
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দূর্বলতম সরকার বর্তমানে দেশ শাসন করছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই সরকারের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে এমনিতেও পুলিশের মুখ রক্ষা হচ্ছিল না কিন্তু ছয়মাস পরও যখন সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ভবিষ্যতে উহা সরকারের জন্য বিপদের কারণ হবে। মাত্র ছয়মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে নিকৃষ্টতম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসাবে মনোনীত হয়েছেন জাহাঙ্গীর সাহেব। একদিকে ঢিলে গতিতে সংস্কার কাজ চলছে অন্যদিকে দেশের মানুষের নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে । সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। ক্ষমতায় থেকে কিংস পার্টি গঠনে মদদ দিচ্ছে ক্ষমতাসীন সরকার। নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সরকারের কি প্লান আছে এবং সে মোতাবেক কি ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। বিএনপি জোট ও জামাত জোট স্থানীয় নির্বাচন না জাতীয় নির্বাচন আগে হবে তা নিয়ে বাকযুদ্ধে নেমেছে যদিও ইহা একটি কৌশল হিসাবে ভবিষ্যতে প্রমান হইতে পারে। সরকারের আচরণে মনে হচ্ছে দেশ পরিচালনায় তাদের মন নেই। নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে কোন আগ্রহ নেই। সরকার যখন ডেভিল হান্ট অপারেশন শুরু করেছে ডেভিলদের নিধন করার আশায় তখন দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি আরো বেশি নাজুক হয়ে পড়েছে যা সরকারের ডেভিল হান্ট অপারেশন কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বিগত ছয় মাসে দেশের পরিস্থিতি খুব ভালো না হলেও মোটামুটি মানুষ তাদের দৈনন্দিন কাজ করতে খুব বেশি অসুবিধার সম্মুখীন হয় নি। কিন্তু ফেব্রুয়ারির আঠারো তারিখ থেকে যেন পরিস্থিতি আবারো খারাপ হওয়া শুরু করেছে। চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত হয়েছে খুন, ধর্ষণ ও ছিনতাই। আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচীর পর থেকে যেন খুব বেশি অপরাধ সংগঠিত হতে শুরু করেছে। তবে মোটাদাগে তিন পক্ষ এইধরণের পরিকল্পিত নৈরাজ্য সৃষ্টির পেছনে থাকতে পারে:
১- ভারত ও আওয়ামী লীগের তৈরি ডীপ স্টেইট : ইহার সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। আওয়ামী লীগ ও ভারত মিলে দেশের প্রতিটি স্তরে স্তরে তাদের এজেন্ট নিয়োগ দিয়েছে বিগত ষোল বছর ধরে। ইন্টেরিম সরকার কে জাতির নিকট হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে তারা এই কাজ করে থাকতে পারে। আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের প্রচুর টাকা রয়েছে । তারা সমাজের নিম্নবিত্ত শ্রেণীর বেকারদের অর্থ সহযোগিতা দিয়ে অপরাধমূলক কাজ করিয়ে থাকলে অবাক হওয়ার কিছুই নাই।
২- যারা দ্রুত নির্বাচন চায় : দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচন চায়। ইন্টেরিম সরকারের প্রতি তাদের অবিশ্বাস ও আস্থার অভাব দেখা যাচ্ছে যখন থেকে সরকারের মদদে রাজনৈতিক নতুন দল গঠনের বিষয়টি সামনে আসে। ইন্টেরিম সরকারের অন্যতম ভুল সিদ্ধান্ত হচ্ছে যারা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে তাদের উপদেষ্টা পরিষদে স্থান দেয়া । এভাবে একটি সরকার কোনোদিন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে পারবে না। বড়ো রাজনৈতিক দলটির সন্দেহ ইন্টেরিম সরকারের মদদে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে । মূলত সরকার কে ব্যর্থ প্রমাণ করতে তারা এমন ঘৃণিত প্রজেক্ট নিয়ে মাঠে নামতে পারে।
৩- যারা বর্তমানে সরকারের প্রধান শক্তি : রাজনীতির মাঠে চাউর আছে জুলাই অভ্যুত্থানে যারা ভূমিকা রেখেছিলো ছয়মাস পার হওয়ার পর তারা এই সরকার কে বিশ্বাস করতে পারছে না। তাদের নিজস্ব এজেন্ডা রয়েছে। তারা বর্তমান সরকার কে উৎখাত করে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে চায়। এজন্য সরকার কে ব্যর্থ প্রমাণ করতে কিশোর গ্যাং ব্যবহার করে থাকতে পারে। বড়ো একটি রাজনৈতিক দলের দ্রুত নির্বাচনের বিরোধিতা তারা কতক্ষণ করতে পারবে সেটা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। এদিকে নিজেরা দল গঠন সহ অনেক কাজ এখনো বাকি। তাই বিভিন্ন মূলা তুলে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায় তারা। জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হয়েও সরকারে সাথে ঘনিষ্ঠ থাকার কারণে ভিআইপি প্রটোকল ইউজ করছেন অনেকে । নির্বাচন হয়ে গেলে এমন রাজকীয় জীবন যাপন করা সম্ভব নয়। তাই এই সরকার কে ব্যর্থ করে দিয়ে নিজের এজেন্ডা বাস্তবায়ন যতটা শীগ্রই সম্ভব করে ফেলতে চায়। এজন্য নিত্য নতুন তালবাহানা করে যতক্ষণ ক্ষমতা ধরে রাখা যায় ততই মঙ্গল উহাদের জন্য।
বর্তমানে সমাজে যে সব ঘটনা ঘটছে সব গুলো পরিকল্পিত। জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এমন ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। সরকারের উচিত সকল বাহিনীকে একটেবিলে বসিয়ে আলোচনা ও সভা পরিচালনা করে দ্রুত কার্যকরী পন্থা খুজে পাওয়া । অন্যথায় এই সরকারের প্রতি মানুষের কোন সমর্থন ভবিষ্যতে থাকবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



