somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"উন্মেষ পাঠশালা এবং একজন মাহফুজুর রহমানের কথা"

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্কুলে যাওয়ার বয়স তাদের। অথচ তারা সারা দিন রাস্তা ঘাটে ঘুরে বেড়ায়। ভাবলাম তাদের জন্য কিছু করা যায় কিনা? একদিন এ রকম ছয়-সাত জন শিশুকে ডেকে বললাম, আমি যদি তাদের পড়াই তারা পড়বে কিনা। তারা রাজি হয়ে গেল। এভাবেই যাত্রা শুরু উন্মেষ পাঠশালার।"

উন্মেষ পাঠাশালার শুরু সম্পর্কের এভাবেই বর্ণনা করেন তার প্রতিষ্ঠাতা মো: মাহফুজুর রহমান। উত্তরার একটি বাসার কেয়ার টেকার তিনি। বাড়ি কিশোরগঞ্জে। দারিদ্র্যের কারনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পার হতে না পারলেও পড়লেখাটাকে নিজের মধ্যে লালন করেছেন তিনি।

২০১২ সালে তিনি কেয়ার টেকার হিসেবে এই বাড়িতে চাকরি শুরু করেন। খুব বেশি কাজ থাকত না তার। সারাদিন শুয়ে বসে দিন কাটাতেন। একসময় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো পথশিশুদের জন্য কিছু করতে মন চাইল তার। তিনি বলেন, শিশুরা পড়তে রাজি হওয়ায় নিজের ৭০০ টাকা খরচ করে তাদের জন্য বই কিনে আনেন তিনি। প্রথম দিকে একজন শিশুর মাধ্যমে আরেকজন কে নিয়ে আসতেন। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের সাত তারিখে সাত জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু করার পর তিন মাসেই তা বেড়ে দাড়ায় ২৪ জনে। তার পর প্রতি বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।
বাড়ির মালিক তার গ্যারেজে শিশুদের পড়াশোনা করতে দিতে রাজি হবেন কিনা এ নিয়ে সংশয় ছিল মাহফুজুর রহমানের। কিন্তু বাধা নয় উল্টো সাহস মিলল মালিকের কাছ থেকে। পাঠশালার নামটিও বাড়ির মালিকের দেওয়া। মালিকের বোনও বিষয়টি জানতে পেরে আগ্রহ দেখালেন। মাহফুজুর বলেন, "স্যারের বোন বললেন, চাচা, আপনি তো ভাল কাজ করছেন। আমি আপনাকে সাহায্য করব।" মাহফুজুর রহমানে প্রথম খরচের ৭০০ টাকাও মালিকের বোন দিয়ে দেন। এরপর থেকে আর্থিকভাবে তাকে আর অসুবিধায় পরতে হয়নি।

এই পাঠশালা থেকে শিক্ষা গ্রহন করে শিশুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়লে গিয়ে তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারে। এখন পর্যন্ত ১০০-১৫০ জন শিক্ষার্থী এখান থেকে শিক্ষা গ্রহন করে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যায়লে পড়ালেখা করছে। বর্তামনে ৭৫ জন শিক্ষার্থী আছে এই পাঠশালায়। মাহফুজুর রহমান ছাড়াও এখানে আরও তিনজন শিক্ষক শিক্ষাদান করেন। মাঝে মাঝে বাড়ির মালিক মঈন আহমেদও শিক্ষাদান করেন। মঈন আহমেদ বলেন, "শিক্ষকদের বেতনের দায়িত্ব কোন প্রতিষ্ঠান বহন করলে আরও শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হতো।"

#বিটিভি ও প্রথম আলোর সৌজন্যে#

আমরা যেখানে সমাজের তথাকথিত এলিটদের নিয়ে মিডিয়াতে মাতামাতি করতে দেখি।সেখানে মাহফুজুর রহমানের মত এমন ব্যক্তিরা সমাজে পিছিয়ে পড়া শিশুদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য তাদের কোন সম্মান বা খ্যাতির প্রয়োজন হয় না। তারা থেকে যান অনেকটা নিরবে, নিবৃতে।
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×