somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে কেন পাকিস্তানি শিল্পীদের যাতায়াত বেড়েছে ?

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জুলাই অভ্যুত্থানের আহতদের মিছিল ও সমাবেশে ইন্টেরিম সরকার বেকাদায় রয়েছে। আমলাতন্ত্রের জটিলতায় জুলাই আন্দোলনের আহতদের জন্য উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আবার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে সেনাবাহিনীর সামনে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হচ্ছে। দূরপাল্লার রাতের বাস গুলোতে বেড়েছে ডাকাতি ও ধর্ষণ। অযৌক্তিক দাবী দাওয়ায় ঢাকাবাসী বিরক্ত। কিশোর গ্যাং এর উৎপাতে মানুষ অতিষ্ঠ। বারবার আঘাত আনা হচ্ছে বাঙালির নিজস্ব অনুষ্ঠান গুলোতে। নাট্য উৎসব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মবের কারণে! কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য এক শ্রেণীর জীব বাংলাদেশের ক্ষমতার এই ট্রানজিশন পিরিয়ডে ভিনদেশী শিল্পীদের একের পর এক দেশে এনে তরুণদের বিনোদনের ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর ইন্টেরিম সরকার সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেখিয়েছে পাকিস্তানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে। পাকিস্তানের হাইকমিশনারের দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও একাডেমিতে যাতায়াত বেড়েছে। সম্প্রতি সারদা তে পুলিশ একাডেমিতে পাকিস্তান হাইকমিশনারের সফর নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা হয়েছিলো। পাকিস্তানের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপিত হলে যদি বাংলাদেশের লাভ হয় তাহলে খুবই ভালো। কিন্তু ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছাড়াও পাকিস্তান কি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে ? এই বিষয় নিয়ে ব্লগের শেষ দিকে কিছু ইন্টারেস্টিং তথ্য তুলে ধরা হবে । পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সামরিক যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এই যোগাযোগ কে স্বাগত জানানো যেত কারণ এতে ভারতকে চাপে রাখা সহজতর হবে । কিন্তু পাকিস্তান দেশ হিসাবে ঐতিহ্যগত ভাবে ডেভিল চরিত্রের। যে দেশে আইএসআই রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে যায় সে দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করে ফেলে।

পাকিস্তানি শিল্পীদের যেন বাংলাদেশে এসে কনসার্ট করার ধুম পড়েছে জুলাই অভ্যুত্থানের পর। এক্ষেত্রে ইন্টেরিম সরকার আগের সরকার কে অনুসরণ করতে গিয়ে তাদের পেছনে ফেলে নিজেরা নাম্বার ওয়ান শাকিব খান হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্লজ্জ এমপিদের দেখেছিলাম ভারতীয় শিল্পীদের দেখতে মাটিতে বসে পড়েছিলো। দেশের অবস্থা যখন খারাপ ছিলো তখন otilia,bts এর মতো শিল্পীদের আনা হয়েছে বা আনার চেষ্টা করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানে জালিম থেকে মুক্ত হয়েছি আমরা সত্য কিন্তু দেশের অর্থনীতি ও আইনশৃংখলা পরিস্থিতি খারাপ। এমতাবস্থায় প্রতি এক/দুই মাস পর অন্তর পাকিস্তানি শিল্পীদের এনে কনসার্ট করানো দৃষ্টিকটু। জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে পাকিস্তানের যে সব সংগীত শিল্পী বা ব্যান্ড বাংলাদেশে এসেছে বা আসতে যাচ্ছে: আতিফ আসলাম, রাহাত ফতেহ আলী খান, জাল ব্যান্ড, ক্যাভিশ ব্যান্ড, আব্দুল হান্নান, মুস্তফা জাহিদ ও আলী আজমত। আলী আজমত আগামী মে তে কনসার্ট করবেন। রাহাত ফতেহ আলী খার বাংলাদেশে এসে গান পরিবেশনা ইতিহাস হয়ে থাকবে কারণ তিনি চ্যারিটির জন্য বিনামূল্যে গান গিয়েছিলেন । অবশ্য বিপিএলের খারাপ স্মৃতি এর সাথে সংযুক্ত :-P !

নোমান নুরানী স্যার এর মতে আইএসআইয়ের কথিত সাদা চামড়ার সো কল্ড ট্রাম্পের বন্ধু জেনট্রি বীচের ঢাকা সফরে এসেছিলেন ২৯ বা ৩০ শে জানুয়ারি। তিনি প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূস, মাস্টারমাইন্ড মাহফুজ ও জামায়তের নায়েবে আমীরের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এতো বড়ো ট্রাম্পের বন্ধুর সাক্ষাতে নিশ্চয়ই জামায়তের নায়েবে আমীর খুশি হয়েছিলেন ! আমীর সাহেব এই মিটিংয়ে কিভাবে ডাক পেলেন ? তিনি কি সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট ? মির্জা ফখরুল কেন ডাক পেলেন না ? নায়েবে আমীর সাহেব অবশ্য বলেছেন বিএনপির মহাসচিব কেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো কিন্তু তিনি অসুস্থ ছিলেন বলে আসতে পারেন নাই। অন্যদিকে একই দিনে মির্জা ফখরুল সাহেব আমেরিকার চ্যার্জ দি আফেয়ার্স সাহেবার সাথে বৈঠক করছিলেন :-P। মনে হয় হাসপাতালে ফখরুল সাহেব কে দেখতে গিয়েছিলেন আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত !

ট্রাম্পের কথিত বন্ধু জেনট্রি বীচ বাংলাদেশের রিজেন্ট শাহেদের মতো প্রতারক। সে ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাত করিয়ে দিবেন এই কথা বলে হেজ ফান্ড কালেক্ট করেছিলো। পরে তা নিয়ে ডেলাসে ব্যাপক ঝামেলা হয়। জেনট্রী বীচ একটি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট চালান। আবার তিনি একজন ব্রোকার। এরাম বিজনেসম্যান বাংলাদেশে এসেছে LNG তে ইনভেস্ট করতে :P। বাংলাদেশে জেনট্রি বীচ যাদের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন তাদের মধ্যে bida চেয়ারম্যানও ছিলেন। কিন্তু পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান সাহেব ছিলেন না। এই অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে কে ইনভেস্ট করতে আসবে আমেরিকার ? সে প্রাইভেট ভাবে ইনভেস্ট করতে এসেছে বলে গুজব রটানো হয়েছে। বাংলাদেশে বেশিরভাগ আমেরিকান ইনভেস্টমেন্ট বিভিন্ন ফান্ড হিসাবে আসে সরকারি ভাবে বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে বা আরএমজি সেক্টরে । অথচ কি সুন্দর ভাবে বাঙালিকে বেকুব বানানো হইলো ! জেনট্রি বীচ যদি আইএসআইয়ের ইনভেস্টর নাও হয়ে থাকেন তবে এমন ফেকু মিটিং কেন এ্যারেঞ্জ করা হইলো ? প্রধান উপদেষ্টার মতো নোবেল লরিয়েট কেন এমন ঢপবাজিতে শরীক হইলেন ?

পাকিস্তানের ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট Ahmed Noorani স্যারের ইউটিউব চ্যানেল সবাই দেখতে পারেন। তিনি পাকিস্তানের রাজনীতি বিষয়ক ভিডিও আপলোড করে থাকেন। জেনট্রি বীচ পাকিস্তানে প্রথমে গিয়েছিলেন। তা নিয়ে নুরানী সাহেব দুইটি ভ্লগ করেছেন। প্রথমটির লিংক : Click This Link
দ্বিতীয় ভিডিওর লিংক : Click This Link

ডেইলি স্টারের খবর : Click This Link . ডেইলি স্টার মোদি-ট্রাম্পের সংবাদ সম্মেলনে ভুল অনুবাদ করায় শাস্তি স্বরূপ ওয়েবসাইটে স্লো করে দেয়া হয়েছে। বারবার ট্রায় করতে হবে।

বাংলা যে কোন অনলাইন নিউজ পেপারে সার্চ দিলে পাওয়া যাবে বাংলাদেশে জেনট্রি বীচের আসার খবর। তবে নায়েবে আমীরের জায়গায় সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকার উজ জামান কে না দেখে যারপরনাই হতাশ হয়েছি :-P। সময়ের আলো নামে এক অনলাইন নিউজ মিডিয়াতে সেনাপ্রধানের সাথে সাক্ষাত হয়েছে বলে দাবী করা হয়েছে। অন্য কোন নিউজ পেপারে এই খবর পাইনি । তা না হলে ব্লগের ফিনিশিং টা আরো তথ্য নির্ভর হতো। এইজন্য সবার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী। |-)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:০২
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রবাসীর মৃত্যু ও গ্রাম্য মানুষের বুদ্ধি!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০



একজন গ্রামের মানুষের মাথায় ১০০ জন সায়েন্টিস্ট, ৫০ জন ফিলোসফার, ১০ জন রাজনীতিবিদ এবং ৫ জন ব্লগারের সমপরিমাণ জ্ঞানবুদ্ধি থাকে, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন এসব লোকজন বাংলাদেশের এক একটি সম্পদ।

বিস্তারিত:... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন নারী শিক্ষিকা কীভাবে কন্যা শিশুর সবচেয়ে অসহায় মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করতে পারেন?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৩


বাংলাদেশে মাঝে মাঝে এমন সব মানুষ রূপী শয়তানের সন্ধান মেলে যাদের দেখে আসল শয়তানেরও নিজের উপর হতাশ হওয়ার কথা। এমন সব প্রজাতির মানুষ বাংলাদেশে বসবাস করেন যাদের মস্তিষ্ক খুলে দেখার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মানুষ মানুষকে কীভাবে এত অপদস্ত করে এই ব্লগে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৪

আমি তো কারও সাতেও নাই পাঁচেও নাই। এত সময়ও নাই মানুষকে ঘাঁটার। ব্লগের ব্লগারদের সম্পর্কেও তেমন কিছু জানি না। তবে পোস্ট পড়ে কিছুটা আন্দাজ করা যায় -কে কী রকম। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×