টাইম সাময়িকী চলতি বছরের সেরা ১০টি ছবির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় সব ধরনের মুভিরই সুসন্নিবেশ বিশেষভাবে পরিলক্ষিত। চলুন সংক্ষেপে দেখে নেই।
১. দ্য আর্টিস্ট
ত্রিশের দশকে নির্বাক চলচ্চিত্রের একজন খ্যাতিমান তারকার ক্যারিয়ার সবাক চলচ্চিত্র বা টকির আগমনে হুমকির মুখে পড়ে। এমন সময় তার প্রণয় হয় এক উঠতি অভিনেত্রীর সঙ্গে। যাকে নিয়ে নতুন করে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেন। ফরাসি নির্মাতা মাইকেল হাজানাভিকিয়াস পরিচালিত ১০০ মিনিটের এ সাদাকালো ছবিটি ফিরিয়ে নিয়ে যাবে চলচ্চিত্রের যুগসন্ধিক্ষণে। ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে ফরাসি অভিনেতা জিন ডুজারডিন এবারের কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন।
২. হুগো
অস্কারজয়ী নির্মাতা মার্টিন স্করসিসের ফ্যান্টাসীধর্মী ত্রিমাত্রিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র 'হুগো'। ব্রায়ান সেলজনিকের শিশুতোষ গ্রন্থ 'দ্য ইনভেশন অব হুগো কর্বেট' নামক থেকে এটি তৈরি হয়েছে। পিতৃ-মাতৃহীন বালক হুগো পিতার লালিত স্বপ্ন নিজের মধ্যে ধারণ করে। অদ্ভুত এক যন্ত্র বানাতে চায় হুগো । জন্ম দেয় চলচ্চিত্রে নতুন এক প্রজন্মের। ধারণা করা হচ্ছে এটি মার্টিন স্করসিসের অটোবায়োগ্রাফিক্যাল চলচ্চিত্র।
৩. ডিটেকটিভ ডি অ্যান্ড দ্য মিস্ট্রি অব দ্য ফ্যান্টম ফ্লেম
সাত শতকের চীনের কাহিনী। নতুন সম্রাজ্ঞীর অভিষেকের আগে একের পর এক ঘটতে থাকে সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কিছু মানুষের মৃত্যু। চিন্তিত সম্রাজ্ঞী বন্দি ডিটেকটিভ ডি কে ফিরিয়ে আনে তদন্তের জন্য। এই সেই ডিটেকটিভ ডি যাকে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে আটবছর আগে জেলে পুরেছিলেন সম্রাজ্ঞী। চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের ধারনা ক্রাউচিং টাইগার হিডেন ড্রাগন এর পর আরেকটি চায়নিজ মাস্টারপীস।
৪. দ্য ট্রি অব লাইফ
টেরেন্স ম্যালিক পরিচালিত ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের সম্মানজনক পাম ডি'ওর পুরস্কারপ্রাপ্ত। এতে অভিনয় করেছেন ব্রাড পিট ও শন পেনের মতো তারকারা। ১৯৫০ সালে টেক্সাসের এক পরিবারের জীবনের বাঁকে বাঁকে চাওয়া-পাওয়া, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার গল্প।
৫. ওয়ার হর্স
মাইকেল মরপারগোর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে লেখা 'ওয়ার হর্স' গ্রন্থ অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন স্টিভেন স্পিলবার্গ। ইংল্যান্ডের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ শ্রমিক আলবার্টের খামার ও কৃষিকাজে সাহায্যকারী ঘোড়া জোয়ি। জোয়ি আলবার্টের কাছে ঘোড়ার চেয়েও বেশি কিছু। কিন্তু যুদ্ধ তাদের বন্ধুত্বে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। জোর করে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য জোয়িকে নিয়ে যাওয়া হয়। আর বন্ধুকে বাঁচাতে যুদ্ধে যোগদান করে আলবার্ট। ওয়ার হর্স চলচ্চিত্রটি যুদ্ধ আর মানবতার চেয়েও অনেক বেশি বন্ধুত্বের।
৬. সুপার এইট
জে জে আব্রামস পরিচালিত ও স্টিভেন স্পিলবার্গ প্রযোজিত কল্পবিজ্ঞানধর্মী ছবি । ১৯৭৯ সালের ওহাইওর এক ছোট শহরে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে উধাও হতে থাকে শহরবাসী। জড়িয়ে পড়ে কিছু দুরন্ত কিশোরের দল।
৭. কেইভ অব ফরগটেন ড্রিমস
ওয়ার্নার হার্জগের ত্রিমাত্রিক প্রামাণ্যচিত্র। ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের একটি গুহায় আবিষ্কৃত হয় খোদাই করা চিত্রকর্ম। গবেষকদের দাবি, চিত্রকর্মগুলোর বয়স ত্রিশ হাজার বছর!
৮. রাইজ অব দ্য প্ল্যানেট অব দ্য এপস
এপস নিয়ে এর আগে চলচ্চিত্র তৈরি হলেও এবারের পর্বটি ছিল একেবারেই ব্যতিক্রম। গবেষণাগারে পরীক্ষা চালানোর সময় একটি বাচ্চা শিম্পাঞ্জির মধ্যে বুদ্ধিমত্তার পরিবর্তন ঘটে এবং শিম্পাঞ্জিটি বেড়ে ওঠে মানুষের মতো, মানুষের পরিবারে। কিন্তু অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তাকে ফিরে যেতে হয় শিকড়ে। পরিচালক রুপার্ট ওয়াট। অভিনয়ে জেমস ফ্রাঙ্কো ও ফ্রিডা পিন্টো।
৯. র্যাঙ্গো
টাইমের তালিকায় বরাবরই অ্যানিমেশন ছবিগুলো প্রাধান্য পায়। গত বছর তাদের তালিকায় 'টয় স্টোরি থ্রি' ছিল শীর্ষে। এবার সেরা দশে ঠাঁই করে নিয়েছে এ ছবিটি। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন জনি ডেপ।
১০. ফাস্ট ফাইভ
'ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস' সিরিজের পঞ্চম ছবি এটি। ধুন্ধুমার অ্যাকশন আর চোখ ধাঁধানো ড্রাইভিং স্কিল দিয়ে দর্শক ও সমালোচকদের মন জয় করেছে জাস্টিন লিন পরিচালিত ছবিটি। এতে বরাবরের মতো অভিনয় করেছেন ভিন ডিজেল ও পল ওয়াকার। তাদের পাশাপাশি এ পর্বে যোগ দিয়েছেন 'দ্য রক' খ্যাত ডোয়ায়েন জনসন।
***পরবর্তী পর্ব : আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউটের (এএফআই) চোখে ২০১১ সালের সেরা দশ চলচ্চিত্র***
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:৪৪