somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসার সেরা পাঁচ : হলিউড পর্ব

১৭ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভালোবাসার সেরা পাঁচ : বলিউড পর্ব
গত পর্বে বলিউডের সেরা ৫টি রোমন্টিক মুভির তালিকা দিয়েছিলাম। আজ আসুন দেখে নেই হলিউডে ভালোবাসার ছবির তালিকায় কোন ছবিগুলো প্রথম পাঁচটি স্থান দখল করে আছে। আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট তাদের একশ বছর পূর্তিতে এ তালিকাটি প্রকাশ করেছে। তলিকাটি ১৯২০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির মধ্যে করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ছবি পঞ্চাশ দশকের । এ সময়ের মোট ২১টি ছবি এই তালিকায় স্থান পেয়েছে। তালিকার ৬ থেকে ১০নং ছবিগুলো হলো-
৬. দ্য ওয়ে উই আর (১৯৭৩), ৭. ডক্টর জিভাগো (১৯৬৫), ৮. ইটস এ ওয়ান্ডারফুল লাইফ (১৯৪৬), ৯. লাভ স্টোরি (১৯৭০), ১০. সিটি লাইটস (১৯৩১)
এবার দেখা যাক প্রথম ৫টি ছবি-

১.ক্যাসাব্ল্যাঙ্কা (১৯৪২)

পরিচালক: মাইকেল কার্টিজ
অভিনয়: হামপ্রে বোগার্ট, ইনগ্রিড বার্গম্যান
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি একই সঙ্গে তুলে ধরেছে যুদ্ধ ও প্রেম। প্রেয়সীর প্রতি এক পুরুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসাই এ ছবিটির মূল উপজীব্য। ভালোবাসার মানুষটিকে কাছে পেলেই প্রেমের সার্থকতা প্রমাণিত হয়না। বরং প্রিয় মানুষটিকে নিরন্তর ভালোবেসে যাওয়া ও তার মঙ্গলের জন্য নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়ার মাঝেই প্রকৃত সুখ। এরই নাম প্রকৃত ভালোবাসা। ক্যাসাব্ল্যাঙ্কা দর্শক ও সমালোচক উভয় শ্রেণীর কাছে সমানভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ফলশ্র“তিতে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য বিভাগে চলচ্চিত্রটি অস্কার ছিনিয়ে নেয়। আর তাই তালিকায় সবার উপরে জ্বলজ্বল করছে ক্যাসাব্ল্যাঙ্কার নাম।

২.গন উইথ দ্যা উইন্ড (১৯৩৯)

পরিচালক: ভিক্টর ফ্লেমিং
অভিনয়: ক্লার্ক গ্যাবল, ভিভিয়ান লেহ
১৯৩৬ সালে প্রকাশিত মার্গারেট মিশেলের পুলিৎজার পুরষ্কার জয়ী উপন্যাস অবলম্বনে কালজয়ী এই চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়। এই ছবিটি অনেক দিক থেকেই হলিউডি চলচ্চিত্রে মাইলফলক। সবচেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যরে (প্রায় চার ঘন্টা) ও প্রথম অস্কার জয়ী রঙ্গিন চলচ্চিত্র হচ্ছে গন উইথ দ্যা উইন্ড। আমেরিকান গৃহযুদ্ধ ও তার পরবর্তী সময়কার চিত্র উঠে এসেছে চলচ্চিত্রটিতে। একজন নারীকে কেন্দ্র করে পরিচালক গৃহযুদ্ধের স্বরূপ খোঁজার চেষ্টা করেছেন। সেই সঙ্গে দেখিয়েছেন একজন নারীর সংগ্রাম, ভালোবাসা, স্বার্থপরতা, মমতা সহ মানবীয় সকল দোষ আর গুণাবলীকে। এই চরিত্রে ভিভিয়ান লেহ অসামান্য অভিনয় দেখিয়েছেন। আর ক্লার্ক গ্যাবলের সেই ঐতিহাসিক সংলাপ ‘ফ্রাঙ্কলি মাই ডিয়ার, আই ডোন্ট গিভ এ ডেম’। এ সংলাপটিকে সমালোচকরা স্বীকৃতি দিয়েছে সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্র সংলাপের। ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য সহ মোট দশটি বিভাগে অস্কার জয় করে।

৩.ওয়েস্ট সাইড স্টোরি (১৯৬১)

পরিচালক: জেরোম রবিন্স ও রবার্ট ওয়াইজ
অভিনয়: নাটালি উড, রিচার্ড বেইমার
উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের কালজয়ী প্রেমের নাটক ‘রোমিও জুলিয়েটের’ মিউজিক্যাল ভার্সন হচ্ছে এ চলচ্চিত্রটি। ১৯৫৭ সালে শেক্সপীয়রের লেখা থেকে ব্রডওয়ে মিউজিক্যাল নির্মাণ করা হয়। পরে যা চলচ্চিত্রে রূপ দেন রবিন্স আর ওয়াইজ। চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ পরিচালকসহ মোট দশটি বিভাগে অস্কার জয় করে। শুধু রোমান্টিক মুভি হিসেবে নয় মিউজিক্যাল সিনেমা হিসেবেও অনেক চলচ্চিত্র বোদ্ধাই ওয়েস্ট সাইড স্টোরিকে সবার উপরে স্থান দিয়েছেন।

৪.রোমান হলিডে (১৯৫৩)

পরিচালক: উইলিয়াম ওয়াইলার
অভিনয়: গ্রেগরি পেক, অড্রে হেপবার্ন
এক রাজকুমারী ইউরোপে কূটনৈতিক সফরে এসে প্রেমে পড়ে যান অখ্যাত এক সাংবাদিকের। সাংবাদিক ছেলেটি প্রথমে রাজকুমারীর ভালোবাসাকে তার ক্যারিয়ার গড়ার হাতিয়ার হিসেবে নিলেও পরক্ষণেই বুঝতে পারে সে সত্যিকার প্রেমে পড়েছে। আর রাজকুমারী উপলব্ধি করেন তার নিজের জীবনে ব্যক্তিগত বলতে কোন বিষয় নেই, সে নি:সঙ্গ- একাকী এক বালিকা যে সদ্যই তার যৌবনে প্রবেশ করেছে। এ জীবন সে চায়না। সাধারন মানুষ হিসেবে সে বাঁচতে চায়, আর দশটা সাধারন মেয়ের মত প্রেমে পড়তে চায়, সংসার করতে চায়। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আর নিজের দায়িত্ববোধকে সে অবহেলা করতে পারেনা। মাত্র একটি দিন আর একজন মানুষের সংস্পর্শ তার জীবনকে বদলে দেয়, নতুন করে ভাবায়। চমৎকার হিউমার সমৃদ্ধ দৃশ্যায়ন দর্শককে যেমন হাসায় আর তেমনি শেষের ট্র্যাজেডি কাঁদিয়েছে অগণিত দর্শককে। ছবিটিতে গ্রেগরি পেক ও অড্রে হেপবার্নের যে রসায়ন তা এত যুগ পরও মনে হয়না কোন ছবিতে এত নিবিড়ভাবে ধরা পড়েছে। এ ছবিতে অড্রে হেপবার্ন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর অস্কার পুরষ্কার জিতে নেন।


৫.অ্যান অ্যাফেয়ার টু রিমেমবার (১৯৫৭)

পরিচালক: লিও ম্যাককেরেই
অভিনয়: ক্যারি গ্রান্ট , ডেবোরাহ কার
সমুদ্র বিহারে গিয়ে জাহাজে দেখা হয় নিকি আর টেরির। তারা প্রত্যেকেই অন্য আরেকজনের সঙ্গে আবদ্ধ। কিন্তু আকস্মিক দুটি মানুষের মাঝে পরিচয় তাদের নিজেদেরকে নতুন করে আবিষ্কার করতে শেখায়। পরষ্পরের আবিষ্টতায় ভালোবাসার বান ডেকে যায়। সিদ্ধান্ত নেয় ছ’মাস পর তারা দেখা করবে এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ে। সেদিন নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হলেই ভালোবাসার পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হবে। কিন্তু তাদের জন্য অপেক্ষা করছে চমক!

___________________________________________
উৎসর্গ: ভালোবাসার সেরা পাঁচ হলিউড ও বলিউড পর্ব শেলী বেলী' র নামে
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৪৩
৩৭টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×