somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ড. ইউনূসের জাতীয় ঐক্যের ডাকে কাদের জায়গা হলো, কারা বাদ পড়লেন?

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসেন নোবেল জয়ী ড. ইউনূস! দেশের মানুষের মধ্যে এক ধরণের আশার সঞ্চার হয়েছিল যে এইবার বুঝি যোগ্য ব্যক্তির হাতে দেশ শাসনের দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেল। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের তিন মাস পর দেশি ও বিদেশি চক্রান্তের কারণে ড৷ উউনূসের নেতৃত্বাধীন ইন্ট্রাম সরকারের কার্যক্রম নিয়ে মানুষের মধ্যে একধরণের হতাশা কাজ করছে। ইন্ট্রাম সরকারের কতিপয় উপদেষ্টা দের নিয়ে সোশ্যাল ইনফ্লুয়েঞ্জা রা নানা ধরণের অপতথ্য ছড়িয়ে তাদের ইমেজ খারাপ করবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এর পাশাপাশি দেশের মধ্যে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ইন্ট্রাম সরকারের দূরত্ব বৃদ্ধি ও ইন্ট্রাম সরকারের প্রধান শক্তি ছাত্র-জনতার মধ্যে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যারা এই ইন্ট্রাম সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন তাদের মধ্যে অনৈক্য দেখা দেওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়া হয়। বাংলাদেশের ছোট বড়ো অনেক রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐক্যে অংশ নিলেও নিবন্ধিত অনেক রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐক্যে অংশ নেয়নি। তাছাড়া অনেক রাজনৈতিক দলের একাধিক সদস্যা ড. ইউনূসের সাথে ফটোসেশনে ছিলেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি( এরশাদ) কে জাতীয় ঐক্যের ডাক থেকে বাইরে রাখা হয়েছে। কারণ হিসাবে বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টির সমন্বয়ে এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকাকে দায়ী করা যেতে পারে । যাই হউক মোটামুটি ধরে নেয়া যায় এন্টি আওয়ামী লীগ একটি প্লাটফর্ম দাঁড় করানো জাতীয় ঐক্যের ডাকের প্রধান উদ্দেশ্য হিসাবে ভাবলে ভুল হবে না। কিন্তু ইহাতে নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক দল এলডিপির সভাপতি কর্ণেল অলি ও মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ কে জাতীয় ঐক্যে আমন্ত্রণ জানানো হলেও গেস্ট লিস্টে তাদের নাম না থাকায় ফিরে যেতে হয়। জাতীয় ঐক্যের ডাকে কয়টি রাজনৈতিক দল কে ডাকা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। যেসব রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐক্যের ডাকে ড. ইউনূসের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন সেগুলো হলো :- বিএনপি-জামাত জোট , জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাসদ (খালেকুজ্জামান), জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, সিপিবি, খেলাফত মজলিশ, ইসলামী আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ইনসানিয়াত বিপ্লব, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বাংলাদেশ-জাসদ, এবি পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য ও গণসংহতি আন্দোলন।

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি বাদে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত যে দলগুলোকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, সেগুলো হলো- জাকের পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), ওয়ার্কার্স পার্টি, সুপ্রিম পার্টি, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, ত্বরিকত ফেডারেশন, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, গণফ্রন্ট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জাতীয় পার্টি-জেপি (মঞ্জু), কল্যাণ পার্টি, বিকল্পধারা, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, মুসলিম লীগ-বিএমএল এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ।

বর্তমানে নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন প্রাপ্ত দলের সংখ্যা ৪৮ টি। আওয়ামী লীগ সহ ১৪ দল কে জাতীয় ঐক্যের ডাক থেকে বাদ দিলেও বাকি সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা কেন সম্ভব হয়নি এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে কোন ব্যাখ্যা জানানো হয় নি। জাতীয় ঐক্যের ডাকে সব দলের অংশগ্রহণ না থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা ধরণের আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এতে জাতীয় ঐক্যের সফলতা নিয়েও অনেকের মনে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে।

দেশে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বেশ চাপে রয়েছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ইন্ট্রাম সরকার। অনির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য গঠিত এ সরকারের জাতীয় নির্বাচন আয়োজন কবে নাগাদ করতে পারবেন, এ নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্যে নিয়মিতই হতাশা ব্যক্ত করে বিএনপিসহ কয়েকটি দল। এ নিয়ে ইউনূস সরকারের সমর্থক দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। একইসাথে দেশের অভ্যন্তরীণ নৈরাজ্য সামাল দিতেও হিমশিম খাচ্ছে সরকার।

ইন্ট্রাম সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনে ব্যবস্থা করার পরিবর্তে দীর্ঘ মেয়াদি দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে যা বিস্ময়কর! এই সরকারের সাংবিধানিক বৈধতা না থাকায় এটি নির্বাচিত সরকারের মতো সরকারি কার্য পরিচালনা করতে পারছে না। অন্যদিকে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত পরাজিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র চলতেই থাকবে। তাই সকল রাজনৈতিক দল মিলে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে ইন্ট্রাম সরকার কে সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করার জন্য জোর করা প্রয়োজন!

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১০
১৫টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বই মলাট দেওয়ার সেই সময়গুলো ....

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৬



ছবি কার্টেসী Atick Arts

আজকে ফেসবুকে উপরের ছবিটা চোখে পড়ল আজকে। পুরোনো সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল। আগে আমাদের নতুন বছর শুরু হত ঠিক এই ভাবেই। স্কুল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শুটকি মাছ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:২০







কারোয়ান বাজারে ভাবী আমায় বললেন দুপুরে খেয়ে যাও , শুটকি মাছ রান্না করেছি । পেটটা গুলিয়ে গেলো । ভাবী বললেন পারবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ডানপন্হীরা ক্ষমতা দখল করেছে এবং আরো করবে!

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৭



বিশ্বব্যাপি ট্রাম্প সিন্ড্রোম দেখা দিয়েছে: আমেরিকা, ইতালী, ফ্রান্স, জার্মানী, দ: কোরিয়া ও পুরো ইউরোপে ডানপন্হীরা ক্ষমতা দখল করেছে, কিংবা করবে। শুধুমাত্র ভারত ভালো দিকে যাচ্ছে ক্রমশ, মোদীর দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জেনারেশন-৭১' নিকের উপর থেকে সকল প্রকার ব্যান উঠিয়ে নেয়া হউক

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:২৬


সোনাগাজী/ফারমার/চাঁদগাজী/খেলাঘর কে চিনেন না এমন একজন ব্লগার সামুতে আছেন কিনা সন্দেহ আছে। বর্তমানে তিনি পূর্বের সকল নিক ব্যান খেয়ে জেনারেশন-৭১ নিকে ব্লগিং করছেন। তিনি সামুর একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিরক্তিকর মানুষ চেনার উপায়

লিখেছেন জটিল ভাই, ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৫৮

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে)

“বিরক্তিকর”... ...বাকিটুকু পড়ুন

×