
১। জীবনে প্রথমবার কক্সবাজার গেলাম। তখন সুগন্ধাবিচ ছিল কক্সবাজারের প্রান কেন্দ্র। সিগ্যাল ছিল কক্সবাজারের সেরা হোটেল। এখনকার মত হোটেল, গেস্ট হাউজ, রেস্টুরেন্টে এতসব ছিল না। যাইহোক, সিগ্যালের ঠিক পাশের হোটেলে উঠছি। নাম ঠিক মনে পড়ছে না, ভাড়া সিগ্যাল থেকে অনেক কম। হোটেলের নিজস্ব একটা সুইমিং পুল ও আছে কিন্তু পুলে কোন হিটিং সিস্টেম নাই। শীতকাল থাকাতে পুলে একটু "হই হুল্লোড়" করতে কিছুটা কষ্ট হইছে। হোটেলের আউটডোর এরিয়াতে সাপ্তাহে একদিন হরেক রকম "স্যি ফুড" নিয়ে খাবারের পসড়া বসতো। প্রথম ক্রেব এইখানে খাইছি, খুবই বিরক্তিকর প্লাস-কাটার দিয়ে কেটে খাইতে। খুব বেশি ভাল লাগে নাই। হোটেলে সকালে কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট! ৯.৪০ লাস্ট কল!!! ডাইনিং বসে ব্রেকফাস্ট করছি সকালে। হোটেলে হালকা সাউন্ডে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজছে। সকাল-সকাল রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতেই মনটা বেশ প্রফুল্ল লাগছিল।
২। প্রথম ইন্ডিয়া ভ্রমন ২০১৬ সাল। প্রথম বাকেট লিষ্টে ই ছিল গোয়া! ভারতকে যেমন সস্তায় স্ট্রিটের ফুডের স্বর্গ বলে জানতাম গোয়া তার পুরাই ব্যাতিক্রম। একটা সিংড়ারা দাম ২০ রুপি ওই সময়!!!!এয়ারপোর্টে থেকে গোয়ার পানজি (মুল শহরে) গেলাম ১৩ কিলোমিটার দূরে ৮০০ রুপি ট্যাক্সি ভাড়া, কোন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নাই। খরচের বাইরে গোয়া চমৎকার বেশ উপভোগ্য ও পরিচ্ছন্ন একটি শহর। গোয়ার ছেলে-মেয়েরা বেশ প্রগেসিভ। রাতে বিয়ার হাতে ফুটপাতে বসে একসাথে আড্ডা মারে, ক্লাবিং করে। গোয়া থেকে কলকাতা ফিরবো ট্রেনে করে। গোয়া টু পুনে, পুনে টু কলকাতা। গোয়া থেকে পুনে নিলাম এসি স্লিপার ক্লাস। এত সুন্দর পাহাড় এর মধ্যে রেলের ট্রেক বানানো, ব্রিজ, সাইট সিং ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারিং এর এক অন্যবদ্য নিদর্শন। এরপর অর্থকষ্টে পুনে থেকে কলকাতা নন এসি এভ্যারেজ সিটিং সিটে আসলাম। জীবনে যে কি, ভয়াবহ ১৮টা ঘন্টা পার করছি না বললে বিশ্বাস করবেন না!!! আবারো সেই সকালেই কলকাতায় নামার কয়েক ঘন্টা পুর্বে মোবাইলে এক ভদ্রলোক গান শুনছেন-
"মঙ্গল দ্বীপ জ্বেলে
অন্ধকারে দুচোখ আলোয় ভরো প্রভু
তবু যারা বিশ্বাস করে না তুমি আছো
তাদের মার্জনা করো প্রভু
মঙ্গল দ্বীপ জ্বেলে"
অন্ধকারে দুচোখ আলোয় ভরো প্রভু
তবু যারা বিশ্বাস করে না তুমি আছো
তাদের মার্জনা করো প্রভু
কলকাতার মানুষগুলো বেশ সংস্কৃতি পরায়ন। পুজা-পাঠ, গান-বাজনা, রবীন্দ্রনাথ তাঁদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। এই গানটি শুনতে ও কিন্তু বেশ লাগছিল।

৩। সর্বশেষ গতবছর দুর্গাপূজার কয়েকদিন পুর্বে আবারো ভারত গেলাম। কলকাতার প্রান কেন্দ্র নিউ মার্কেট বাংলাদেশী পর্যটক একদম ফাঁকা। যেসব হোটেল রুম আগে ৪-৫ হাজার রুপির নিচে পাওয়া যেত না, হোটেল মালিক কয় দাদা ১২০০ রুপি দিয়েন যত দিন মন চায় থাইকেন, তা আবার এসি ডাবল রুম উইথ ওয়ান কুইন সাইজ বেড আর এ আমি একা মানুষ।
দিনের বেলা প্রচন্ড গরম আর নিউমার্কেটে এলাকায় পুজার কিনা-কাঁটা মানুষের পা ফেলার জায়গা পর্যন্ত নেই। নিউ মার্কেট এলাকার একটি পুজা মন্ডবের উচ্চতা দেখলাম প্রায় ৪-৫ তলা সমান। পুজা উপলক্ষে প্রায় সব শপিং মল দোকান গুলোতে একটি গান বাজছে। এটাই মনে হয় পুজার বা উৎসবের গান-
"আর কত রাত একা থাকবো
আর কত রাত একা থাকবো
আর কত রাত একা থাকবো
আর কত রাত একা থাকবো
চোখ মেলে দেখবো না তোমাকে
স্বপ্নের রঙ্গে ছবি আঁকবো ও ও ও..
চোখ মেলে দেখবো না তোমাকে
স্বপ্নের রঙ্গে ছবি আঁকবো
আর কত রাত একা থাকবো
আর কত রাত একা থাকবো"
গানটি শুনে শুনে বেশ মনে ধরে যায়। আমার প্লে লিস্টে ছিল কিছুদিন। খোঁজ নিয়ে দেখলাম ইহা ৯০ এ "আসা বোসলের" বিখ্যাত একটি গান। সাথে ছিল ৯০ লাস্যময়ী নায়িকা কলকাতার দেবশ্রী রায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০২৫ রাত ১২:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



