
আজ আমরা একখানা চমৎকার ছবি হাতে পেয়েছি, যেখানে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাহেবকে এক গভীর দার্শনিক মন্তব্যে বিভোর দেখা যাচ্ছে। ছবির মূল আকর্ষণ তার সেই অমর বাণী, "আমি হাঁটু ধরে যদি এমপি হই, সে তো পরের ৫ বছর আমার হাঁটু ধরে থাকবে।" বাহ! কী চমৎকার যুক্তি, কী অসাধারণ বিশ্লেষণ!
আমরা তো এতদিন জানতাম, রাজনীতি মানে আদর্শ, জনসেবা, জনগণের অধিকার আদায় কতো কী! কিন্তু না, ড. তাহের সাহেব আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, রাজনীতি আসলে ‘হাঁটু ধরা’র এক জটিল সমীকরণ। তিনি খুব পরিষ্কার করে বলেছেন, "কর্মীদেরকে পাগল করে ফেলতে হবে। পাগল না হলে গিয়ে পা ধরতে পারবে?" অর্থাৎ, কর্মীরা যতক্ষণ না 'পাগল' হয়ে জনসাধারণের হাঁটু ধরার প্রশিক্ষণ নেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত জামায়াত ক্ষমতার অলিন্দে প্রবেশ করতে পারবে না।
সত্যি বলতে কী, জামায়াতের এই নতুন ‘ হাঁটু ধরা’ কৌশল দেখে নেটিজেন রা মুগ্ধ। এতদিন ধরে যারা ‘ইসলামী শাসন’ প্রতিষ্ঠার কথা বলে আসছিলেন, হঠাৎ করে তাদের এই ‘হাঁটু-কেন্দ্রিক’ রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়াটা বেশ কৌতূহলোদ্দীপক। হয়তো তারা বুঝতে পেরেছেন, ‘ইসলামী শাসন’ প্রতিষ্ঠা করতে হলে আগে জনগণের মন জয় করা জরুরি, আর মন জয় করার সহজতম উপায় সম্ভবত তাদের হাঁটু ধরে ফেলা!
ড. তাহের সাহেব আরও বলছেন, "আমি প্র্যাকটিস করি আমার এলাকায়। আমি নিজে গিয়ে হাঁটু ধরি, একজন বসে আছে, গিয়ে হাঁটুতে হাত দিয়ে কথা বলি। কী অসুবিধা? আমি হাঁটু ধরে যদি এমপি হই, সে তো পরের ৫ বছর আমার হাঁটু ধরে থাকবে। আমি একবার ধরলাম, উনি ৫ বছর ধরবে, লাভ কার ?" তার এই ‘লাভের’ হিসাব দেখে বেকুব পাবলিক অভিভূত ! রাজনীতি মানে তো এই লাভ-ক্ষতি, এই দেনা-পাওনা। একবার হাঁটু ধরলে পাঁচ বছর হাঁটু ধরা লাগবে এর চেয়ে লাভজনক আর কী হতে পারে? শেয়ারবাজারেও তো এমন নিশ্চিত রিটার্ন পাওয়া যায় না!
জামায়াতের এই ‘মুনাফেকী রাজনীতি’র উদাহরণ নতুন নয়। একদিকে তারা ইসলামের কথা বলে, শহীদদের কথা বলে, আবার অন্যদিকে ক্ষমতার জন্য যে কোনো কৌশল অবলম্বন করতে পিছপা হয় না। এই ‘হাঁটু ধরা’র তত্ত্ব তারই এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তারা একদিকে মুখে জিহাদের বুলি কপচায়, আবার ক্ষমতার মসনদে বসার জন্য আপামর জনসাধারণের পা ধরতে প্রস্তুত। এ কেমন দ্বৈত নীতি?
তাহলে কি আমরা ধরে নেব, এখন থেকে জামায়াতের নির্বাচনী ইশতেহারে নতুন একটি ধারা যোগ হবে ‘জনগণের হাঁটু ধরার নীতিমালা’? আর তাদের কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হবে ‘হাঁটু ধরার প্রশিক্ষণ কর্মশালা’? ভাবতেই হাসি পাচ্ছে ! হয়তো শীঘ্রই আমরা দেখব, জামায়াতের নেতাকর্মীরা সারিবদ্ধভাবে মানুষের হাঁটু ধরে তাদের নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে !
পরিশেষে বলতে চাই, জামায়াতের এই নতুন ‘হাঁটু ধরা’ রাজনীতি কতটা ফলপ্রসূ হয়, তা সময়ই বলে দেবে। তবে আপাতত, ড. তাহের সাহেবের এই ‘অমূল্য’ বাণী আমাদের জন্য এক অফুরন্ত বিনোদনের উৎস হয়ে থাকল। আপনারা যারা এই রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চান, তারা সাবধানে হাঁটবেন । পাছে কেউ আপনার হাঁটু ধরে বসে!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১:৫১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




