somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম লীগের স্বেচ্ছাচারীতা

১০ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উপমহাদেশের উত্তর - পশ্চিমাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চল নিয়ে একটি মাত্র মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের চিন্তায় বিভোর ছিলেন। ১৯৪০ সালে সেই লক্ষ্যে "লাহোর প্রস্তাব " উত্থাপন করেন তিনি। এই লাহোর প্রস্তাব হলো পাকিস্তান গঠনের প্রধান উদ্যোগ যার কারণে মুসলিম লীগ এই প্রস্তাব কে পাকিস্তান প্রস্তাব বলে চালিয়ে দেয়। অন্যদিকে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক চাচ্ছিলেন যেহেতু ভারত উপমহাদেশের উত্তর - পশ্চিমাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চল দুটো অঞ্চল ই মুসলিম অধু্যষিত অঞ্চল কিন্তু দুটো অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থান, ভৌগোলিক অসামঞ্জস্যতা, ভাষাগত পার্থক্য, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক ভিন্নতার কারনে দুটো অঞ্চল দুটো রাষ্ট্র হোক৷ কিন্তু মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ একটি রাষ্ট্র গঠনে মরিয়া ছিলেন এবং শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের বক্তব্য কে মুদ্রন জনিত ভুল বলে চালিয়ে দেন। অন্যদিকে জিন্নাহ, নেহরুর রিপোর্টের উপর নির্ভর করে "দ্বিজাতিতত্ত্ব " প্রনয়ন করে৷ যার ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্ম হয়, একটি মুসলিম রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

ব্রিটিশ ভারতের মুসলিম জনগনের বঞ্চনা, দুঃখ দেখে তাদের জনকল্যাণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকায় ১৯০৬ সালের ভারতীয় মুসলিম লীগ। এই দলটি প্রতিষ্ঠা লাভের পর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস হতে সকল মুসলিম সদস্য মুসলিম লীগে অংশগ্রহণ করে শুধু মাত্র মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ব্যাতিত। আজাদ সাহেব পরবর্তী তে কংগ্রেসের প্রথম মুসলিম সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। মুসলিম লীগ পরবর্তী তে অবাঙ্গালী মুসলমানদের পকেটস্থ হয় এবং বাংলা তথা ঢাকার মুসলমানরা পুনরায় উপেক্ষার পত্রে পরিনত হয়। এমতাবস্থায় শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক বাঙ্গালী গরীব ও মজলুম জনগনের কথা চিন্তা করে প্রতিষ্ঠা করেন " কৃষক - প্রজা দল " যদিও এই দলটি বাঙ্গলার বাইরে তেমন সারা ফেলে নি।

ভারত ভাগের আগের বছর ১৯৪৬ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় যেখানে ১১৯ টি আসনের মধ্যে ১১৪ টা আসন পায় মুসলিম লীগ এবং বাকি ৫ টি আসন পায় কৃষক প্রজা দল। এই নির্বাচনের মাধ্যমে অবিভক্ত স্বাধীন বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং আবুল হাশিম চাচ্ছিলেন বাংলা অবিভক্ত থাকুক অন্যদিকে খাজা নাজিমুদ্দিন এবং আকরাম খাঁ চাচ্ছিলেন বাংলা ভেঙ্গে যাক। সোহরাওয়ার্দী - হাশিমের বিশ্বাস ছিল অবিভক্ত বাংলার অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাংলার জনগনের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক কল্যাণ সাধিত করবে কিন্তু মুসলিম লীগের হাইকমান্ড সমর্থন করেন নাজিমুদ্দিন - আকরাম খাঁ কে। ১৯৪৭ সালে ২৭ শে এপ্রিল সোহরাওয়ার্দী এবং সুভাষ চন্দ্র বসুর বড়ভাই শরৎচন্দ্র বসু অবিভক্ত বাংলার প্রস্তাব উত্থাপন করে যা ইতিহাসে "সোহরাওয়ার্দী -বসু প্রস্তাব " নামে খ্যাত। সোহরাওয়ার্দী - বসুর সাথে ছিলেন মুসলিম লীগ নেতা আবুল হাশিম, কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্র মোহন ঘোষ, কিরণ শঙ্কর রায়, ছাত্র যুব নেতা শেখ মুজিবুর রহমান এবং আরো অনেকে। অন্য দিকে হিন্দু মহাসভার নেতা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বাংলা বিভক্তির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ও বাংলা বিভক্তি অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায় এবং বিভক্ত হয়ে যায়।

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৪৬
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×