অনেক অনেক দিন আগের কথা।কোন এক গ্রামের ছোট্ট এক পুকুরে বাস করিত একটি কোলা ব্যাঙ।গ্রামের শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশে বেশ ভালই কাটিতেছিল তাহার জীবন।পুকুর পারের গ্রাম্য মেঠো পথ ধরিয়া সারাদিন নানা রকমের মানুষের আনাগোনা।তাহাদের নানাহ আলোচনা মনযোগ দিয়া শুনিতেন ব্যাঙ মহাশয়।আর এই ভাবেই গল্প শুনিতে শুনিতে একদা তাহার মনে এই ধারনা জন্মাইল যে, গ্রামের পাশেই আশ্চর্য এক জায়গা আছে যাহার নাম হইল শহর।কি তাহার শানশওকত ! কি তাহার গরিমা ! কোলা ব্যাঙের সাধ জাগিল জীবনে অন্তত একবারের জন্য হইলেও শহর নামক জায়গাটিকে দেখিবে।
অনেক চিন্তা ভাবনার পর একদিন শুভ মূহুর্তে ব্যাঙ মহাশয় তাহার প্রিয় ডেরা ছাড়িয়া রাস্তায় নামিলেন- উদ্দেশ্য শহর দর্শন।যাত্রার সময়টা ছিল রাত, কারন দিনে মানুষের নজর এড়াইয়া চলিবার উপায় নাই।তদোপরি আছে নানা শত্রু আক্রমনের ভয়।রাতভর বেচার কখনো লাফাইয়া কখনো হাটিয়া গ্রামের শেষ প্রান্তে উপস্থিত হইল।
পূর্নিমার চাঁদ আস্তে আস্তে অস্তমিত হইল।পুব আকাশে ভেোরের আলো প্রকাশ পাইতে লাগিল।বুদ্ধিমান ব্যাঙ মহাশয় ভাবিলেন অনেক দূরেতো অসিয়াছি এইবার নিশ্চয়ই শহর দেখা যাইবে।এই ভাবিয়া তিনি চার পা খাড়া করিয়া, মাথা উচু করিয়া সম্মুখ পানে তাকাইলেন।কিন্তু হায় এ কি দেখিলেন তিনি ! শহরতো একদমই তাহার নিজ গ্রামের মতো !!! বেচারা ব্যাঙ মনোকস্ট নিয়া ফিরতি পথ ধরিল।
** প্রিয় পাঠক গল্পটি এখানেই শেষ।বলতে পারেন এত কস্টের পর শহরের এত কাছে এসেও কেন বেচারার শহর দর্শন হলো না ? ঠিক ধরেছেন।ব্যাঙের চোখ থাকে মাথার ওপর।বেচার যখন চার পা উঁচু করে মাথা তুলে শহর দেখতে গেল অমনি তার দৃস্টি গেল ঘুরে পিছনের দিকে।তাই সামনের শহরের বদলে সে আসলে দেখেছিল পিছনে ফেলে আসা নিজ গ্রামটিকেই ।
*** ফুটনোট : চোখ থাকলেই সবাই সব কিছু দেখতে পায় না। দেখার জন্য চোখের/দৃস্টির ব্যবহারও জানতে হয়।
### আমার এই গল্পের সাথে কোন প্রানীর আফ্রিকা দর্শনের দূরতম সম্পর্কও নেই।থাকলে তা নিতান্তই কাক+তাল।। [
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৪০