ব্যক্তিস্বার্থ এবং জনস্বার্থের মাঝে দলোস্বার্থ
----------------------------------------------------
গণপিটুনিদাতা নিরস্ত্র জনসাধারণের ওপর আমরা এজন্যেই আস্থা রাখতে পারি যে, জনগণ কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেয় না। এমনকি, ব্যক্তির ছোটোখাটো দোষত্রুটিকে জনগণ ধৈর্য ধ’রে সহ্য করতে পারে। যারা গণপিটুনিতে পড়বার মতো অপরাধী, তারাও ভালো হ’য়ে যাবার শর্তে ক্ষমা চাইলে সাধারণের ক্ষমা পেয়ে যায়- এজন্যেও আমরা জনসাধারণের ওপর বিশ্বাসী হ’তে পারি।
ব্যক্তি এবং জনগণ- এ দু’য়ের মাঝখানেই দলোগণের অবস্থান। প্রত্যেক দলোজীবী তার দলীয় স্বার্থকেই রক্ষা ক’রে যেতে বাধ্য, তাই, দলোগণের কাছ থেকে একক ব্যক্তিস্বার্থে বা সার্বিক জনস্বার্থে আমরা কিছুই আশা করতে পারি না। জনপ্রতিনিধিরা জনস্বার্থের বাইরে কিছুই করতে পারবে না- এমন শর্তে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকেও দলোস্বার্থ রক্ষাতেই ব্যতিব্যস্ত থাকতে দেখেছি আমরা। জনস্বার্থের বাইরে গিয়ে দলোস্বার্থকেই রক্ষা করেছে তারা তাদের দলোগণের চাপে প’ড়ে অথবা স্বেচ্ছায়।
দলগুলোর বাধা না-থাকলে তারা নিরাপদেই জনস্বার্থ রক্ষা করার দায়িত্বটুকু পালন ক’রে যেতে পারতো। জনপ্রতিনিধি হিসেবে থাকা অবস্থায় কেহ তার দলীয়দের সাথে কোনো সংযোগ বা সম্পর্ক রাখতে পারবে না, কোনো জনপ্রতিনিধি কোনো দলীয় সমাবেশে গেলেই সে তার জনপ্রতিনিধিত্বের দায়িত্বের আসনটি হারাবে- এমন বাধ্যবাধকতা না-থাকলে দলীয়দের শক্তি দেখানোর সুযোগ থেকেই যায়। দলোগণের সুযোগের শক্তির টানে জনপ্রতিনিধিরা জনস্বার্থকে ডিঙিয়ে দলোস্বার্থ রক্ষা করবে, এমনকি গণঘৃণিত হ’য়ে গণপিটুনির শিকারে পরিণত হবার ঝুঁকি নিয়েও জনপ্রতিনিধিরা তাদের দলোস্বার্থই রক্ষা করবে- এটাই স্বাভাবিক।
দল এবং দলান্ধ-দলজীবী-দলোগণ-এর দলীয় প্রভাব থেকে জনপ্রতিনিধিগণকে মুক্ত রাখতে সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে যেই রাষ্ট্রগুলোর সচেতন নিরস্ত্র জনসাধারণ, তাদের রাষ্ট্র তাদেরকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা দিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে এবং তারাই জগৎ-সংসারে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার এবং অধিকারী হ’তে পেরেছে।
--------------------------------------------------------------------
দর্শক : আখতার২৩৯
##### ২৭/০১/২০১৮খ্রি:
ব্যক্তিস্বার্থ এবং জনস্বার্থের মাঝে দলোস্বার্থ
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৫৭