্র।







এই পাথরের নাম দুধ পাথর।


আবিস্কৃত মাটির গর্ত যা গোসলখানা ছিলো বলে ধারণা করা হচ্ছে

মহাস্থানগড়
প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের পুন্ড্রবর্ধনভুক্তির রাজধানী পুন্ড্রনগরীর সাক্ষী হচ্ছে মহাস্থানগড়ের এই ধ্বংসাবশেষ। এটি উত্তর-দক্ষিণে ১৫১৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ১৩৭০ মিটার প্রশস্ত। সমতল ভূমি থেকে গড় উচ্চতা ৫ মিটার। পর্যায়ক্রমে মৌর্য, গুপ্ত ও পাল শাসকদের প্রাদেশিক রাজধানী ছিলো এই পুন্ড্রনগর।
বিখ্যাত চীনা পরিব্রাজক হুয়েন সাঙ ভারবর্ষ ভ্রমণকালে (৬৩৯-৬৪৫) পুন্ড্র নগর পরিদর্শন করেন। ১৮৭৯ সালে বিখ্যাত বৃটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেক্সান্ডার কানিংহাম এ ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন । ১৯২৮-২৯ সালে পুন্ড্রনগরের প্রত্নতাত্ত্বিক খনন শুরু হয়। এ সময় নগরীরর ভেতের মুনীর ঘোন, বৈরাগী ভিটা ও বাইরে গোবিন্দ ভিটা আবিষ্কৃত হয়।পরবর্তীতে ২০০০ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমিক খননের ফলে মহাস্থানগড়ে পুন্ড্রনগরীর বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বেরিয়ে এসছে।







জিয়ৎ কুন্ড- কথিত আছে এই কূয়ার পানি নাকি মৃত সৈন্যদের জীবিত করে ফেলতে পারত


মানকালীর কুন্ড









গোবিন্দভিটা
খ্রিস্টীয় ১২-১৩ শতকে রচিত ‘করতোয়া মহাত্ম্য’-তে এ ভিটার ও এখানে নির্মিত একটি মন্দিরের কথা উল্লেখ রয়েছে। মন্দিরটি বিষ্ণু বা গোবিন্দ মন্দির নামে পরিচিত হলেও আদতে এটি বৈষ্ণব মন্দির কিনা তার প্রমাণ মেলেনি।
এ ভিটা সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৯২৮-২৯ সালে। আর প্রত্নতাত্ত্বিক খনন শুরু হয় ১৯৬০ সালে। খননের ফলে খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতক থেকে শুরু করে বিভিন্ন যুগের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন খুঁজে পাওয়া গেছে। এর মাঝে পুব আর পশ্চিমে দু’টি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ বিশেষভাবে উল্লেযোগ্য। মন্দির দুটি একটি মজবুত বেষ্টনী প্রাচীরের মধ্যে অবস্থিত যা শেষ গুপ্ত যুগ (৬ষ্ঠ শতক) থেকে মুসলমান যুগ পর্যন্ত চারটি পর্যায়ে বিভক্ত।


বগুড়া শহরটিকে ছিমছাম সাজানো গোছানো বলেই মনে হয়েছে। বেশ উন্নত শহর এই বগুড়া। ভালো হোটেলের মাঝে রয়েছে হোটেল নাজ গার্ডেন, পর্যটন মোটেল, নর্থওয়ে মোটেল, হোটেল সিরেস্টা, হোটেল মুন। দই এর জন্য বিখ্যাত হোটেল আকবরিয়া, শম্পা মিষ্টিঘর, মহররমের দই ঘর।

বগুড়ায় ঠ্যাঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের (টিএমএসএস) যে প্রতাপ দেখলাম তা সত্যিই প্রশংসনীয়। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, ক্যাফেটেরিয়া, সিএনজি ফিলিং স্টেশনসহ কী নেই টিএমএসএস এর!! ভাবাই যায় না একটা সাধারন সমবায় সমিতি আজ দেশের অন্যতম শক্তিশালী সংগঠন। বগুড়া শহরের নাম পাল্টে রাখা উচিত ঠ্যাঙ্গামারা। জয়তু টিএমএসএস! জয়তু প্রতিষ্ঠাতা ড. হোসনে আরা বেগম।


আমার যত ভ্রমণ ও ছবিব্লগ
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৩৭
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×