
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ইসরায়েল ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা মেনে নিয়ে যুদ্ধবন্দী দের মুক্ত দিচ্ছে। অন্যদিক্ব হামাস ইসরায়েলি দের মুক্তি দিচ্ছে। এই যুদ্ধবিরতি কেন ইসরায়েল সহজে মেনে নিয়েছিলো তা আস্তে আস্তে বোঝা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য থেকে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার ধ্বংসস্তুপ পরিস্কারের অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের মিশর ও জর্ডানে পাঠিয়ে দিতে চান। তিনি মিশর ও জর্ডানে ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণ ও স্বাভাবিক জীবনে ফেরত যেতে সহযোগিতা করতে চান। ট্রাম্পের এই ধরণের বক্তব্য যেন ইসরায়েলের অনেক দিনের অভিপ্রায় কে প্রকাশ্যে এনেছে। সংস্কারের নামে গাজা দখলে নিতে চায় ইসরায়েল। আর তার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ধরণের প্রস্তাব রেখেছেন। ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল মিশর ও ফিলিস্তিনে অভিবাসীদের পাঠানো কি সাময়িক নাকি দীর্ঘস্থায়ী ? ট্রাম্প উত্তর দিয়েছেন, সাময়িক বা দীর্ঘস্থায়ী যে কোন কিছু হতে পারে। ইসরায়েল সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা করে প্রথমে গাজাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। এখন ওঝা হয়ে ঝাড়ার নামে চিরস্থায়ী ভাবে জায়গা দখলের প্লানে এগুচ্ছে। সংস্কারের কথা বলে বছরের পর ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করে জর্ডান ও মিশরের নাগরিকত্ব দেয়ার চক্রান্ত চলছে।
মিশর ও জর্ডান এই প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। পাশাপাশি আরবলীগ যুক্তরাষ্ট্র কে মনে করিয়ে দিয়েছে যে বিগত ৭০-৮০ বছর ধরে সাময়িক বাস্তচ্যুতির নামে ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূখন্ড থেকে স্থায়ীভাবে বিতাড়িত করা হচ্ছে। ১৯৪৮ সালে নাকবা বা বিপর্যয়ের সময় ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল মূলত ফিলিস্তিনের মানুষজন কে বিতাড়িত করে। এখনো যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এই ধরণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
জর্ডান ও মিশর ট্রাম্পের এই ধরণের প্রস্তাবকে তাদের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত মনে করে। জর্ডান ইতিমধ্যে বিশ লাখের বেশি ফিলিস্তি নি দের নাগরিকত্ব দিয়েছে। মিশরে গত দুই বছরে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। জর্ডান-মিশর-হামাস-ফিলিস্তিনিরা মনে করে ইহা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিরুদ্ধে চক্রান্ত । ফিলিস্তিনবাসী ট্রাম্পের এই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রতাখ্যান করেছে। তারা এই প্রস্তাবকে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন ও যুদ্ধঅপরাধ হিসাবে ট্রাম্পকে হুশিয়ারি দিয়েছে। এত মৃত্যু ও হতাহতের পরও তারা গাজায় থাকতে চায়।
আমেরিকা কতৃক সারাবিশ্বের সকল সাহায্য ও সহযোগিতা ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা প্রজেক্ট বাদ সব প্রজেক্টে অর্থ বন্ধ। অন্যদিকে ইসরায়েলকে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে আমেরিকা । ট্রাম্প ইসরায়েল কে ২০০০ পাউন্ডের বোমা দিচ্ছেন যা জো বাইডেনের সময় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হস্তান্তর করা থেকে বিরত থাকে আমেরিকা । মোটাদাগে ফিলিস্তিন বাসীদের সমস্যা সমাধানের জন্য ট্রাম্পের কোন ধরণের আন্তরিকতা নেই। বরং ইসরায়েলের প্রতি ট্রাম্পের প্রছন্ন সমর্থন রয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



