
সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভর-কেন্দ্রগুলো থেকে দ্রুত তাঁর দেশে ফেরার তাগিদ দেখে তিনিও একরকম ঝুঁকির মুখেই ডিসেম্বরের চতুর্থ সপ্তাহে মাতৃভূমিতে ফিরছেন। সঙ্গত কারণেই এই মুহূর্তটি ব্যাপক কৌতূহল ও ভরসার হওয়ার কথা। দক্ষিণপন্থীরা ঠিক এই মুহূর্তটিকে টার্গেট করেছে উত্তেজনা তৈরি করতে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কটিকে যুদ্ধংদেহি করে তোলার জন্য এই সময়টিকে বেছে নেয়ার লক্ষ্য মূলত তারেক রহমানের দেশে ফেরার সামাজিক আবেদন কমানো। এই আয়োজনে ভারতের এখনকার শাসকদের দিক থেকেও বহু ধরনের লাভ আছে।
প্রথমত, বিজেপি-আরএসএস বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও রাজনীতিকে তার জন্য নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরায় ব্যাপক উম্মাদনা তৈরি করতে পারবে। সেটা ইতোমধ্যে শুরুও হয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত, এতে বাংলাদেশের চার পাশে নতুন করে সামরিক আয়োজনও বাড়াবে তারা। তৃতীয়ত, এর ফলে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সকল ভারতীয় রাজ্যে মুসলমান বিদ্বেষ নতুন উচ্চতায় উঠছে।
চতুর্থ, ‘নর্থ-ইস্ট ভাগ করে দেবো’, ‘দূতাবাসে ঢুকবো’ এরকম হুমকিগুলো আন্তর্জাতিক কূটনীতিতেও বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের ইদানিংকার ন্যারেটিভকে ন্যায্যতা দিচ্ছে। ফলে সব মিলিয়ে নয়াদিল্লীর জন্য বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের উপহারের যেন কোন শেষ নেই! আবার জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার পর জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে তারেক রহমানকে একচেটিয়া উচ্চ সামাজিক ভাবমূর্তিতে দেখতে চায় না নয়াদিল্লী। তাদের হয়ে সেই কাজটিও করে দিতে চলেছে এখানকার ফার-রাইটরা।
তবে, এটাও সত্য, বাংলাদেশের জনসমাজ বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আজকের এই জায়গায় এসেছে। তাদের নীরব দৃঢ়তা নির্বাচনের রোডম্যাপকে বাস্তব করে তুলেছে। তাই ভারত-বিরোধিতার আড়ালে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে উদীয়মান ছদ্ম-রাজনৈতিক-যুদ্ধের তাৎপর্যও নিশ্চয়ই তারা বুঝতে পারবে। সব মানুষকে তো সব সময়ের জন্য বার বার বোকা বানানো যায় না!
ভারতের বিরুদ্ধে স্নায়ু-লড়াইয়ের বড় হাতিয়ার হলো রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো, আর এসব প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করার কোন বিকল্প নেই। আর সেটা বাস্তবায়নে – উৎসবমুখর নির্বাচন এবং জনসমর্থিত শক্ত নেতৃত্ব হলো প্রাথমিক পদক্ষেপ। কেবল শক্তিশালী জনপ্রতিনিধিরাই ভারতের হাত থেকে অপরাধীদের নিয়ে আসতে এবং বাকিসব ন্যায্য স্বার্থ আদায় করতে পারে।
লেখাটি সায়ের সাহেবের ফেইসবুক বুক পোস্ট হতে কপি করা। সবার আগে সব খবর পাবেন সায়ের সাহেবের কাছে।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




