
এমন মন্তব্য করেছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী! এক সময়ের এই বাঘা নেতা শেখ হাসিনার জন্য জীবন দিতে পারেন বললেও বিগত ১৬ বছরের দুঃশাসনের চিত্র জনসম্মুখে প্রকাশ হলে হতাশ হয়ে পড়েছেন। আওয়ামী লীগের করুণ পরিণতির জন্য তিনি নব্বই ভাগ শেখ হাসিনা কে দায়ী করেছেন। বাঘা সিদ্দিকীর মতে শেখ হাসিনা বা উনার পরিবারের কেউ যদি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকেন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি কোনো ভবিষ্যৎ নেই। শেখ হাসিনার বিগত ১৬ বছরের অনুগত কারো নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে চাইলেও পারবে না। দলের তৃণমুলের সম্মতিতে মোটামুটি ক্লিন ইমেজের কেউ যদি দলের হাল ধরেন তবে কিছুটা বিরোধ হলেও আওয়ামী লীগ এগিয়ে যেতে পারবে। মওলানা ভাসানী, শামসুল হকের আদর্শ যেহেতু আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রধান উৎস ছিলো হয়তো বা কিছুটা ঘুরে দাড়াতে পারবে।
বঙ্গবীরের চোখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের তিনবছর পর থেকেই ভুল রাজনীতি করেছেন। আর সে জন্য আওয়ামী লীগ থেকে বাঘা সিদ্দিকী বের হয়ে এসেছেন। শেখ হাসিনা উনার বাপের নামকে কলুষিত করেছেন। মানুষের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞার কারণে জনসাধারণের কাছে তিনি বর্তমানে ঘৃণার পাত্র। রাজনীতিতে শেখ হাসিনার ফিরে আসার একটা সুযোগ হচ্ছে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসে আত্নসমর্পণ করা। এতে জেল জুলুমের শিকার হলেও যদি জনসাধারণের নিকট ক্ষমা চায় হয়তো তাহলে পাপের বোঝা হালকা হবে। তবে শেখ হাসিনার বয়স উনাকে রাজনীতিতে ফিরে আসার জন্য সবচাইতে বড়ো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।
বিগত সময় গুলোতে আওয়ামী লীগের অনেক ঝানু নেতা তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, আবদূর রাজ্জাকের মতো নেতাদের শেখ হাসিনা দলে কোণাঠাসা করে রেখেছিলেন। বাঘা সিদ্দিকীর ভাই আবদুল লতিফ সিদ্দিকী সাহেব ও শেখ হাসিনার চক্ষুশূল ছিলেন বলে জানিয়েছেন বাঘা সিদ্দিকী!
বিগত বছরগুলোতে যেসব বর্ষিয়ান নেতা আওয়ামী লীগে থাকার পরও শেখ হাসিনার অন্যায়ের সমালোচনা করতে পারেন নাই তারা সবাই রবীন্দ্রনাথের ভাষায় অপরাধী। কারণ অনেক বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদেরা শেখ হাসিনার চেয়ে ভালো রাজনীতি বুঝতেন। তাদের নিরবতা আওয়ামী লীগের ও দেশের ক্ষতি করেছে। শেখ হাসিনার চারপাশে ছিলো চাটুকার ও মাফিয়ারা। নিজের গুণে গুণমুগ্ধ শেখ হাসিনা দেশের তরুণ সমাজের অবক্ষয় নিয়ে কোনোরূপ চিন্তা করেন নাই। আজকে অলিতে গলিতে কিশোর গ্যাং রয়েছে যাদের কর্মকান্ডে মানুষজন অতিষ্ঠ। এরা সবাই শেখ হাসিনার সময়ের প্রোডাক্ট ! লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবে ছাত্রলীগকে নামানো হতো বিরোধী মত দমনে। সাধারণ ছাত্রদের কথা বাদ দিলাম নিজের দলের ছাত্রদের পড়াশোনা ধ্বংস করে তাদের দখলদারি, খুন ও সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টিতে কাজে লাগাতেন হাসিনা । দলের লোকজন ছিলো সব খানা পিনায় ব্যস্ত ; যেহেতু নেত্রী তাদের সুযোগ করে দিয়েছিলো তাই তারা বয়স একশ বছর হলেও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বর্তমানে কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করে না। একদিকে দেখলে তাদের অবস্থা জামায়াতে ইসলামীর মতোই। উভয় দল মানবতা বিরোধী অপরাধে যুক্ত হয়েছে এবং কেউ তার জন্য ভবিষ্যতে ক্ষমা চাইবে না। বিদেশি শক্তির চোখে ধুলো দেয়ার জন্য যাকে তাকে জঙ্গী বানিয়েছে আর আসল জঙ্গীরা ছিলো ধরা ছোয়ার বাইরে। এই আওয়ামী লীগ কোনোদিন ফিরবে না। আর শেখ হাসিনার চ্যাপ্টার ৫ই আগস্ট ক্লোজ হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের উচিত হয় দল ত্যাগ করা অথবা শেখ পরিবার থেকে আওয়ামী লীগ কে মুক্ত করা। ইহা এখন তাদের প্রথম সংগ্রাম !
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



